বড়দিন মানেই কেক, এই বড়দিনের সঙ্গে কেক-এর কি সম্পর্ক?

Advertisement

বড়দিনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ৩৩৬ সাল নাগাদ রোমান সম্রাট কনসট্যান্টাইন-এর সময়ে ইউরোপে প্রথম বড়দিন পালন করা হয়। সে সময়ে ২৫ ডিসেম্বরের আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে উপবাস পালন করত রোমানরা। পরে তারা এই উপবাস ভাঙত ‘পরিজ’ দিয়ে। পরিজ তৈরি হত ‘ওটমিল’ সহযোগে। এই পরিজ-কে আরও সুস্বাদু করতে এতে বিভিন্ন রকমের খাদ্যদ্রব্য মেশানো শুরু হতে থাকে।


বড়দিন মানেই কেক, এই বড়দিনে সঙ্গে কেক-এর কি সম্পর্ক?
Image by Ben Frewin from Pixabay

জনদর্পণ ডেস্ক : ২৫ ডিসেম্বর মানেই বড়দিন। আর বড়দিন মানেই কেক। দিন কতক আগে থেকেই পাড়ার অলিতে-গলিতে বিচিত্র রকমের কেক দিয়ে দোকান সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। বিভিন্ন স্বাদ আর বিভিন্ন আকারের কেক-এর মূল্যও এখানে ভিন্ন ভিন্ন। বড়দিনের সকাল থেকেই সমর্থ অনুযায়ী যে যেমন খুশি পছন্দ মতো কেক কিনতে চায়। বছরের বাকি দিনগুলির তুলনায় এই একটি দিনই কেক-এর বাজার বেশ গরমই থাকে। ব্যবসায়ীরা বেশ ভালো রকম মুনাফা করার সুযোগ পান। কিন্তু বড়দিনে সঙ্গে এই কেক-এর কি সম্পর্ক?

অবশ্য এই সম্পর্কটা প্রথম থেকে কখনওই ছিল না। খ্রিস্টান ধর্মানুযায়ী ২৫ ডিসেম্বর যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন। তার জন্মদিনকে এখন সাদরে পালন করার জন্য কেক বিতরণ ও কেক খাওয়ার রীতি চালু হয়েছে। প্রথম দিকে অবশ্য এই সব রীতির কোনও বালাই ছিল না। কেক খাওয়ার রীতি চালু হয়েছে মধ্য যুগ থেকে।

বড়দিনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ৩৩৬ সাল নাগাদ রোমান সম্রাট কনসট্যান্টাইন-এর সময়ে ইউরোপে প্রথম বড়দিন পালন করা হয়। সে সময়ে ২৫ ডিসেম্বরের আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে উপবাস পালন করত রোমানরা। পরে তারা এই উপবাস ভাঙত ‘পরিজ’ দিয়ে। পরিজ তৈরি হত ‘ওটমিল’ সহযোগে। এই পরিজ-কে আরও সুস্বাদু করতে এতে বিভিন্ন রকমের খাদ্যদ্রব্য মেশানো শুরু হতে থাকে। সময়ের বিবর্তনে এতে একে একে মেশানো হতে থাকে বিভিন্ন রকমের শুকনো ফল, যবের গুড়ো, মধু, মদ, মশলা। এমকি মাংসও বাদ যেত না পরিজ-এর উপাদান হিসাবে। রোম থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইউরোপে।

পরে মধ্যযুগে এসে পরিজ-এ পরিবর্তে প্লাম কেক বানাতে শুরু করে ইউরোপীয়রা। এই প্লাম কেক প্রথম তৈরি হয়েছিল ইংল্যান্ড-এ। তারা ১৬০০ সাল নাগাদ ওটমিলের জায়গায় নিয়ে আসে ময়দা, ডিম আর মাখন। সেই সঙ্গে শুকনো ফল, মধু আর মশলা তো ছিলই। এই মিশ্রণকে হালকা আঁচে সেঁকে নিলেই তৈরি হয়ে যেত প্লাম কেক।

প্রথম দিকে এই কেক বাড়িতেই তৈরি করত ইউরোপীয়রা। পরে ধীরে ধীরে গজিয়ে উঠতে থাকে একাধিক কেক-এর বেকারি শিল্প। তখন থেকেই শুধু বড়দিন নয়, সারা বছরই পাওয়া যেত থাকে এই কেক। শীতল পরিবেশে যে কোনও খাদ্যদ্রব্যই দীর্ঘ সময় ভালো রাখা যায়। গ্রীষ্ম প্রধান দেশগুলিতে তাই বছরের অন্য সময়গুলির থেকে শীতকালেই কেক তৈরি হয় বেশি।

এখন আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু কেক। তাতে কেমিক্যালের অংশও নেহাত কম থাকে না। তাই অনেকেই ঘরোয়া উপায়ে কেক তৈরি করে থাকেন। ঠিকঠাক নিয়ম আর উপাদান সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান থাকলে যে কেউ এই কেক বানিয়ে ফেলতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন হয় না আলাদা করে কোনও প্রশিক্ষণের। এখন তো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এব্যাপারে নিয়মিত আলোচনাও করা হয়।

Advertisement
Previous articleখেজুর রস : এক উৎকৃষ্ট প্রাকৃতিক পানীয়, কী আছে এতে?
Next articleস্বনির্ভরতা-র লক্ষ্যে কাগজের ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণ পাহাড়পুরে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here