দীর্ঘদিন ধরেই মাদাগাস্কার ও আফ্রিকার বাসিন্দাদের কাছে বাওবাব জীবন ও জীবিকার প্রধান গাছ হিসাবে পরিচিত হয়ে রয়েছে। সুবিশাল ও মসৃণ গুঁড়ি বিশিষ্ট এই বাওবাব প্রায় ৭৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য, গুঁড়ি লম্বা হয়ে একেবারে মাথার দিকে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাই দূর থেকে একে অনেকটা উলটানো গাছের মতো দেখায়।

পৃথিবীতে যতরকম রহস্যময় উদ্ভিদ হয়েছে, তার মধ্যে বাওবাব উপরের সারিতেই রয়েছে। বলা হয়, জলের অভাবে যেখানে কোনও উদ্ভিদ টিকে থাকতে পারে না, বাওবাব সচ্ছন্দে সেখানে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। এই উদ্ভিদের প্রাণশক্তি অত্যন্ত শক্তিশালী। মরুভূমির মাঝেও কয়েক হাজার বছর ধরে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে বাওবাব।
তাই বাওবাব কে নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এর আদি উৎপত্তি নিয়ে। সাধারণত আফ্রিকা, মাদাগাস্কার আর অস্ট্রেলিয়াতেই এদের অধিকতর অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও আরবের শুষ্ক মরু অঞ্চলেও এদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। তাই বাওবাব এর আদি বসতি কোথায় এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল বিভিন্ন তর্কবিতর্ক। দুজন দম্পতি উদ্ভিদ বিজ্ঞানীর দাবি, এবার বোধহয় সেই রহস্যের সমাধান করে ফেলেছেন তাঁরা।
বাওবাব এর ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করার সময় অ্যান্দ্রু লেইচ ও তাঁর স্ত্রী ইলিয়া লেইচ জানতে পারেন এই গাছের আদি ভূমি মাদাগাস্কার। প্রায় দুই কোটি দশ লক্ষ বছর আগে এই গাছের উৎপত্তি হয়েছিল সেখানে। পরে কোনওভাবে সমুদ্রের জলে ভেসে বাওবাব এর বীজ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে যায়। অ্যান্দ্রু লেইচ ইংল্যান্ডের ম্যারি বিশ্ববিদ্যালয় ও তাঁর স্ত্রী ইলিয়া লেইচ কিউয়ের গবেষক। তাঁরা মূলত আট প্রজাতির বাওবাব নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার মধ্যে ছয়টি ছিল মাদাগাস্কারের এবং একটি করে ছিল আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির।
দীর্ঘদিন ধরেই মাদাগাস্কার ও আফ্রিকার বাসিন্দাদের কাছে বাওবাব জীবন ও জীবিকার প্রধান গাছ হিসাবে পরিচিত হয়ে রয়েছে। সুবিশাল ও মসৃণ গুঁড়ি বিশিষ্ট এই বাওবাব প্রায় ৭৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য, গুঁড়ি লম্বা হয়ে একেবারে মাথার দিকে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে। তাই দূর থেকে একে অনেকটা উলটানো গাছের মতো দেখায়। সুবিশাল গুঁড়িতে বর্ষার মরশুমে বাওবাব প্রচুর পরিমাণে জল ধরে রাখতে পারে। বছরের প্রায় নয় মাসই এদের শরীরে কোনও পাতা থাকে না। তখন এদের অনেকটা মৃত গাছের মতো মনে হয়। এই গাছে ছাল থেকে বের করা তন্তু দিয়ে পোশাক তৈরি করা যায়। এর ফলও পুষ্টিকর খাবার হিসাবে খেয়ে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই অদ্ভুত দর্শনের এই গাছকে উপকারিতার দিক দিয়ে বিচার করে মাদাগাস্কার বাসিন্দারা ‘বনের মা’ বলে থাকেন।