পৃথিবীর মহিলাদের অনেকেই মহাকাশে পাড়ি দিলেও চাঁদের বুকে এখনও কোনও মহিলা অবতরণ করেননি। প্রথম মহিলা মহাকাশচারী ছিলেন রাশিয়ার বাসিন্দা ভেলেন্তিনা তেরেস্কোভা। এবার চাঁদের বুকে নামতে চলেছেন প্রথম কোনও মহিলা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যেই এই নতুন ইতিহাস তৈরি করে ফেলবে নাসা। এই মিশনের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার। – ছবি : সংগৃহীত |

রঞ্জন সরকার : মহাকাশ গবেষণায় মহিলাদের ভূমিকা কতটা, যদি প্রশ্ন করা হয়, তাহলে অতীতকে একটু নেড়ে দেখতে হবে। সেই ষাটের দশকে প্রথমবারের জন্য মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন রুশ মহাকাশচারী ভেলেন্তিনা তেরেস্কোভা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস বা ভারতীয় মহিলা মহাকাশচারী কল্পনা চাওলার কথাও সবারই জানা। অর্থাৎ মহাকাশ গবেষণায় মহিলাদের ভূমিকা রয়েছে যথেষ্ট। বর্তমান নাসার মহাকাশ গবেষণাগারে প্রচুর মহিলাও রয়েছেন, যাঁরা এক একজন গুরুত্বপূর্ণ মহিলা মহাকাশ বিজ্ঞানী।
কিন্তু চাঁদের মাটিতে এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলা-ই পদার্পণ করতে পারেননি। যে ১২ জন মহাকাশচারী চাঁদে পা রাখার সৌভাগ্য অর্জন করতে পেরেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই পুরুষ। তবে এবার সেই আশাও পূরণ হবে বলে জানা যাচ্ছে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন পৃথিবী প্রথম কোনও মহিলা মহাকাশচারী।
এই মিশনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আর্টোমিস’। এবারের মিশনে চাঁদে পা রাখবেন একজন পুরুষ ও সেই সঙ্গে একজন নারী। বিশেষ একটি ক্যাপসুলে তাঁরা চাঁদের বুকে উত্তরণ করবেন। সৃষ্টি হবে নতুন আর এক ইতিহাস। তবে সেই ইতিহাসের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যেই সেদেশের সরকারকে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে নাসা। সময় মতো টাকা হাতে এলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। কারণ নির্ধারিত সময়ে চাঁদের বুকে উত্তরণের জন্য একটা অবতরণ ক্ষেত্র প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
চাঁদের বুকে ‘আর্টোমিস’ অবতরণের জন্য আগামী ৪ বছরে নাসার ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ বিলিয়ন ডলার। যে ক্যাপসুলে তাঁরা চাঁদে উত্তরণ করবেন তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অরিয়েন’।
তবে খরচ একটু বেশিই ধরা হচ্ছে এবার। সে ব্যাপারে নাসা জানাচ্ছে, উৎক্ষেপণ, অবতরণ, অরিয়েন এসমস্ত কিছুই খরচ সাপেক্ষ। সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আগামী ৪ বছরের এই পরিকল্পনার আরও কিছু ব্যয়। মহাকাশচারীদের বিশেষ পোশাকের জন্যও খরচ হবে অনেকটাই।
যদিও নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যথেষ্ট উৎসাহী এই পরিকল্পনায়। তাঁরা জানাচ্ছেন, খরচ একটু বেশি হলেও চাঁদের মাটিতে এই প্রথম কোনও নারীর অবতরণ তাঁদের গবেষণার গতিকে আরও খানিকটা বাড়িয়ে দেবে নিঃসন্দেহে। মহাকাশ গবেষণাতেও নতুন করে জোয়ার আসবে নিশ্চিতভাবে।