নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দ্রুত ধেয়ে আসছে চিনা রকেটের অংশ, ঘটতে পারে বিপদ

Advertisement
‘লং মার্চ ৫বি’ সফলভাবে মডিউল ‘তিয়ানহে’-কে মহাশূন্যের নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপনও করতে পেরেছিল। কিন্তু নিউজপোর্টাল ‘স্পেস নিউজ’ কিছুদিন আগেই জানিয়েছে, ‘তিয়ানহে’-কে কক্ষপথে স্থাপন করার পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে রকেটটি। এই রকেটটির প্রায় ১০০ ফুট ভিতরের একটি অংশ এখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে করতে ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকেই। আর এই সপ্তাহের যেকোনও সময়ই আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীর বুকে।
হারিয়ে দ্রুত ধেয়ে আসছে চিনা রকেটের অংশ ঘটতে পারে বিপদ
Symbolic Image – Image by Wikilmages from Pixabay

অনলাইন পেপার : চিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষায় আরও একবার বিপদে পড়তে চলেছে পৃথিবীবাসী। এমনিতেই স্থল ও জলভাগে তাদের ক্ষমতা প্রদর্শন প্রায় সারা বছর ধরেই চলতে থাকে। তাদের আগ্রাসী মনোভাবের জন্য তাদের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেও বিবাদ বেঁধে থাকে প্রায় সারা বছর ধরেই। এবার অন্তরীক্ষে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে গিয়ে বিপদে ফেলে দিল গোটা পৃথিবীবাসীকে। ২৯ এপ্রিল ‘লং মার্চ ৫বি’ নামের যে রকেটটি ‘তিয়ানহে’ মডিউলকে কক্ষপথে স্থাপন করেছিল তারই ১০০ ফুটের একটি অংশ এখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে।

সম্পূর্ণ এককভাবে মহাকাশ স্টেশন বানাতে দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে চিন। সেই পরিকল্পনা ২০২২ সালের মধ্যেই শেষ করার কথা রয়েছে তাদের। মহাকাশে যে স্টেশনটি তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে তারা, তার নাম দিয়েছে ‘তিয়াংগং’। যাকে বাংলা করলে হয় ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’। এই ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’ তৈরির ১১টি অংশ বা ‘মডিউল’ ২০২২ সালের মধ্যে তারা মহাকাশে স্থাপন করতে চাই। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এই স্টেশনটি চিনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ বলেও মনে করছেন অনেক মহাকাশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।

গত ২৯ এপ্রিল চিনের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র তাদের পরিকল্পনার প্রথম মডিউলটি ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করেছিল। ‘তিয়ানহে’ নামের এই মডিউলটি তারা উৎক্ষেপণ করেছিল হাইনান প্রদেশের ওয়েনচ্যাং থেকে। মডিউলটিতে রয়েছে একজন মহাকাশচারীর বসবাস করার জায়গা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম।

‘লং মার্চ ৫বি’ সফলভাবে মডিউল ‘তিয়ানহে’-কে মহাশূন্যের নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপনও করতে পেরেছিল। কিন্তু নিউজপোর্টাল ‘স্পেস নিউজ’ কিছুদিন আগেই জানিয়েছে, ‘তিয়ানহে’-কে কক্ষপথে স্থাপন করার পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে রকেটটি। এই রকেটটির প্রায় ১০০ ফুট ভিতরের একটি অংশ এখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে করতে ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকেই। আর এই সপ্তাহের যেকোনও সময়ই আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীর বুকে। সাগর, মহাসাগর বা কোনও জনশূন্য স্থানে অংশটি পড়লে, বিপদের কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। কিন্তু জনবহুল স্থানে আছড়ে পড়লে বড়ো ধরণের যে কোনও বিপদ ঘটে যেতে পারে।

বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা সম্পূর্ণ বিষয়ের উপর কড়া নজর রাখছে। এবিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব জানিয়েছেন, তাঁরা আশা করছেন, ধ্বংসাবশেষটি সমুদ্র বা এমন কোনও জায়গায় পড়বে, তাতে কারও কোনও ক্ষতি হবে না। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, কোনও ধরণের মিশন চালানোর সময় এই বিষয়গুলির দিকে অবশ্যই নজর দেওয়া প্রয়োজন।

বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, জেসন স্কট হেরিন জানিয়েছেন, ওই ধ্বংসাবশেষটি যত পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসবে, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে তার গতিবেগ আরও বাড়তে থাকবে। এইভাবে ভূপৃষ্ঠের ৬০ কিলোমিটার উপরে ঘন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার পর ওই অংশটির অধিকাংশ অংশ পুড়ে যাবে। তবে বাকি অংশ অনিয়ন্ত্রিতভাবে আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে।

Advertisement
Previous articleকরোনা ভাইরাস : ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কেন এত ভয়ঙ্কর?
Next articleকরোনার মাঝেই নতুন বিপদ ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ : কী এই ছত্রাক?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here