‘কোভ্যাকসিন’ (COVAXIN), যেটি সম্পূর্ণ দেশীয় উপায়ে তৈরি করেছে ‘ভারত বায়োটেক’। ডিসিজিআই জানিয়েছে, তৃতীয় দফা ট্রায়ালে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে ২২ হাজার ৫০০ জনকে। এছাড়াও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ (COVISHIELD)-ও তৃতীয় দফার ট্রায়ালে প্রয়োগ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৭৪৫ জনের উপর। এই দুটি ভ্যাকসিন-ই ১০০ শতাংশ নিরাপদ। এবং এই দুটি ভ্যাকসিনকেই জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। |

অনলাইন পেপার : প্রায় এক বছর ধরে করোনার সঙ্গে চলছে ‘ছায়া-যুদ্ধ’। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যার বিরাট প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষাক্ষেত্র, বাণিজ্য, কর্মসংস্থান এরকম প্রায় সমস্ত কিছুর উপরই। তবে আশার কথা, করোনার ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই প্রয়োগ করা শুরু করে দিয়েছে অনেকগুলি দেশ। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন তৈরিও হয়ে গিয়েছিল। এতদিন ওই ভ্যাকসিনগুলির কার্যকারিতা নিয়ে চলছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কমপক্ষে তিনটি ধাপে যাচায় করার পরই যে কোনও ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। করোনার ওই ভ্যাকসিনগুলির অধিকাংশই এই তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে সমর্থ হয়েছে। এবার শুরু হয়েছে সেগুলির প্রয়োগ করা।
ভারতে দুটি ভ্যাকসিনের ওই তিনটি ধাপ বা ট্রায়াল ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। সাফল্যও মিলেছে আশানুরূপ। ‘কোভ্যাকসিন’ (COVAXIN), যেটি সম্পূর্ণ দেশীয় উপায়ে তৈরি করেছে ‘ভারত বায়োটেক’। ডিসিজিআই জানিয়েছে, তৃতীয় দফা ট্রায়ালে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে ২২ হাজার ৫০০ জনকে। এছাড়াও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ (COVISHIELD)-ও তৃতীয় দফার ট্রায়ালে প্রয়োগ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৭৪৫ জনের উপর। এই দুটি ভ্যাকসিন-ই ১০০ শতাংশ নিরাপদ। এবং এই দুটি ভ্যাকসিনকেই জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরই সঙ্গে ভারতই প্রথম দেশ, যে কিনা একই সঙ্গে করোনার দুটি ভ্যাকসিনকে জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের অনুমতি দিল।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ইজরায়েল। সেদেশে গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ। এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলে প্রায় ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়ার হার প্রতি ১০০ জনে ১১.৫৫ জন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই দেশকে করোনা মুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন।
ইজরায়েলের পর ভ্যাকসিন প্রয়োগের হারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাহারাইন (৩.৪৯), এরপর ইংল্যান্ড (১.৪৭)। তবে এখনও পর্যন্ত যতগুলি ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, গ্রহণকারীকে তার দুটি ডোজ অবশ্যই নিতে হবে। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়ার হারকেই প্রকাশ করা হয়েছে।
সমগ্র বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ৮ কোটি ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গিয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষ ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেদেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৯ লক্ষ। মারা গিয়েছে সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এরপরই রয়েছে ভারত। এদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৩ লক্ষেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ।