আবার নাকি পৃথিবী তার আহ্নিক গতিতে পরিবর্তন এনে দ্রুতগামী হয়েছে। ফলে এবার নিজের অক্ষের উপর দাঁড়িয়ে এক পাক খেতে তার সময় লাগছে ২৪ ঘণ্টারও কম। পৃথিবীর এই গতির পরিবর্তন এসেছে ২০২০ সালের জুন মাস থেকে। ওই বছরের ১৯ জুলাই দিনটির সময় ছিল ২৪ ঘণ্টা থেকে ১.৪৬০২ মিলি সেকেন্ড কম। পৃথিবীর এই খামখেয়ালিপনায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও। কারণ সময় শেষ হওয়ার আগেই ছুটে চলেছে পৃথিবী। পালটে যাচ্ছে ঘড়ির হিসাব-নিকাষ। |

অনলাইন পেপার : বেশ কয়েক বছর আগে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রজার বিলহ্যাম ও মন্টানা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেরেকা বেনডিক তাঁদের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে তাঁরা উভয়েই উল্লেখ করেছিলেন, পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি পূর্বের তুলনায় ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এই দুই মার্কিন বিজ্ঞানী মূলত গবেষণা করছিলেন বেশ কয়েকটি বড়ো ধরণের ভূমিকম্প নিয়ে। যা পর পর কয়েক বছরের মধ্যেই জাপান, পেরু, ইরান, মেক্সিকো-তে সংগঠিত হয়েছিল। এত দ্রুত পর পর ভূমিকম্পের কারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁরা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন পৃথিবী পূর্বে তুলনায় বেশ কিছুটা মন্থর গতিতে ঘুরছে। আর তাতেই পরিবর্তন ঘটেছে পৃথিবীর অভ্যন্তরে। যদিও এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় তাঁরা কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা তুলে ধরতে পারেননি।
কিন্তু পরে অন্য আরও অনেক বিজ্ঞানী একথা স্বীকারও করে নিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, পৃথিবী কয়েক দশক ধরেই মন্থর গতিতে ঘুরছে। যার ফলে নিজের অক্ষের চারপাশে এক পাক ঘুরতে পৃথিবীর সময় লাগছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি। এমনিতেই পৃথিবী এই পাক খেতে সময় নেয় সূর্যের সাপেক্ষে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড বা ২৪ ঘণ্টা। পৃথিবীর গতি মন্থর হয়ে যাওয়ায় এই আহ্নিক গতিতে বদল এসেছে। তাতে সময় লাগছে বেশি।
তবে এবার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এই ধারণার বদল ঘটাতে হচ্ছে। কারণ আবার নাকি পৃথিবী তার আহ্নিক গতিতে পরিবর্তন এনে দ্রুতগামী হয়েছে। ফলে এবার নিজের অক্ষের উপর দাঁড়িয়ে এক পাক খেতে তার সময় লাগছে ২৪ ঘণ্টারও কম। দি ডেইলি মেইল সূত্রে জানা যাচ্ছে, পৃথিবীর এই গতির পরিবর্তন এসেছে ২০২০ সালের জুন মাস থেকে। ওই বছরের ১৯ জুলাই দিনটির সময় ছিল ২৪ ঘণ্টা থেকে ১.৪৬০২ মিলি সেকেন্ড কম।
পৃথিবীর এই খামখেয়ালিপনায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও। কারণ সময় শেষ হওয়ার আগেই ছুটে চলেছে পৃথিবী। পালটে যাচ্ছে ঘড়ির হিসাব-নিকাষ। গত বছরের জুন মাস থেকে নিয়মিত ঘটে চলেছে সময়ের এই পরিবর্তন। এক্ষেত্রে সময় হ্রাস পেয়েছে প্রায় ০.৫ মিলি সেকেন্ড। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা, এবার হয়তো আরও একবার তাঁদের অ্যাটোমিক ঘড়িতে লিপ সেকেন্ড যোগ করতে হবে। সময়ের হিসাব ঠিকঠাক রাখতে মাঝে মধ্যেই তাঁরা সময় ঘড়িতে এই অতিরিক্ত লিপ সেকেন্ড যোগ করে থাকেন। ১৯৭০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁরা এই রকম ২৭টি লিপ সেকেন্ড যুক্ত করেছেন।