দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাঠ পড়েও দূষণ সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে কতজন?

Advertisement
As2
সজয় পাল : সম্প্রতি নেচার জার্নাল’-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, সমগ্র বিশ্ব জুড়ে ৩.৪৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ প্রতি বছর অকালে মারা যাচ্ছে শুধুমাত্রদূষণ ঘটিত কারণে। এই দূষণ জল, বায়ু বা শব্দ যে কোনও প্রকৃতিরই হতে পারে। আর সবচেয়ে ভয়ের কারণ, এই সব দূষণের নির্দিষ্ট কোনও সীমারেখা নেইঅর্থাৎ যে কোনও সময়ে, যে কোনও স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
     প্রচণ্ড দূষণযুক্ত এলাকার বাইরে বসবাস করলেই কি প্রকৃত দূষণমুক্ত হওয়া যায়? উত্তর অবশ্যই ‘না’।কারণ যে কোনও ধরণের দূষণ সব সময়ই স্থান পরিবর্তন করতে সক্ষমঅর্থাৎ নিজের বাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখলেও পাশের অপরিচ্ছন্ন বাড়ি থেকে দূষণ ছড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তুলনামূলক কম দূষণ ঘটিত স্থানেও দূষণ জনিত কারণে মৃত্যুর হার বছরে প্রায় ১২ শতাংশ।
     মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া সম্পূর্ণ মানব বিহীন। অর্থাৎ কৃত্রিম দূষণ না ঘটারই কথা। কিন্তু সাম্প্রতিককালের এভারেস্ট বিজয়ীরা চূড়া স্পর্শ করে ফিরে এসে জানিয়েছেন, সেখানেও পর্বতারোহীদের ফেলে আসা অপ্রয়োজনীয় জিনিষের স্তূপ জমে গিয়েছে। যা প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কখনওই নষ্ট হবার নয়। পৃথিবীর কথা ছেড়েই দেওয়া যাক। মহাকাশও কি দূষণ যুক্ত নয়? অকেজো বা নষ্ট হয়ে যাওয়া স্যাটেলাইটগুলিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিলেও, তার অংশ বিশেষ মহাশূন্যেই থেকে যায়। এও এক ধরণের দূষণ। তাই প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর কোনও স্থানই আজ আর দূষণমুক্ত নয়সে যে কোনও স্থানই হতে পারে।
     বর্তমান বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলিতেই সবচেয়ে বেশি দূষণ তৈরি হচ্ছে। এইসব দেশগুলি কার্বনযুক্ত কয়লা বা পেট্রোল জাতীয় জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করে অত্যন্ত ক্ষতি করছে পরিবেশের বায়ু বা জলের। যদিও এই দেশগুলি দূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা সরূপ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা প্রচার করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কতখানি সফল হতে পারছে তার উত্তর মিলছে না
     আমাদের দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় প্রতিটা বিজ্ঞান বইয়েই দূষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়এমনকি সাহিত্যপুস্তকের সূচীতেও এই বিষয়ের উপর বড়ো বড়ো কয়েকটি রচনাও রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যে বেশ আগ্রহ নিয়ে এই পাঠগুলি গ্রহণ করে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু স্কুলের গণ্ডি টপকিয়ে সে যখন আরও বড়ো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় অতিক্রম করে কর্মজীবনে পা রাখে, দূষণ সম্পর্কিত সেই সব স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যসূচীর গুরুত্বপূর্ণ পাঠগুলি আদৌ কি মনে রাখে?
Advertisement
Previous article‘বয়স তুমি থেমে যাও’, বলছে নতুন গবেষণা
Next articleতারাপীঠ মন্দিরের ‘পুষ্পবর্জ্য’-এ কেঁচোসার তৈরি হচ্ছে মল্লারপুরে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here