বয়সের ভারে আর দৃষ্টিহীন হবে না কেউ

Advertisement
eye
অনলাইন পেপার : চোখ মানুষের সবচেয়ে দামি সম্পদ। এই সুন্দর রঙিন পৃথিবীটাকে খুব ভালো করে উপলব্ধি করতে চোখের কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু দৃষ্টিহীনরা চোখ থাকতেও দেখতে অক্ষম। তাদের কাছে এই মস্ত পৃথিবীটা একেবারেই অমাবস্যার রাতের মতো। ঘুটঘুটে অন্ধকার ছাড়া সেখানে আর কিছুই অনুভব করা যায় না।
     বয়সের ভারেও কেউ কেউ দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। প্রয়োজন হয় লেন্সের চশমার। সারাক্ষণ ওই কাঁচের ছোট্ট জানলা ব্যবহার করতে হয় বাইরের জগতকে দেখতে। কিন্তু তাঁদের অনেকেই আবার লেন্সের চশমাতেও কাজ চালাতে পারেন না। ক্রমশই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকে তাঁদের দৃষ্টিশক্তি। এক সময়ে পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেন দেখার ক্ষমতা।
     কিন্তু নতুন গবেষণায় এবার একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, হারানো দৃষ্টিশক্তিকেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ পত্রিকায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ইনোভেশনের একদল বিজ্ঞানী এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন নিয়ে গবেষণা করছিলেন।
     ‘নেচার’ থেকে জানা গেল, গবেষক দলটি জানিয়েছেন, চোখের পিছনে রেটিনার একটি ছোট্ট অংশের নাম ম্যাকুলা। যা মানুষকে দেখতে সাহায্য করে। বয়স বাড়লে এই ম্যাকুলা ক্রমশ ক্ষয় পেতে শুরু করে। ম্যাকুলার এই ক্ষয় পাওয়া বা নষ্ট হওয়াকেই চক্ষু চিকিৎসা বিজ্ঞানে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বলা হয়েছে।
     গবেষক দলটি দাবি করেছেন, তাঁরা এক ধরণের ফটোরিসেপ্টর তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। ওই ফটোরিসেপ্টর তাঁরা ত্বকের ফাইব্রোব্লাস্ট কোষ থেকে ফার্মাকোলোজিক্যাল পদ্ধতিতে তৈরি করেছেন। বয়সের ভারে বা অন্য যে কোনওভাবে চোখের ফটোরিসেপ্টর নষ্ট হয়ে গেলে আর কিছুই করার থাকে না। দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারিয়ে যায়। কিন্তু এবার ফাইব্রোব্লাস্ট কোষ থেকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা ওই নতুন ফটোরিসেপ্টর চোখের নষ্ট হয়ে যাওয়া ফটোরিসেপ্টরের জায়গায় পুনঃস্থাপন করলে আবার আগের মতো দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া যাবে।
     ইতিমধ্যে এই নতুন প্রক্রিয়া কমপক্ষে ১৪টি অন্ধ ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। তাতে ফলও বেশ ভালো পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই গবেষক দলটি। এখন মানুষের ওপর প্রয়োগ করা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে। তাঁরা তাকিয়ে আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ (ফুড এন্ড ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-এর দিকে। কারণ এফডিএ অনুমতি দিলেই তাঁরা এই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করতে শুরু করবেন মানুষের ওপর। তাঁদের দাবি, এই প্রক্রিয়ায় সফলতা এলে বহু মানুষ তাঁদের হারানো দৃষ্টিশক্তি আবার নতুন করে ফিরে পাবেন।
Advertisement
Previous articleএবার হলুদ প্রজাপতির আতঙ্কে বাংলাদেশের গ্রাম
Next articleক্রমশই কি বিলুপ্তির পথে এগোচ্ছে ভারতের কৃষক সম্প্রদায়?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here