বৈশ্বিক উষ্ণায়ন-এ সুরক্ষিত নেই সদ্যজাত শিশুরাও

Advertisement

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন-এর কারণে সদ্যজাত শিশু, এমনকি মাতৃগর্ভের ভ্রূণও সুরক্ষিত থাকছে না। অপরিণত অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে শিশু। বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হচ্ছে ওই সমস্ত সদ্যজাত শিশুদের মধ্যে। এর পাশাপাশি মহিলাদেরও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে প্রজননের ক্ষমতা। গবেষণা চালানো হয়েছে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা সহ সমস্ত মহাদেশেই। ওই গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন-এর প্রভাবে সদ্যজাত শিশুদের স্থূলত্ব প্রকট হচ্ছে।


বৈশ্বিক উষ্ণায়ন-এ সুরক্ষিত নেই সদ্যজাত শিশুরাও
Image by Pexels from Pixabay

অনলাইন পেপার : বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা যে অতি দ্রুতগতিতে বাড়ছে, তা নতুন করে বুঝিয়ে বলার কোনও প্রয়োজন নেই। এই বিভিন্ন কারণগুলির মধ্যে মনুষ্য সৃষ্ট কারণগুলিই সবচেয়ে বেশি দায়ী। আর এর কি ভয়াবহ ফল, তা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে বিশ্বের কাছে। অনিয়মিত ঋতু পরিবর্তন, গ্রীষ্ম ও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি সহ বারংবার দাবানল, ঝড়, বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি, বন্যা প্রভৃতি পূর্বের তুলনায় এখন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলতে বোঝানো হয়েছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে। মূলত ১৮৬০ সাল থেকেই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি ঘটছে এই উষ্ণতার। তার গতি বেড়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে। ১৯০০ সাল থেকে বর্তমান বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ০.৭৫ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। এছাড়াও সমুদ্র-ভাগ ও ভূ-ভাগের তাপমাত্রার ব্যবধান ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭৯ সালের পর থেকে এই ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ গ্রিন হাউজ এফেক্ট।

এর ফলাফল যে অত্যন্ত উদ্বেগের তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন গবেষণায় আরও উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা। ‘জার্নাল পিডিয়াট্রিক এন্ড পেরিন্যাটাল এপিডিমিয়োলজি’ নামের ওই বিজ্ঞান পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ৬টি বিশেষ গবেষণাপত্র। সেখানে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিশ্ব জুড়ে শিশুদের জন্য বিশেষ উদ্বেগের কারণ বলে বর্ণনা করেছে।

জানা যাচ্ছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন-এর কারণে সদ্যজাত শিশু, এমনকি মাতৃগর্ভের ভ্রূণও সুরক্ষিত থাকছে না। অপরিণত অবস্থায় জন্ম নিচ্ছে শিশু। বিভিন্ন জটিলতা তৈরি হচ্ছে ওই সমস্ত সদ্যজাত শিশুদের মধ্যে। এর পাশাপাশি মহিলাদেরও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে প্রজননের ক্ষমতা।

গবেষণা চালানো হয়েছে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা সহ সমস্ত মহাদেশেই। ওই গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন-এর প্রভাবে সদ্যজাত শিশুদের স্থূলত্ব প্রকট হচ্ছে। অর্থাৎ একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে জন্মের প্রায় ১ বছরের মধ্যেই শিশুদের ওজন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ১৮ শতাংশ শিশুর-ই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, মায়েদের উপরেও প্রভাব ফেলছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। সন্তান ধারণের পূর্বেই মায়েদের শরীরে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রকমের জটিল সমস্যা। সমস্যাগুলি অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ীও হচ্ছে। যার ফলে অনেকাংশেই সদ্যজাত শিশুরাও জটিল সমস্যায় পড়ছে। এক্ষেত্রে ওই গবেষণাপত্রে ‘গ্যাস্ট্রোস্কাইসিস’ নামের একটি জটিল রোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই রোগের কারণে সদ্যজাতদের অন্ত্র বা বিভিন্ন অন্ত অঙ্গ প্রসারিত হচ্ছে। অনেক সময় চামড়ায় ছিদ্র করে তা বাইরেও প্রকাশ পাচ্ছে। এই সমস্যা বর্তমানে প্রায় ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এমনকি গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে, কয়েকটি দেশে অত্যধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে আরও জটিল সমস্যার শিকার হচ্ছে ওই সমস্ত দেশের মা ও তাদের সদ্যজাত সন্তানেরা। তার মধ্যে বিকলাঙ্গের সমস্যা অন্যতম।

Advertisement
Previous articleফাইভ-জি পরিষেবা চালুতে এয়ারলাইন্সগুলো কেন উদ্বেগে রয়েছে?
Next articleআনা ফ্রাঙ্ক : কে ছিল বিশ্বাসঘাতক? জানা গেল এতদিন পর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here