পারসিভিয়ারেন্সের সঙ্গে মঙ্গলে পাঠানো হয়েছে ‘মক্সি’ (মার্স অক্সিজেন ইন-সিটু রিসার্চ ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট) নামের অপর আর একটি যন্ত্র। নাসা জানিয়েছে, গত ২১ এপ্রিল এই যন্ত্রটিই উচ্চ তাপমাত্রায় তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মঙ্গলের কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে তৈরি করে ফেলেছে প্রায় ৫ গ্রাম অক্সিজেন। এইটুকু অক্সিজেন তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো। মানুষ অবশ্য এই পরিমাণ অক্সিজেনে বেঁচে থাকতে পারবে প্রায় ১০ মিনিট। |

রঞ্জন সরকার : প্রাণযুক্ত পৃথিবীতে যখন মারণ ভাইরাস করোনার থাবায় প্রাণ যাচ্ছে এক এক করে, সমগ্র ভারত জুড়ে যখন অক্সিজেনের জন্য প্রায় হাহাকার পড়ে গিয়েছে, ঠিক সেই সময়ই প্রাণহীন মঙ্গলে ১০ মিনিট বেঁচে থাকার রসদ পেয়ে গেলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। কারণ ‘পারসিভিয়ারেন্স’-এর সঙ্গে পাঠানো ‘মক্সি’ সেখানকার কার্বন ডাই অক্সাইড থেকেই উৎপাদন করে ফেলল প্রায় ৫ গ্রাম বিশুদ্ধ অক্সিজেন।
এই অক্সিজেন মানুষ সহ সমগ্র জীব জগতের বেঁচে থাকার অনবদ্য ও একমাত্র উপাদান। মহাকাশে পাড়ি দিতে যার কোনও বিকল্পও নেই। এক্ষেত্রে মহাকাশচারীদের শ্বাসকার্য চালাতে ও মহাকাশযানের জ্বালানীর ক্ষেত্রেও এই অক্সিজেনই একমাত্র ভরসা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের।
মঙ্গলের বাতাস অত্যন্ত পাতলা। এই বাতাসের প্রায় ৯৫ ভাগ জুড়েই রয়েছে ভারী কার্বন ডাই অক্সাইড। এছাড়াও প্রায় ৫ শতাংশ রয়েছে নাইট্রোজেন ও আর্গন। অক্সিজেনও রয়েছে এখানে। তবে তা খুবই নগণ্য। বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত একেবারের নয়।
পৃথিবী থেকে পাঠানো রোভার ‘পারসিভিয়ারেন্স’ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করেছিল। কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে পরে শুরু করে দেয় নিজের কর্মকাণ্ড। সেই কর্মকাণ্ডেরই অন্যতম এই অক্সিজেন উৎপাদন। পারসিভিয়ারেন্সের সঙ্গে মঙ্গলে পাঠানো হয়েছে ‘মক্সি’ (মার্স অক্সিজেন ইন-সিটু রিসার্চ ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট) নামের অপর আর একটি যন্ত্র। নাসা জানিয়েছে, গত ২১ এপ্রিল এই যন্ত্রটিই উচ্চ তাপমাত্রায় তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মঙ্গলের কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে তৈরি করে ফেলেছে প্রায় ৫ গ্রাম অক্সিজেন। এইটুকু অক্সিজেন তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো। মানুষ অবশ্য এই পরিমাণ অক্সিজেনে বেঁচে থাকতে পারবে প্রায় ১০ মিনিট।
এখানে উৎপাদন মাত্রা নগণ্য হলেও, নাসার বিজ্ঞানীদের কাছে এ এক বিরাট সাফল্য। যা আগামী দিনে মঙ্গলের বুকে গবেষণার কাজে মানুষ পাঠানো এবং সেখানে বেঁচে থাকার পক্ষে অনন্যা পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। এখানে মক্সির অবদানও কিছু কম নয়। এই যন্ত্রটি ভিনগ্রহে মানুষকে বসবাস করার জন্য অমৃত সমান অক্সিজেন সরবরাহ করবে, এব্যাপারেও যথেষ্ট আশা প্রকাশ করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।