জুন মাসের মাঝামাঝিতে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর আবারও আগ্রাসী মনোভাব দেখালো চিন। এবার প্যাগং হ্রদের দক্ষিণে। ২৯ আগস্ট রাতের দিকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় চিন সেনা। যদিও ভারতীয় সেনারদের সক্রিয়তায় চিনের অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। যোগ্য জবাবও দেয় ভারতীয় সেনা। এবার চিনের আগ্রাসী মনোভাবকে টার্গেট করে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিল মার্কিন কূটনীতিক। – ছবি : সংগৃহীত |
জনদর্পণ ডেস্ক : জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে কাশ্মীরের গালওয়ান উপত্যকায় ঘটে যাওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বেশ কিছু দিন বিরতি দিয়েছিল চিন। সক্রিয়ভাবে তেমন অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেনি তারা। এরই মাঝে হঠাৎ ২৯ আগস্ট রাতের দিকে ফের আগ্রাসী মনোভাব দেখাতে শুরু করে। এবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় লাদাখের প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে।
যদিও সেই চেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ করে দেয় ভারতীয় সেনা এবং যোগ্য জবাবও দেয়। ৩১ আগস্ট ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়, ওই দিন রাতের দিকে চিন ফের সামরিক পদক্ষেপ করে স্থিতিবস্থা নষ্ট করার চেষ্টা করে। তারা ভারতীয় সেনাদের সংঘর্ষে যুক্ত হতে বিভিন্ন রকমভাবে উসকাতে থাকে।
ঠিক এই অবস্থায় এবার মার্কিন হুঁশিয়ারির মুখে পড়তে হল চিনকে। ভারতের প্রথম সারির এক সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত রিপোর্টের সূত্র অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশে চিন বিভিন্ন সময়ে তাদের আগ্রাসী নীতি জারি রেখে চলেছে। এর উপযুক্ত জবাব অবশ্যই চিনকে দেওয়া হবে, এভাবেই চিনকে আক্রমণ করেন মার্কিন কূটনীতিক স্টিফেন বাইগান। তিনি আরও বলেন, শুধু ভারতের গালওয়ান উপত্যকার সীমান্ত অঞ্চল নয়, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর সহ আরও অন্য অঞ্চলেও চিন আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে। এক অশান্ত পরিবেশ তৈরি করছে তারা। চিনের এই আগ্রাসী মনোভাব রোখার ব্যবস্থা করা হবে।
এই মার্কিন হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে এবার সুর কিছুটা নরম করতে বাধ্য হল চিন। সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বললেন, গত ৭০ বছর ধরে চিন কোনও রকম আগ্রাসী মনোভাব দেখায়নি। কোনও দেশের সীমা লঙ্ঘন করে এক ইঞ্চি জমিও তারা দাবি করেনি। চিন নিয়ম মেনেই এলএসি মেনে চলে। এর পর হুয়া চুনইং যোগ করেন, ভারতের সঙ্গে তাদের সীমান্ত সমস্যা হয়েছে। দুই দেশের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা দাবি উঠতেই পারে। তবে তা দুই পক্ষের সম্পর্কের উন্নতি ঘটিয়ে শান্তি ও স্থিতিবস্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত দীর্ঘদিনের। এবছরের এপ্রিল থেকে নতুন করে অশান্তি বাড়তে থাকে। চরম আকারে পৌঁছোয় জুন মাসের মাঝামাঝিতে। গালওয়ান উপত্যকায় চিনা বাহিনীর অবৈধ অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ১৫ জুনের সেই সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হন। সেদিন যোগ্য জবাব দিয়েছিল ভারতীয় সেনাও। ভারতীয় সেনার দাবি, সেদিনের সংঘর্ষে চিন সেনার হতাহতের সংখ্যা ছিল ভারতের তুলনায় অনেক বেশি। যদিও সেই সংখ্যা কত, নিজেদের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার ভয়ে তা চিন আজও পরিষ্কার করে কিছু জানায়নি।