মহাপ্রভুর পায়ের ছাপ লেগে আছে চাতরপাড়ার ধূলিকণায়

Advertisement
m
সর্বানী ধারা : বোলপুর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটারের দূরত্ব চৌপাহাড়ী জঙ্গল সংলগ্ন ইলামবাজা গ্রামেরবহু বছর আগে থেকেই এই গ্রাম ঘন জঙ্গলে ঢাকা। যদিও বর্তমানে বেশ ফ্যাঁকাসে হয়ে উঠেছে। পূর্বে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ছিল দুর্গম। পরে ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের প্রচেষ্টায় পার্শ্ববর্তী অজয় নদের উপর সেতু নির্মিত হয়। তারপর থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসে অনেক বেশি সচ্ছলতা।
     ইলামবাজার বেশ পুরনো গ্রাম। আছে অনেক পুরাতন ঐতিহ্যের চিহ্ন। তার মধ্যে চাতরপাড়ার প্রাচীন আদি মহাপ্রভু মন্দির উল্লেখ করার মতো। মন্দিরের বয়স প্রায় ৩০০ বছর। চাতরপাড়ার এই প্রাচীন আদি মহাপ্রভু মন্দির ঘিরে অনেক ইতিহাসও জড়িয়ে আছে।
     লোকশ্রুতি আছে, মহাপ্রভু নবদ্বীপ থেকে অজয় পথে নৌকা যোগে জয়দেবের ‘কদম খণ্ডী’ ঘাটে এসে নেমেছিলেন। তারপর লোরী সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় ‘কীর্তন-গান’ করতে করতে ইলামবাজারের কাছে পায়ের গ্রামে আসেন। সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর ইলামবাজারের চাতর গ্রামে পৌঁছোন। এই চাতর গ্রামের যে চালা ঘরে শ্রী চৈতন্যদেব কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন, পরে সেখানেই লোরী সম্প্রদায়ের মানুষেরা একটি মন্দির স্থাপন করেন। এখানে আজও শ্রীকৃষ্ণের নিত্য সেবা দেওয়া হয়। বর্তমানে এই মন্দিরের দায়িত্বে আছেন হারাধন রায়। তার আগে দায়িত্বে ছিলেন অমরনাথ মুখোপাধ্যায়
     এই চাতর গ্রামের কাছেই হাটতলায় আরও একটি মহাপ্রভুর মন্দির আছে। শোনা যায়, মহাপ্রভু এখানে লবণ দিয়ে রুটি সেবা করেছিলেন। এই মন্দিরে অবশ্য কোনও মূর্তি নেই। জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৯ তারিখে আদি মহাপ্রভুর মন্দির থেকে মূর্তি নিয়ে এসে এখানে মহাসমারোহে নাম-সংকীর্তন করা হয়। পরম্পরায় দীর্ঘদিন থেকে এটাই হয়ে আসছে।
     বর্তমানে এই নাম-সংকীর্তন এখন একটি উৎসবের মতো। চার দিন ব্যাপী এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে। যে মেলার আনন্দ উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে প্রতি বছর।
Advertisement
Previous articleসেদিনের সেই চেনা পাখিরা আজ কোথায় গেল?
Next articleমোবাইল প্রযুক্তির মাত্রাছাড়া ব্যবহারে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে প্রকৃতির

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here