গত ৩ ডিসেম্বর ‘শান্তিনিকেতন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ বোলপুর ইয়ং টাউন ক্লাবের সভাকক্ষে ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ উদযাপন করল। এদিনের অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় সমগ্র বীরভূম জেলার ২০ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কৃতি ব্যক্তিকে নিয়ে। অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় শীতবস্ত্র, প্ল্যাস্টিক বর্জিত ব্যাগ, মাস্ক ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে গান, কবিতা পাঠেরও আয়োজন করা হয় এদিন। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি |

জনদর্পণ ডেস্ক : ঘটনার সূত্রপাত ১৯৫৮ সালের মার্চ মাসে। ওই বছর বেলজিয়ামের একটি খনিতে আকস্মিক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন কয়েক হাজার মানুষ। আহতদের মধ্যে প্রায় ৫ হাজার খনি শ্রমিক সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়ে যান। তাঁদের কর্মজীবনে নেমে আসে গাঢ় অন্ধকার। অবশ্য পরে কিছু সমাজ সচেতন ব্যক্তি ও বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় তাঁরা উপযুক্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের মতো আরও কিছু সাহায্য পান।
এই ঘটনার পরের বছর অর্থাৎ ১৯৫৯ সালে জুরিখ শহরে একটি অন্তর্দেশীয় সম্মেলন বসে। ওই সম্মেলনে যোগ দেয় বিশ্বের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন। এই সম্মেলনে বেলজিয়ামের খনি দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়া মানুষদের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতে ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ পালন করারও প্রস্তাব ওঠে ওই সম্মেলনে। এর অনেক পরে ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘ প্রতি বছর ৩ ডিসেম্বর ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ পালন করতে সম্মতি দেয়।
সেকথা স্মরণ করে গত ৩ ডিসেম্বর ‘শান্তিনিকেতন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ বোলপুর ইয়ং টাউন ক্লাবের সভাকক্ষে ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ উদযাপন করল। এদিনের অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় সমগ্র বীরভূম জেলার ২০ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কৃতি ব্যক্তিকে নিয়ে। অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় শীতবস্ত্র, প্ল্যাস্টিক বর্জিত ব্যাগ, মাস্ক ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে গান, কবিতা পাঠেরও আয়োজন করা হয় এদিন।
উপস্থিত ওই ২০ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় জগন্নাথ মাহারা, টুম্পা রায়, ইন্দ্রজিৎ পাল, শেখ ইমরান, অনীশ মালীর নাম। তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতিবন্ধী হয়েও বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের তুলে ধরেছেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার ঘোষ, যুব আধিকারিক মহানন্দ মাহাতো, বোলপুর পৌরসভা প্রশাসক সুকান্ত হাজরা, বোলপুর পিএম হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ মোহিত সাহা, ইটাচুনা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক সুজিত রেজ প্রমুখ।