এব্যাপারে প্রমাণ হিসাবে তারা উল্লেখ করেছে, তীব্র জল সঙ্কটের সময়ে মানুষ ও পশুদের একত্র জল পানের বিষয়কে। তারা উল্লেখ করেছে, ওই সমস্ত দেশে গত বছর তীব্র দাবদাহ চলাকালে যখন জল সংকট চলছিল, বন্য পশু বিশেষ করে বানর শ্রেণীর প্রাণীরা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে মানুষও সেই একই উৎসের জল পান করার সময় ওই সমস্ত বন্য পশুদের সংস্পর্শে চলে আসে। ভাইরাসের উৎস সন্ধানে ওই চিনা গবেষকেরা ফাইলোজেনেটিক বিশ্লেষণ পদ্ধতিও ব্যবহার করেছিল। |

অনলাইন পেপার : গত বছর ডিসেম্বরের শেষ থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল মারণ ভাইরাস করোনা। যা এখন সমগ্র বিশ্বকেই প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে। আর এই ভাইরাসের হাতে এখনও পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ৫৪ হাজারেরও বেশি মানুষের। ভাইরাসটির উৎপত্তি স্থল যে চিন, তা এখন আর জানতে প্রায় কারওই বাকি নেই। ভাইরাসের উৎস সন্ধানে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছিল, ভাইরাসটি প্রথম মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেদেশের উহান প্রদেশের একটি পশু বিক্রয়ের বাজার থেকে। যদিও ভাইরাসটির সঠিক উৎসস্থল কোথায়, তা আজও রহস্যের অন্ধকারে রয়ে গিয়েছে। সে সময় কিছু বিশেষজ্ঞ দাবি করেছিলেন, চিনের কোনও গোপন গবেষণাগারে তৈরি হয়েছিল এই ভাইরাসটি। যদিও এরও কোনও নির্ভরযোগ্য ও সঠিক প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
বিশ্ব জুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রাথমিক পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ আরও কতকগুলি দেশ চিনে যেতে চেয়েছিল ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে তদন্ত করতে। কিন্তু সেসময়ে চিন কোনওভাবেই তাদের নিজেদের দেশে তদন্তের উদ্দেশ্য নিয়ে বাইরের কোনও দেশকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি (তবে বর্তমানে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে)।
ভাইরাসটির উৎস ও তার গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে চিন বিভিন্ন সময়ে একাধিক বিবৃতি দিয়েছে এর আগে। সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রে চিনের একদল গবেষক ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে আরও একবার তাদের মতো করেই বিবৃতি দিল। যদিও তাদের প্রকাশিত সেই গবেষণাপত্রটি দ্রুত প্রত্যাখ্যানও করেছেন অন্য বিশেষজ্ঞরা।
চিনের গবেষকদের সেই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে চিকিৎসা সম্পর্কিত সাময়িকী ‘ল্যানচেট’-এ। সেখানে তারা দাবি করেছে, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি স্থল আসলে চিন নয়, বাইরের কোনও দেশ। উৎসস্থল সম্পর্কে তারা ভারত, বাংলাদেশ সহ রাশিয়া, সার্বিয়া, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রীসের দিকে আঙুল তুলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
এব্যাপারে প্রমাণ হিসাবে তারা উল্লেখ করেছে, তীব্র জল সঙ্কটের সময়ে মানুষ ও পশুদের একত্র জল পানের বিষয়কে। তারা উল্লেখ করেছে, ওই সমস্ত দেশে গত বছর তীব্র দাবদাহ চলাকালে যখন জল সংকট চলছিল, বন্য পশু বিশেষ করে বানর শ্রেণীর প্রাণীরা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে মানুষও সেই একই উৎসের জল পান করার সময় ওই সমস্ত বন্য পশুদের সংস্পর্শে চলে আসে। ভাইরাসের উৎস সন্ধানে ওই চিনা গবেষকেরা ফাইলোজেনেটিক বিশ্লেষণ পদ্ধতিও ব্যবহার করেছিল।
যদিও অন্য বিশেষজ্ঞরা চিনের এই সমস্ত দাবি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। একাধিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চিনের ওই গবেষণাপত্রটি বিভিন্ন দিক থেকে ভুলে ভরা। ইচ্ছাকৃতভাবে ওই গবেষণাপত্রটিতে ভাইরাসটির বিস্তৃতি সম্পর্কিত বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়নি। যা একটি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে মাত্র। এছাড়া গবেষণাপত্রটি এমনভাবে লেখা হয়েছে, যা উৎসস্থল সম্পর্কে চিনকে সম্পূর্ণভাবে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে।