পাথরকুচি গ্রামের একই পাড়ায় আজও হয়ে চলেছে পরপর সাতটি দুর্গার আরাধনা

Advertisement
যদি গ্রাম-বাংলার বৈচিত্র্যময় দুর্গোৎসবের প্রসঙ্গে আলোচনা করতে হয়, তবে উদাহরণ হিসাবে বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের পাথরকুচি গ্রামের দুর্গোৎসবের কথা অবশ্যই বলতে হবে। কারণ এই গ্রামের একই পাড়াতে একই সারিতে পর পর সাত সাতখানা দুর্গা পুজো হয়ে চলেছে বছরের বছর ধরে। এ যেন বড্ড বেশি ব্যতিক্রমী আর অনন্যা দৃষ্টান্ত। এই সাতটি পুজোর চারটি-ই হয়ে আসছে কবিরাজ বাড়িতে, দুটি মন্ডল বাড়ি ও বাকি একটি মেহতরি পরিবারে।

পাথরকুচি গ্রামের একই পাড়ায় আজও হয়ে চলেছে পরপর সাতটি দুর্গার আরাধনা
Image by Tanuj Handa from Pixabay

বিজয় ঘোষাল : বৈচিত্র্যে ভরা রাঢ বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে আরও অনেক বৈচিত্র্যময় উৎসব। তার থেকে বাদ যায় না দুর্গোৎসবও। শহর বা শহরাঞ্চলে এখন বিষয় ভিত্তিক থিম পুজোর রমরমা চলছে। গ্রাম-বাংলার বারোয়ারী বা সার্বজনীন পুজোগুলিতেও বিভিন্ন বিষয়কে টেনে আনা হচ্ছে। যদিও কিছু অঞ্চলের পুজোয় রয়েছে আলাদা বৈচিত্র্য, স্বতন্ত্রতা ও ইতিহাসের পুরাতন সব সাক্ষ্য।

যদি গ্রাম-বাংলার বৈচিত্র্যময় দুর্গোৎসবের প্রসঙ্গে আলোচনা করতে হয়, তবে উদাহরণ হিসাবে বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের পাথরকুচি গ্রামের দুর্গোৎসবের কথা অবশ্যই বলতে হবে। কারণ এই গ্রামের একই পাড়াতে একই সারিতে পর পর সাত সাতখানা দুর্গা পুজো হয়ে চলেছে বছরের বছর ধরে। এ যেন বড্ড বেশি ব্যতিক্রমী আর অনন্যা দৃষ্টান্ত। এই সাতটি পুজোর চারটি-ই হয়ে আসছে কবিরাজ বাড়িতে, দুটি মন্ডল বাড়ি ও বাকি একটি মেহতরি পরিবারে।

অবশ্য অনেক আগে একটি পুজো-ই হতে দেখা যেত এই গ্রামে। আর সেটি হতো কবিরাজ বাড়িতে। পড়ে কবিরাজ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য ও বিরোধ দেখা দিলে পরিবারের সদস্যরা বিভক্ত হয়ে আলাদাভাবে পুজো করতে শুরু করেন। এইভাবে ক্রমশ এক থেকে দুই, পরে সাতটিতে পরিণত হয় দুর্গা পুজো।

পাথরকুচি গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা গুরুদাস মেহতরি জানালেন, গ্রামের কবিরাজ বাড়ির পুজো প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ বছরের পুরনো। এই পুজোর প্রচলন ঘটিয়েছিলেন এই গ্রামেরই এক মাতৃসাধক গদাধর কবিরাজ। তবে ‘মন্ডল’-রা এই গ্রামের বাসিন্দা ছিল না। পরে পাথরকুচি গ্রামে বসতি স্থাপন করে। কবিরাজ বাড়ির পুজো দেখে তারও উৎসাহিত হয়ে শুরু করে মাতৃ আরাধনা।

সপ্তমীর দিন সাতটি পরিবার একই সঙ্গে গ্রামের হিংলো নদীতে ঘট ভরে ও নবপত্রিকার স্নান সারে। অষ্টমীতে প্রতিটি পুজো মণ্ডপে ছাগ বলি দেওয়া হয়। তবে এই অষ্টমীতেই একমাত্র মন্ডল বাড়িতেই হয়ে থাকে কুমারীপুজো। দশমীতে একমাত্র আদি কবিরাজ বাড়ির দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। আর বাকি ছয়টি প্রতিমার বিসর্জন হয় পরের দিন অর্থাৎ একাদশীতে।

Advertisement
Previous articleজৌলুস হারালেও কালিকাপুর জমিদার বাড়ির দুর্গা পুজো আজও ব্যতিক্রমী
Next articleডোমাইপুরের পটের দুর্গা প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here