Advertisement
অনলাইন পেপার : করোনার কঠিন আঘাতে বর্তমান বিশ্ব আজ ক্ষত-বিক্ষত। বিশাল এই পৃথিবীর এমন কোনও স্থান এখন ফাঁকা নেই, যেখানে করোনা নামক আতঙ্ক প্রবেশ করেনি। প্রতিদিনই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এই মারণ ভাইরাসে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এর থেকে মুক্তির উপায় এখনও সঠিকভাবে বের করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি কারও পক্ষে।
সেই সঙ্গে ক্রমশই খারাপ থেকে খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা। কারণ গোটা পৃথিবীতে একই সঙ্গে লকডাউন চলায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ। ঘরবন্দি থাকার ফলে বেড়েছে সামাজিক দূরত্ব। খুব পরিচিতের সঙ্গেও এই মুহূর্তে সঙ্গ দেওয়া একদমই বন্ধ। সম্পূর্ণ এককভাবে পরিবারের সঙ্গে একঘেয়েমি সময় কাটাতে কাটাতে অনেকেই হাঁপিয়ে উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। বাড়ছে মানসিক দুশ্চিন্তাও।
তবে সেই দুশ্চিন্তা লাঘবেরও একাধিক উপায় অবশ্যই আছে। এরকমই একটি উপায়ে যদি বলা হয়, প্রকৃতির সংস্পর্শে একান্তভাবে থাকতে হবে ২০-৩০ মিনিট, দুশ্চিন্তা ম্যাজিকের মতো গায়েব হয়ে যাবে সাময়িকভাবে, তাহলে কেমন হয়। হ্যাঁ, দুশ্চিন্তা লাঘব করার এই রকমই একটি গবেষণার কথা উঠে এল গুড নিউজ নেটওয়ার্ক-এ।
সেখানে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিনের যে কোনও সময়ে মাত্র ২০-৩০ মিনিট একান্তভাবে সঙ্গ দিতে হবে প্রকৃতিকে। অর্থাৎ এখানে প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকতে বলা হচ্ছে সারা দিন থেকে মাত্র ২০ বা ৩০ মিনিট সময় বের করে। ওই সময়টুকু প্রকৃতি ছাড়া আর কারও সংস্পর্শে আসা চলবে না। তাহলেই ম্যাজিকের মতো সাময়িকভাবে উধাও হয়ে যাবে মানসিক দুশ্চিন্তা। যদিও ওই গবেষণাটি করা হয়েছিল ২০১৯ সাল নাগাদ।
প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা গিয়েছে, প্রকৃতির সঙ্গে এই রকম সময় দেওয়াকে গবেষকরা ‘নেচার পিল’ নাম দিয়েছেন। গবেষণা হয়েছে ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান-এ। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রকৃতির সঙ্গে একান্তভাবে কমপক্ষে ২০ মিনিট কাটালে দুশ্চিন্তা বাড়ানোর হরমোন অর্থাৎ ‘কর্টিসল’ কম উৎপন্ন হতে শুরু করে। যদি তার থেকেও বেশি সময় ধরে কেউ প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকতে পারে, তাহলে হরমোন নিঃসৃতের পরিমাণ সর্বনিম্নে পৌঁছতে পারে।
গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারীকে। তাদের ওপর ৮ সপ্তাহ গবেষণা চালানো হয়। প্রতি সপ্তাহে ৩ দিন করে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে তাদের একান্তভাবে প্রকৃতির সংস্পর্শে রাখা হয় এবং ২ সপ্তাহ অন্তর পরীক্ষা করা হয় ‘কর্টিসল’ হরমোন। প্রকৃতির সংস্পর্শে আসার আগে ও পরে ওই পরীক্ষা করা হয়।
এক্ষেত্রে গবেষকরা দাবি করছেন, তাঁদের গবেষণায় সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন শহরে বসবাসকারীরা। কারণ সবসময় চার দেওয়ালে বন্দি থাকা অবস্থায় তাঁদের মধ্যেই দুশ্চিন্তা জন্ম নেয় সবচেয়ে বেশি। তাঁরা দিনের যে কোনও সময়ে যদি ফাঁকা বারান্দা বা ছাদের ওপর প্রকৃতির সংস্পর্শে একান্তভাবে ২০-৩০ মিনিট সময় কাটাতে পারেন, তাহলে কিছুটা হলেও সাময়িকভাবে কমতে পারে দুশ্চিন্তা।
বিশেষ এই গবেষণা লকডাউনের সময়েও দারুণভাবে কাজে লাগতে পরে বলে মনে করছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। তাঁদের কথায়, অন্য কিছু না হোক বন্দি জীবনে দুশ্চিন্তা থেকে বিনামূল্যে সাময়িক মুক্তি মিললে ক্ষতি কি!
Advertisement