বাজারে সবজির দামে আগুন, সমস্যায় ক্রেতা-বিক্রেতা

Advertisement
চলতি বাজারে ক্রমশ বেড়েই চলেছে সবজির দাম। ক্রেতারা আকাশ ছোঁয়া দামে কিনতে পারছেন না তাঁদের কাঙ্ক্ষিত আনাজ। খুচরো বিক্রেতারাও একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সবজি বিক্রয় করতে গিয়ে। সবজির এই দাম আগামীতে আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে, জানালেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি
%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%2586%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25A8 %25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A7%259F %25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE %25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%2595%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE
নারায়ণচন্দ্র দাস : থলে হাতে সবজির বাজারে গিয়ে যথেষ্ট মোটা টাকা খরচ না করলে যেন কিছুতেই থলে ভরতে চাইছে না। প্রায় এক মাস আগেও যেখানে ৮০-১০০ টাকায় সবজিতে থলে ভরে যেত, এখন সেখানে প্রয়োজন হচ্ছে প্রায় ১৫০-২০০ টাকার। এমনই দাবি করছেন সবজির বাজার থেকে ফিরে আসা অনেক ক্রেতায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাজারে সবজির আমদানি মোটামুটি থাকলেও সবজির দামে যেন আগুন ঝরছে। সাধ্যমতো ক্রয় করা কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না। দিন দিন বেড়েই চলেছে সবজির দাম।
     বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের সবজির পাইকারি বাজারে প্রবেশ করলেই দাম সম্বন্ধে কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যাবে। এখানে পাইকারি দরে পটল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২৬-৩০ টাকা গড়ে। বেগুন ৩০-৪০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ৬০-৭০ টাকা। রসুন ১০০-১২০ টাকা, আদা ১২০-১৫০ টাকা, পঙ্কা শাক ৪০-৪৫ টাকা। সবজির পাইকারি দর যদি এতটাই চড়া হয় তাহলে খুচরোর দাম কত হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যাবে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, এই দাম ক্রমশই বাড়তে থাকবে।
     যদিও কিছু সবজির দাম যথেষ্ট সাধ্যের মধেই রয়েছে। বোলপুর সবজি বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি দর কেজি প্রতি ১৮-২০ টাকা, ঢেঁড়স ১২-১৫ টাকা। তবে আলুর দাম এখন অনেকটাই চড়া। খুচরো আলু এখানে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে কেজি প্রতি ২২-২৬ টাকায়। আলু চাষের মরশুমে চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ায় আলুর এই দাম বৃদ্ধি অনেকেই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন।
     কি কারণে সবজির দাম এত ঊর্ধ্বমুখী, জানতে চাওয়াতে বোলপুর সবজি বাজারের স্থায়ী পাইকারি ব্যবসায়ী মুন্না সাউ জানালেন, লকডাউনের জন্য ট্রেন না চলায় বাইরে থেকে সবজির আমদানি বলতে গেলে একেবারেই নেই। তাই সৃষ্টি হয়েছে এই সমস্যার।
     তবে চাষিরা জানাচ্ছেন অন্য কথা। তাঁদের দাবি অনুযায়ী দুটি কারণে চলতি বাজারে সবজির দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। বোলপুরের পার্শ্ববর্তী গ্রাম ধান্যসড়ার স্থানীয় চাষি নয়ন মেটে জানালেন, দীর্ঘদিন লকডাউনের জন্য অধিকাংশ কৃষক ভালো বীজ আনতে পারেননি। সেই সঙ্গে চাষের ভালো ওষুধও হাতে পাননি তাঁরা। তাই ফসল উৎপাদনে অনেকটাই ঘাটতি থেকে গিয়েছে। নয়ন মেটে আরও জানালেন, আবহাওয়ার বারংবার খামখেয়ালীপনাতেও ক্ষতি হয়েছে চাষের। এবছর গ্রীষ্মে বার কয়েক ঝড় ও অতিবৃষ্টির কারণে ঠিকভাবে অনেক কৃষক তাঁদের কাঙ্ক্ষিত ফসল ফলাতেই পারেননি।
     বোলপুরের সবজি বাজার মূলত নির্ভর করে পার্শ্ববর্তী গ্রাম, বিশেষ করে বাহিরী-পাঁচশোয়া, সিঙ্গি, বেজরা, ধান্যসড়া, সিয়ান, মুলুক, এমনকি বর্ধমান জেলার ভেদিয়া অঞ্চল থেকে আমদানি হওয়া সবজির ওপর। ওই সমস্ত অঞ্চলগুলিতে এবছর তেমনভাবে ফসল ফলতে দেখা যায়নি। অনেক কৃষিক্ষেত্র আবার অতিবৃষ্টির কারণে জলমগ্নও হয়ে পড়েছিল। তাই সবজির ব্যাপক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বোলপুরের বর্তমান সবজি বাজারে।
     শুধু বোলপুর নয়, একই অবস্থা বীরভূম জেলার অন্য সবজি বাজারগুলিতেও। আমোদপুর, লাভপুর, কীর্ণাহারের মতো ছোটো শহরগুলির পাশাপাশি সাঁইথিয়া, সিউড়ি, রামপুরহাট এরকম বড়ো শহরগুলিতেও ওই একই পরিস্থিতি চলছে। এতে সমস্যায় পড়ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই। বাজারে সবজি কিনতে এসে অনেকেই সবজির আকাশ ছোঁয়া দর দেখে নিজের কাঙ্ক্ষিত সবজি ঠিক-ঠাক কিনতে পারছেন না। খুচরো বিক্রেতাও অধিক পাইকারি দরে সবজি কিনে বিক্রয়ের সময় একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
Advertisement
Previous article‘চাদর বাঁধনী’ পুতুল শিল্পকে বাঁচাতে বিশেষ কর্মশালা শান্তিনিকেতনের সৃজনীতে
Next articleপরিবেশ বিষয়ে সতর্ক না হলে আগামীতে করোনার মতো মহামারী আরও হতে পারে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here