Advertisement
ভবিষ্যতে করোনার মতো মহামারী থেকে রক্ষা পেতে এখন থেকেই মানুষকে পরিবেশ বিষয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। কারণ করোনা-ই শেষ মহামারী নয়। শুধুমাত্র জুনটিক রোগের কারণে প্রতি বছর পৃথিবীতে ২০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। যাদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত দেশগুলিতে ঘটে। – ছবি : সংগৃহীত
|
অনলাইন পেপার : গত বছরের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত করোনার দাপট অব্যাহত। বলতে গেলে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণে করোনা তার লাগাম ছাড়া সংক্রমণ ঘটিয়ে চলেছে। এর শেষ কোথায় তা কেউই সঠিকভাবে বলতে পারছেন না অথবা অনুমানও করতে পারছেন না। তবে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, করোনা যতদিন না নিজে থেকে দুর্বল হয়ে পড়ছে অথবা উপযুক্ত ভ্যাকসিন আবিস্কার হচ্ছে, ততদিন এর কবল থেকে খুব সহজে রেহায় মিলবে না।
তবে করোনা-ই কী শেষ মহামারী? বোধহয় নয়। কারণ করোনার মতো মহামারী পূর্বে এই বিশ্বে আগেও হয়েছে। আর ভবিষ্যতেও হতে পারে। অন্তত যতদিন না পৃথিবীর মানুষ পরিবেশ সম্পর্কে আরও সচেতন হয়ে না উঠতে পারছে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই বলে সতর্ক করেছেন যে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ রক্ষা করতে না পারলে ভবিষ্যতে এই প্রকারের রোগ আরও হতে পারে।
আসলে করোনা একটি জুনটিক রোগ। জুনটিক রোগ বলতে বোঝায়, যে সমস্ত রোগগুলি অন্য প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসে। করোনা এক্ষেত্রে কোনও না কোনওভাবে অন্য প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এসেছে (যদিও কি সেই প্রাণী তা আজও সঠিকভাবে জানতে পারা যায়নি)। শুধু করোনা নয়, ইবোলা, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস-কেও জুনটিক রোগ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই সমস্ত রোগগুলি অন্য প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে আসার অনেকগুলি কারণ রয়েছে। তাঁদের মতে, বন্যপ্রাণীর ব্যবহার, প্রাকৃতিক সম্পদ গ্রহণ, জমির ক্ষতিসাধন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই রোগগুলি সবচেয়ে বেশি মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার, এই সবগুলির ক্ষেত্রেই মানুষ নিজে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতভাবে যুক্ত থাকছে।
জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব ও পরিবেশ কর্মসূচির প্রধান নির্বাহী ইঙ্গার এন্ডারসেন জানাচ্ছেন, প্রতি বছর শুধুমাত্র জুনটিক রোগের কারণে (বোভাইন যক্ষ্মা, জলাতঙ্ক, অ্যানথ্রাক্স) নিম্ন ও মধ্যবিত্ত দেশগুলিতে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটে। তাঁর মতে, মানুষ বিভিন্ন কারণে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করছে। মানুষ কৃষিকাজের ক্ষেত্র বাড়াচ্ছে, বনাঞ্চলকে নষ্ট করে সম্পদ গ্রহণ করছে। গত ৫০ বছরে মানুষ মাংসের উৎপাদন বাড়িয়েছে প্রায় ২৬০ শতাংশ।
ইঙ্গার এন্ডারসেন আরও জানাচ্ছেন, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে জুনটিক রোগ আরও বাড়তে থাকবে। তাই তাঁর পরামর্শ, পরিকল্পিতভাবে জমি ব্যবহার করতে হবে, জীব বৈচিত্র্য বাড়াতে হবে। সর্বোপরি প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করতে মানুষকে আরও বেশি যত্নবান হতে হবে।
Advertisement