বীরভূম জেলার বেশকিছু জায়গায় ১৪ নভেম্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘চাঁচা নেহেরু’-র জন্মদিন পালন করতে দেখা গেল শিশুদের নিয়ে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগে। সেরকমভাবেই এদিন শিশু দিবসের আয়োজন করল এই জেলার সিউড়ি শহরের ‘স্নেহ’ সংস্থা। যদিও সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটির উদ্যোগ নিয়েছিল ‘কাজরী’ নামের অন্য আর একটি সাংস্কৃতিক সংস্থা। এদিনের অনুষ্ঠান ছিল মূলত সচেতনতামূলক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি |

সুজয় ঘোষাল : ১৯৬৪ সালের আগে ভারতে ২০ নভেম্বর শিশু দিবস পালন করা হত। কিন্তু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর পর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে এবং শিশুদের প্রতি তাঁর অবদানকে স্মরণ করতে প্রতি বছর ভারতে ১৪ নভেম্বর শিশু দিবস পালন করা হয়। এবছর করোনা আবহে সমস্ত শিক্ষাক্ষেত্র বন্ধ থাকার জন্য কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই তেমনভাবে শিশু দিবস পালন করা হয়নি। বেশ কিছু স্কুল আবার অনলাইনেই শিশু দিবস পালন করেছে। সেক্ষেত্রে চিরাচরিত উৎসবের সেই পূর্বের মেজাজ অনেকটাই উহ্য থেকে গিয়েছে কচিকাঁচারাদের কাছে।
তবে বীরভূম জেলার বেশকিছু জায়গায় ১৪ নভেম্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘চাঁচা নেহেরু’-র জন্মদিন পালন করতে দেখা গেল শিশুদের নিয়ে কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগে। সেরকমভাবেই এদিন শিশু দিবসের আয়োজন করল এই জেলার সিউড়ি শহরের ‘স্নেহ’ সংস্থা। যদিও সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটির উদ্যোগ নিয়েছিল ‘কাজরী’ নামের অন্য আর একটি সাংস্কৃতিক সংস্থা। এই দুই সংস্থার যৌথ পরিকল্পনায় পানুরিয়া বিশ্রাম তলা মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে এদিন সকাল ১০টা নাগাদ অংশগ্রহণ করতে দেখা গেল সমাজে পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর শ্রেণীর একদল শিশুর।
এদিনের অনুষ্ঠান ছিল মূলত সচেতনতামূলক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক। এই আনুষ্ঠানে শিশুদের নৃত্য, কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, সংগীত পরিবেশন করতে দেখা গিয়েছে। উপস্থিত ছিলেন সদাইপুর থানার সেকেন্ড অফিসার উজ্জ্বল দাস, চাইল্ডলাইনের সদস্য সোমা সিংহ সহ জেলা আইনি কমিশন, জেলা শিশু শ্রম দপ্তরের একাধিক সদস্য। ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন এলাকার বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষও।
বলা বাহুল্য, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার জন্য এদিনের অনুষ্ঠানে ‘কাজরী’ সংস্থার প্রধান পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক উজ্জ্বল রায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তিনি নিজের পেনশনের টাকায় দীর্ঘদিন অনগ্রসর শিশুদের নাচ, গান ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক বিষয়ক শিক্ষার সম্পূর্ণ খরচ বহন করে আসছেন।
‘স্নেহ’ সংস্থার কর্ণধার শ্রীকান্ত ঘোষ জানালেন, “করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে সম্পন্ন করা হয়েছে এদিনের শিশু দিবসের অনুষ্ঠানটি। শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।”