নতুন স্ট্রেইন নিয়ে উদ্বেগ : নতুন কি পরিবর্তন ঘটলো করোনার?

Advertisement
যে কোনও ধরণের ভাইরাস পরিবেশে টিকে থাকতে নিজেদের ক্রমাগত জিন ঘটিত পরিবর্তন ঘটায়। কিছু ভাইরাসের খুব দ্রুত পরিবর্তন ঘটে, আবার কিছু ভাইরাস নিজেদের ঢিলে-তালে পরিবর্তন করে। করোনার কোভিড-১৯ ভাইরাসটি যে খুব দ্রুত নিজেদের বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, তা অনেক আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন গবেষকেরা। তাই করোনার এই নতুন স্ট্রেইন-এর আবির্ভাব নিয়ে তেমন অবাকও নন তাঁরা। তবে উদ্বেগ অবশ্যই প্রকাশ করছেন। কারণ এই নতুন ধরণের করোনা আগের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক।

নতুন স্ট্রেইন নিয়ে উদ্বেগ : নতুন কি পরিবর্তন ঘটলো করোনার?
Image by enriquelozgarre from Pixabay

অনলাইন পেপার : গত বছরের এই ডিসেম্বর মাসেই প্রথম সামনে এসেছিল করোনা। মূলত চিন থেকেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল এই ভাইরাসটি। যা এখন সমগ্র পৃথিবীকেই প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে এটি। এই মারণ ভাইরাসে এখনও পর্যন্ত সারা পৃথিবীর প্রায় ৭ কোটি ৮৫ লক্ষেরও বেশি জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে মারা গিয়েছে প্রায় ১৭ লক্ষ ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সেসময়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটি নিয়ে গবেষণাও চলছিল পাল্লা দিয়ে। ক্রমে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনও আবিষ্কার হয়েছে দ্রুত। তার মধ্যে কয়েকটি ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালও শেষ হয়ে গিয়েছে সম্প্রতি। এখন প্রয়োগ করার অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলি।

এরই মধ্যে এবার নতুন উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে করোনার নতুন স্ট্রেইন-টি, অর্থাৎ পরিবর্তিত নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাস। যা ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কে। গবেষণায় জানা গিয়েছে করোনার এই নতুন স্ট্রেইন আগের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক।

যে কোনও ধরণের ভাইরাস পরিবেশে টিকে থাকতে নিজেদের ক্রমাগত জিন ঘটিত পরিবর্তন ঘটায়। কিছু ভাইরাসের খুব দ্রুত পরিবর্তন ঘটে, আবার কিছু ভাইরাস নিজেদের ঢিলে-তালে পরিবর্তন করে। করোনার কোভিড-১৯ ভাইরাসটি যে খুব দ্রুত নিজেদের বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, তা অনেক আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন গবেষকেরা। তাই করোনার এই নতুন স্ট্রেইন-এর আবির্ভাব নিয়ে তেমন অবাকও নন তাঁরা। তবে উদ্বেগ অবশ্যই প্রকাশ করছেন। কারণ এই নতুন ধরণের করোনা আগের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক।

বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, এই নতুন স্ট্রেইন-এ মূলত ১৭ ধরণের পরিবর্তন ঘটেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। যার মধ্যে অন্যতম হল স্পাইক প্রোটিনের পরিবর্তন। ভাইরাসটি মূলত এই স্পাইকের মাধ্যমেই শরীরে প্রবেশ করে থাকে। এই রূপান্তরটি ঘটেছে স্পাইকের রিসেপ্টর-বাইন্ডিং ডোমেইন অঞ্চলে। ভাইরাসটির এই অভিযোজনের ফলে এটি আগের চেয়ে অনেক দ্রুত শরীরে প্রবেশ করতে পারছে।

আরও একটি পরিবর্তনের কথা গবেষকেরা জানিয়েছেন। আর সেটিও ঘটেছে স্পাইকেই। এক্ষেত্রে স্পাইকের এইচ৬৯/ভি৭০ অঞ্চল বিলুপ্ত গিয়েছে। ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই বিলুপ্ত হওয়াটা এমন কিছু অমূলক নয়। তবে করোনার ক্ষেত্রে এই নতুন পরিবর্তন বেশ উদ্বেগের। কারণ এইচ৬৯/ভি৭০ অঞ্চল বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় সংক্রমণের হার আরও দ্রুতগামী হয়েছে। গবেষকদের ধারণা এই হার প্রায় দ্বিগুণ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। এই পরিবর্তনে আরও একটি আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন গবেষকেরা, এই নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রোগী সেরে উঠলে তাঁর শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির ক্ষমতা অনেক দুর্বল হয়ে পড়ছে।

কীভাবে এই পরিবর্তন ঘটল? বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের ওই সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, গবেষকেরা জানিয়েছে, এই পরিবর্তন ঘটেছে শরীরের মধ্যেই। এমন কোনও শরীরে পরিবর্তন ঘটেছে, যেটি এই পরিবর্তন ঘটার একেবারেই উপযুক্ত পরিবেশ ছিল। ওই শরীরে ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করার মতো কোনও প্রতিরোধী ব্যবস্থায় ছিল না।

তবে নতুন আবিস্কৃত ভ্যাকসিনগুলি এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যগত দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে ঠিকই, কিন্তু নতুন আবিস্কৃত ভ্যাকসিনে কার্যকর হবে না, এমন কোনও পরিবর্তন এখনও ঘটেনি। তাছাড়া কার্যক্ষেত্রে ভ্যাকসিনগুলিরও পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।

Advertisement
Previous articleবৃহস্পতি ও শনির যুগলবন্দী দেখতে ভিড় বোলপুরে
Next article‘বক্সিং ডে টেস্ট’-এর সঙ্গে কিন্তু মুষ্টিযুদ্ধের কোনও সম্পর্ক নেই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here