করোনা পরিস্থিতিতে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি হয়ে পড়ছে রক্ত শূন্য। তাতে সমস্যায় পড়ছেন মুমূর্ষু রোগীরা। রক্তের আকাল মেটাতে এবার নলহাটি নজরুল-পল্লী মহরম সংগঠন গত ১ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল। এই আয়োজন করা হয় নলহাটি নজরুল পল্লী সংলগ্ন মসজিদ চত্বরে। এদিনের রক্তদান শিবিরে পরুষদের পাশাপাশি মহিলাও অংশগ্রহণ করেন। মোট ৭০ জন রক্তদাতা এদিন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। – ছবি জনদর্পণ প্রতিনিধি |

সৌগত মন্ডল : মহরমের রক্ত মাটিতে না ঝরিয়ে বোতলে ভরে মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। মূলত এই উদ্দেশ্যেই গত ১ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল নলহাটি নজরুল-পল্লী মহরম সংগঠন। শিবিরটির আয়োজন করা হয় বীরভূম জেলার নলহাটি নজরুল পল্লী সংলগ্ন মসজিদ চত্বরে।
এমনিতেই করোনা মহামারির মধ্যে জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি রক্ত শূন্য হয়ে পড়ছে। তাতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মুমূর্ষু রোগীরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন থ্যালাসেমিয়া রোগীরা। তাই বিভিন্ন প্রান্তের কিছু স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই রকম রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছে। যদিও করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ আয়োজনই হচ্ছে প্রশাসনিক নির্দেশ মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
এদিনের শিবিরটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিল নলহাটি নজরুল-পল্লী মহরম সংগঠন। উক্ত শিবিরে উপস্থিত ছিলেন নলহাটি পৌরসভার পৌরপিতা রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং, স্থানীয় কাউন্সিলর রমেশ মহেশ্বরী, প্রাক্তন বিএমওএইচ সহ স্থানীয় অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। শিবিরটিতে পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের উপস্থিতও ছিল চোখে পড়ার মতো।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বদোরুজ্জা সাহেব জানালেন, এই মহামারী করোনা ভাইরাসে বিভিন্ন জায়গায় রক্তের সংকট মেটাতেই তাঁদের এই বিশেষ উদ্যোগ। তিনি আরও জানালেন, প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও তাঁরা এই রকম রক্তদান শিবিরের আয়োজন করবেন। এদিন মোট ৭০ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্ত দান করেছেন, তাঁদের সকলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতি বছর মহরমের দিন দেশের সমগ্র শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া সহযোগে নিজের নিজের এলাকায় শোভাযাত্রা বের করেন। গত ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে পবিত্র মহরম। কিন্তু এবছর করোনা সংক্রমণের কারণে দেশের শীর্ষ আদালত দেশ জুড়ে মহরমের দিন তাজিয়া বের করার অনুমতি দেয়নি।
এক ব্যক্তি তাজিয়া বের করার অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। গতকাল ২৭ আগস্ট সেই আবেদনের শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, করোনা পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশ জুড়ে তাজিয়া বের করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। এমনটি হলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। সেই সঙ্গে বিশৃঙ্খলাও তৈরি হতে পারে। এছাড়াও করোনা সংক্রমণের দায় একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ওপর চাপানো হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালত জেনারেল অর্ডার দিতে পারে না।
তবে সেদিন সুপ্রিম কোর্ট এও বলেছিল, তাজিয়া বের করতে হলে রাজ্যভিত্তিক অনুমতি নেওয়া যেতে পারে। রাজ্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মহরমের দিন বিশেষ কোথাও তাজিয়া সহযোগে শোভাযাত্রা বের করতে দেখা যায়নি।