Advertisement
অনলাইন পেপার : কিছুদিন আগেই আইকিউ এয়ার প্রকাশ করেছে গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে বায়ুদূষণের হার কোন শহরে কেমন ছিল। একই সঙ্গে তারা প্রকাশ করেছে কোন দেশ বায়ুদূষণে কতটা এগিয়ে ছিল। বায়ুদূষণের এই হার নির্ণয় করতে তারা অনুসরণ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক বায়ুমানের সূচক। সেখানে দেখানো হয়েছে ভারতের দিল্লি বায়ুদূষণের মানমাত্রায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে ঢাকা, উলানবাটর, কাবুল ও জাকার্তা। এই রিপোর্টে আরও প্রকাশ পেয়েছে সবচেয়ে বায়ুদূষণ যুক্ত দেশের নামও। সেখানে প্রথম পাঁচটি দেশ হল যথাক্রমে বাংলাদেশ, পাকিস্থান, মঙ্গোলিয়া, আফগানিস্থান ও ভারত। অর্থাৎ উভয় দিক থেকেই প্রথম পাঁচে ভারতের নাম চলে আসছে। যদিও ২০১৮ সালের তুলনায় ভারতে বায়ুদূষণের মাত্রা প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। তবু এই হ্রাস এমন কিছু বেশি নয়।
এরই মাঝে বিজ্ঞানীরা তাঁদের সম্প্রতি গবেষণা থেকে তুলে এনেছেন নতুন কিছু তথ্য। তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন, বায়ুদূষণে অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে। হ্রাস পাচ্ছে মানুষের গড় আয়ুও। নতুন এই গবেষণা পত্রটি প্রকাশিত হয়েছে কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ জার্নালে।
সেখানে বলা হয়েছে শুধুমাত্র বায়ুদূষণের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর অকাল মৃত্যু ঘটছে প্রায় ৮৯ লক্ষ মানুষের। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের জন্য মানুষের গড় আয়ু হ্রাস পাচ্ছে প্রায় ৩ বছরের মতো।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ ঘটছে। এই জীবাশ্ম জ্বালানির ফলে যে কার্বন কণার সৃষ্টি হচ্ছে, তা প্রশ্বাসের সময় মানুষের ফুসফুসে প্রবেশের পর আটকে থাকছে। অতি সহজে বের করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে এবং মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ক্রিয়া-কর্ম ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে শরীরে বাসা বাঁধছে বিভিন্ন রোগের।
বায়ুদূষণের ফলে সরাসরি সৃষ্ট রোগগুলির মধ্যে যেমন হাঁপানি বা ব্রঙ্কাইটিস বাসা বাঁধছে মানুষের শরীরে, ঠিক তেমনি কিছু রোগ নিজের অজান্তেও ছড়িয়ে পড়ছে মন ও শরীর জুড়ে। বিষণ্ণতা, রাগ, ক্ষোভ, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, এমনকি আত্মহত্যার প্রবণতা হিসাবে সেই সমস্ত রোগগুলি আত্মপ্রকাশ করছে।
তাই বায়ুদূষণ বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো শত্রু, একথা এখন জোর দিয়ে বলা-ই যায়। পরিবেশবিদরা মনে বলছেন, শুধুমাত্র ধূমপান জনিত বায়ুদূষণের ফলেই যে মানুষের আয়ু কমছে তা নয়, পরিবেশের অন্যসব কারণেও যে বায়ুদূষণ ঘটছে তা আরও মারাত্মক। তাঁদের ধারণা, মানুষ ইচ্ছা করলেই বায়ুদূষণের পরিমাণ কমাতে পারে। স্বাভাবিক সুস্থ করতে পারে পরিবেশকে।
Advertisement