নওয়াপাড়ায় দেবী লক্ষ্মী-র সঙ্গে পুজো দেওয়া হয় নারায়ন ও শিব-কে

Advertisement
এখানে লক্ষ্মী পুজোর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দেবী লক্ষ্মী-কে এখানে একা নয়, তার সঙ্গে পুজো দেওয়া হয় নারায়ণ, নারায়ণের বাহন গরুড় পাখি ও শিব-কে। একচালির কাঠামোর ওপর এই প্রতিমা নির্মাণ করা হয়। প্রতিমায় সাবেকিআনা রয়েছে ষোলোআনা। বর্তমানে সাহা পরিবারের এই লক্ষ্মী পুজোর শরিক ৭ জন। পুজো উপলক্ষে বাড়ির মেয়েরা এদিন মন্দির প্রাঙ্গণকে অদ্ভুত আলপনায় সাজিয়ে তোলেন।
নওয়াপাড়ায় দেবী লক্ষ্মী-র সঙ্গে পুজো দেওয়া হয় নারায়ন ও শিব-কে

বিজয় ঘোষাল : তিথি অনুযায়ী বিজয়া দশমীর পাঁচ দিন পরই হয়ে থাকে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। এবছর যেহেতু ১৯ ও ২০ অক্টোবর দুই দিনই পূর্ণিমা, তাই লক্ষ্মী পুজো ওই দুই দিন ধরেই চলবে। হিন্দু বিশ্বাসে মা লক্ষ্মী ধন-সম্পদের দেবী। এদিন গ্রাম-বাংলার প্রায় প্রতিটি ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়ে থাকে। তবে বীরভূম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে নারায়ণ, শিব ও গরুড়-এরও আরাধনা করার প্রথা রয়েছে।

সাঁইথিয়া ব্লকের অন্তর্গত নওয়াপাড়া গ্রাম আমোদপুর থেকে মাত্র ৩ কিমি দূরে। গ্রামটির সাহা পরিবার এইভাবেই লক্ষ্মী পুজো করে আসছে বছরের পর বছর ধরে। পরিবারের অন্যতম সদস্য তপন কুমার সাহা জানালেন, ৪০-৫০ বছর আগে তাঁর বাবা সুধীর কুমার সাহা চাষাবাদের উন্নতির জন্য নওয়াপাড়া গ্রামে এই পুজো শুরু করেছিলেন।

তপন বাবু আরও জানালেন, তাঁর বাবা পূর্বে নওয়াপাড়ার পার্শ্ববর্তী গ্রাম চিরুলিয়ার লক্ষ্মী পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বহুদিন। তবে কোনও কারণে পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ হওয়ায় নিজ গ্রামে সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে লক্ষ্মী পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই থেকে আজও এই পুজো হয়ে চলেছে।

তবে এখানে লক্ষ্মী পুজোর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দেবী লক্ষ্মী-কে এখানে একা নয়, তার সঙ্গে পুজো দেওয়া হয় নারায়ণ, নারায়ণের বাহন গরুড় পাখি ও শিব-কে। একচালির কাঠামোর ওপর এই প্রতিমা নির্মাণ করা হয়। প্রতিমায় সাবেকিআনা রয়েছে ষোলোআনা।

বর্তমানে সাহা পরিবারের এই লক্ষ্মী পুজোর শরিক ৭ জন। পুজো উপলক্ষে বাড়ির মেয়েরা এদিন মন্দির প্রাঙ্গণকে অদ্ভুত আলপনায় সাজিয়ে তোলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেল, এখানে লক্ষ্মী পুজো চলে চার দিন ধরে। পুজোর দিনগুলিতে বিভিন্ন রকমের ফল, লুচি, মিষ্টান্ন সহ আমান্ন দেবী লক্ষ্মীকে ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়।

আগে মাটির একচালা ঘরে এই পুজোর আয়োজন করা হলেও বর্তমানে পুজো হয়ে থাকে একটি স্থায়ী কংক্রিটের মন্দিরে। পুজোর চারদিন ধরেই চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গ্রামবাসীদের বিনোদনের জন্য অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বাউল গান, কবিগান, কীর্তনগান সহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেল, নওয়াপাড়ার অধিকাংশই চাষি পরিবার। তাই এখানে প্রায় প্রতিটি ঘরেই লক্ষ্মী পুজো করা হয় ‘ঘট’ পেতে। একমাত্র সাহা পরিবারই এখানে মূর্তি গড়ে লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করে থাকে। আর এই পুজো ঘিরে গ্রামবাসীদেরও উদ্দীপনার কোনও শেষ থাকে না।

Advertisement
Previous articleএবছর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ৯ দেশের ১৩ জনকে
Next articleশোলা শিল্প-কে সামনে রেখেই একান্তে পথ চলছেন হীরক চিত্রকর (ভিডিও সহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here