পটলপুর ক্রমশ পরিণত হচ্ছে বীরভূমের একটি লুপ্তপ্রায় গ্রামে

Advertisement
WhatsApp%2BImage%2B2019 07 21%2Bat%2B23.05.04

অরবিন্দ মালী : গ্রামটির নাম পটলপুর নামের সাথে বাংলার চলিত ভাষার অদ্ভুত মিল খুঁজে পাওয়া যায়গ্রামটি বীরভূম জেলার রাজনগর ব্লকের গাংমুড়ি-জয়পুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সিদ্ধেশ্বরী নদী যার স্রোতের সাথেই পটলপুরের বাসিন্দাদের বহু সময়, স্মৃতি, অভিজ্ঞতা বয়ে গিয়েছে যুগের পর যুগপাহাড়, জঙ্গল, নদী মিলিয়ে রোমাঞ্চের কোনও শেষ নেই এই গ্রামের
     তবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি এই পটলপুরের অধিবাসীরা। তাঁদের জীবনযাত্রার মূল অন্তরাল এই সিদ্ধেশ্বরী নদী মূল ভূ-ভাগের সাথে পটলপুরকে বিচ্ছিন্ন করেছে। শোনা যায় প্রায় ২০০ বছর আগে ঠাকুর দাস নামের এক জনৈক ব্যক্তি এই গ্রামের পত্তন করেছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে জনবহুল হয়ে উঠতে থাকেএক সময় ১৫-২০টি পরিবারের বসতিও গড়ে উঠেছিলবতর্মানে কমতে কমতে মাত্র ৩টি পরিবার টিকে আছে। ওই ৩টি পরিবারের মোট ৮ জন সদস্য এখন বসবাস করছেন। যাঁদের মূল জীবিকা কৃষিকাজ। সবচেয়ে আশ্চর্যের, উনাদের মধ্যে রয়েছেন কৃষিরত্নপ্রাপ্ত উজ্জ্বল দাসও
WhatsApp%2BImage%2B2019 07 21%2Bat%2B23.05.06
     গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই দুর্গম। যাতায়াতের জন্য সিদ্ধেশ্বরী নদীর উপর কোনও ব্রিজ বা বিকল্প ব্যবস্থা নেইপানীয় জল, স্বাস্থ্য সুবিধা, শিক্ষা, হাট-বাজার এই রকম কোনও ব্যবস্থায় গ্রামের অধিবাসীদের নাগালের মধ্যে নেইএই সব সুবিধার জন্যে তাঁদের যেতে হয় কয়েক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেএছাড়াও গ্রামের লুপ্তপ্রায় অবস্থার অন্যতম কারণ বছরের পর বছর হাতির হানা, বারংবার চুরি-ডাকাতি, সরকারি সুযোগ-সুবিধার অভাব
     এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও যে ৩টি পরিবার এখনও টিকে আছে, তাঁদের কাছে টিকে থাকার রহস্য জানতে চাওয়া হলে তাঁরা জানালেন, “সবই ভিটেমাটির টানে” অর্থাৎ ভিটেমাটি ছেড়ে যাওয়াটা তাদের কাছে খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। হয়তো কোনও একদিন তাঁরাও চলে যাবেন অন্যত্র। তখন এই পটলপুর হয়ে যাবে একদম জনশূন্য। অতীতের সাক্ষী হয়ে থেকে যাবে তাঁদের ফেলে যাওয়া টুকরো স্মৃতিগুলো।

Advertisement
Previous articleডাইনোসর যুগের জীবন্ত ফসিলস্
Next article১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল পরাধীন ভারতের প্রথম লড়াই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here