Advertisement
করোনা ও আমফানের উভয় তাণ্ডবে বিপর্যস্ত এখন দুঃস্থ মানুষগুলির স্বাভাবিক জীবন। দিন আনা দিন খাওয়া এই মানুষগুলির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কিছু আঞ্চলিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এদের মধ্যে অন্যতম সংগঠন হল ‘নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’-র বোলপুর শাখা।
|
রঞ্জন সরকার : করোনা যেন কিছুতেই দেশ থেকে বিদায় নিতে চাইছে না। উপরন্তু প্রতিদিনই সংক্রমণ ঘটিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে। এই করোনাকে রুখতে তাই বাধ্য হয়েই দেশ জুড়ে শুরু করতে হয়েছে লকডাউন। এখন তো বাংলার কয়েকটি বাদে প্রায় প্রতিটি জেলায় থাবা বসিয়েছে করোনা।
মূলত ২৩ মার্চ বিকাল থেকে শুরু হওয়া লকডাউন এখনও চলমান। লকডাউনের সময়সীমা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিপদ এখানেই সবচেয়ে বেশি। সমস্ত দেশবাসী এক প্রকার ঘরবন্দি জীবন-যাপন করছে এখন। যদিও ১৭ মে-র পর দেশ জুড়ে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে মানুষও ঘর থেকে বেরুতে শুরু করেছেন। তবুও পুরোটাই এখনও নিয়মে বাধা। আসলে দীর্ঘদিন লকডাউন বজায় রাখলে ক্ষতি হবে দেশের তামাম মানুষের, বিশেষ করে যাঁদের সঞ্চয় বলতে তেমন কিছুই নেই। এই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি অবস্থা হবে সবচেয়ে সঙ্গিন।
ইতিমধ্যে সঙ্গিনও হয়ে উঠেছে অনেক পরিবার। কোথাও কাজ নেই, তাই অর্থ আসছে না ঘরে। যদিও রেশনের চাল দিয়ে দিন কতক চলে যাচ্ছে বেশ। কিন্তু সংসারের অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিষপত্র মিলবে কোথায়?
লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই চাষিদের ছাড়ের মধ্যেই রাখা হয়েছিল। কারণ চাষ বন্ধ হলে পেটও বন্ধ হবে এক প্রকার। কিন্তু বাংলার চাষিদের কপালও খারাপ এ বছর। পর পর ঝড় ও বৃষ্টি আর শেষ পর্যায়ে আমফানের তাণ্ডবে পাকা ধানও ঘরে তুলতে পারেননি অনেক চাষি পরিবার। মাঠের ধান মাঠেই ঝরে যাচ্ছে চোখের সামনে। অসহায় দৃষ্টি দিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকছে না তাঁদের।
ঠিক এরকম অবস্থায় কিছু আঞ্চলিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণ হাতে নেমে পড়েছেন ত্রাতা হয়ে। করোনায় জর্জরিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। কাজ হারা, ‘ঘরে হাঁড়ি না চাপা’ মানুষগুলিকে সাহায্য করে যাচ্ছে দিন রাত। এমনই একটি সংগঠন “নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি”। বীরভূম জেলার বোলপুরের এই শাখাটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বহুবার।
২৪ মে ওই সংগঠনটির সদস্যরা ত্রাণ তুলে দিলেন বীরভূমের কসবা পঞ্চায়েতের বাউতিজোল আদিবাসী গ্রামের ৫০টি পরিবারের হাতে। নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির বোলপুর শাখার এই সংঘটনের সম্পাদক সুদীপ্ত আচার্য জানালেন, প্রতিটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া এদিনের ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল মুসুরির ডাল (৫০০ গ্রাম), সোয়াবিন (২০০ গ্রাম), লবণ (৫০০ গ্রাম), চিনি (৫০০ গ্রাম), সরিষার তেল (২০০ গ্রাম), সাবান (১টি), আলু (২ কিলোগ্রাম), পিঁয়াজ (৫০০ গ্রাম), বিস্কুট (১ প্যাকেট) প্রভৃতি। সম্পাদক সুদীপ্ত আচার্য আরও জানালেন, নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি এরকম বিপর্যয়ের মুহূর্তে সব সময়ই মানুষের পাশে থাকবে।
Advertisement