‘নরকের দরজা’ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট, কিন্তু কেন?

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, হয়তো এই অঞ্চলে খুব অল্প পরিমাণেই মিথেন গ্যাস রয়েছে। তাই তাঁরা গর্তের মুখে আগুন জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের এই ধারণারও ভুল ভাঙতে সময় লেগে যায়। কারণ দশকের পর দশক ধরে ওই সময় থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলেই চলেছে গর্তের মুখ। পরে স্থানীয়রা ভয়ঙ্কর সেই অগ্নিকূপের নাম দিয়েছেন ‘নরকের দরজা’। ২০১৮ সালে তৎকালীন তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট এর আনুষ্ঠানিক নামকরণ করেন ‘শাইনিং অফ কারাকুম’।


‘নরকের দরজা’ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট, কিন্তু কেন?

অনলাইন পেপার : এবার হয়তো আর নাও দেখা যেতে পারে ‘নরকের দরজা’। যাকে নিয়ে দশকের পর দশক ধরে তৈরি হয়েছে একাধিক রহস্য আর কৌতূহল। রচিত হয়েছে বিভিন্ন গল্পকথা। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে পর্যটকের সংখ্যাও। এবার সেই রহস্যময় ‘অগ্নিকূপ’-টি হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে খুব শীঘ্রই। আর সেটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বারদিমুহামেদা।

‘নরকের দরজা’ বলতে এখানে তুর্কমেনিস্তানের আহেল প্রদেশের দরওয়াজা শহরের অন্তর্গত কারাকুম মরুভূমির একটি জ্বলন্ত অগ্নিকূপকে বলা হচ্ছে। এটি কোনও প্রাকৃতিক অগ্নিকূপ নয়। উইকিপিডিয়ার সূত্র অনুযায়ী, এটি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি করা একটি কৃত্রিম গর্ত। ১৯৭১ সাল নাগাদ প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের সময় এই স্থানটি আবিস্কার করে তারা। প্রথমে তাদের ধারণা ছিল এটি একটি তৈল ক্ষেত্র। সেই হিসাবে তারা ড্রিলিং করাও শুরু করে। কিন্তু পরে সেখান থেকে বিষাক্ত মিথেন গ্যাস বের হলে তাদের ভুল ভাঙতে থাকে। আসলে এটি একটি বিষাক্ত মিথেন গ্যাস ক্ষেত্র।

কিন্তু ততক্ষণে বিশাল এলাকা নিয়ে ওই অঞ্চলে ধস নামে। যদিও সেই দুর্ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, হয়তো এই অঞ্চলে খুব অল্প পরিমাণেই মিথেন গ্যাস রয়েছে। তাই তাঁরা গর্তের মুখে আগুন জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের এই ধারণারও ভুল ভাঙতে সময় লেগে যায়। কারণ দশকের পর দশক ধরে ওই সময় থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলেই চলেছে গর্তের মুখ। পরে স্থানীয়রা ভয়ঙ্কর সেই অগ্নিকূপের নাম দিয়েছেন ‘নরকের দরজা’। ২০১৮ সালে তৎকালীন তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট এর আনুষ্ঠানিক নামকরণ করেন ‘শাইনিং অফ কারাকুম’।

জ্বলন্ত এই গর্তটির মুখের ব্যাস প্রায় ২২৬ ফুট এবং গভীরতা ৯৮ ফুট। দশকের পর দশক ধরে এটি বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের কাছে একটি অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। তাই প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় জমে এখানে। ধূসর মরুভূমিতে তখন ক্যাম্পের ব্যবস্থাও করা হয়।

এবার এই নরকের দরজা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বারদিমুহামেদা। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এবং প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এব্যাপারে তিনি দেশের কর্মকর্তাদের নরকের দরজা বন্ধ করা বা আগুন নেভানোর উপযুক্ত পথ বের করার কথা জানিয়েছেন। যদিও এরও আগে ২০১০ সাল নাগাদ একবার এই নরকের দরজা বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন তুর্কমেনিস্তান প্রেসিডেন্ট। কিন্তু কোনও কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।

Advertisement
Previous articleআবহাওয়া : শীত কমিয়ে ফের বাংলার আকাশে মেঘের ঘনঘটা, বৃষ্টির ভ্রুকুটি
Next articleখেজুর রস কাঁচা খাচ্ছেন, ‘নিপাহ’ থেকে সাবধান থাকছেন তো?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here