দুঃস্থদের বস্ত্রবিতরণ ও যাত্রাশিল্পীদের সাহায্য প্রদান বীরভূমের পাহাড়পুরে

Advertisement
তবে এখানেই শেষ নয়। এদিন আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘পাহাড়পুর নাট্যভারতী’। সেখানে তাঁরা বীরভূমের একঝাঁক স্বনামধন্য যাত্রা অভিনেত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছেন সামান্য কিছু সাহায্য। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে ‘যাত্রাশিল্পকলা’। একসময়ে শহর বা গ্রামাঞ্চলের অলি-গলি মাতিয়ে রাখতেন এই যাত্রাপালার শিল্পীরা। আজ সেসব যেন প্রায় অতীত।
দুঃস্থদের বস্ত্রবিতরণ ও যাত্রাশিল্পীদের সাহায্য প্রদান বীরভূমের পাহাড়পুরে

সুজয় ঘোষাল : দুর্গোৎসব শুরু হতে আর এক মাসও দেরি নেই। মেঘরঙা কাশফুল আর ভোরের ঝরে যাওয়া শিউলি যেন প্রতিদিনই একথা জানিয়ে দিচ্ছে বাঙালিদের। আর এদিকে ইতিমধ্যেই পুজোকে কেন্দ্র করে শহর বা গ্রামে বাঙালিদের নতুন পোশাক কেনার পর্বও শুরু হয়ে গিয়েছে। করোনা আতঙ্কের মধ্যেও রাজ্যের বস্ত্রালয়গুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়।

তবে সবার পক্ষে কি আর নতুন পোশাক কেনা সম্ভব হয়! হয়তো নয়। এমনিতেই করোনার এই আতঙ্কিত পরিবেশে এক শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষ হারিয়ে ফেলেছে তাঁদের কর্মসংস্থান। দিন আনা দিন খাওয়া ওই মানুষগুলি তাঁদের ঘরের ছোটো ছোটো সন্তানদের কিভাবে সজ্জিত করবে নতুন পোশাকে।

তাই এই অভিপ্রায়ে প্রতিবারের মতো এবারও বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া ব্লকের অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাহাড়পুর গ্রামে গত ১২ সেপ্টেম্বর দুঃস্থদের জন্য আয়োজন করা হয় পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানের। আর সেখানেই দুঃস্থ পরিবারের ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়েদের হাতে পুজোর নতুন পোশাক তুলে দিল ওই গ্রামেরই সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পাহাড়পুর নাট্যভারতী’। এদিন ৫০ জনেরও বেশি অসহায় ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা পরিবারের ছেলেমেয়েদের হাতে নতুন জামা, প্যান্ট, চকলেট তুলে দিলেন ওই নাট্যপরিবারে সদস্যরা। এদিনের অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন কবি সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায়, শিক্ষিকা সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়, উমা মিশ্র, শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সাহা, বুদ্ধদেব দেবাংশী, সমাজকর্মী চিত্তপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়, জয়দেব দেবাংশী সহ আরও অনেকে।

তবে এখানেই শেষ নয়। এদিন আরও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘পাহাড়পুর নাট্যভারতী’। সেখানে তাঁরা বীরভূমের একঝাঁক স্বনামধন্য যাত্রা অভিনেত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছেন সামান্য কিছু সাহায্য। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে ‘যাত্রাশিল্পকলা’। একসময়ে শহর বা গ্রামাঞ্চলের অলি-গলি মাতিয়ে রাখতেন এই যাত্রাপালার শিল্পীরা। আজ সেসব যেন প্রায় অতীত। তবুও যতটুকু টিকে ছিল করোনা আবহে যেন এই শিল্পীদের (যাঁরা অধিকাংশই অভিনেত্রী) অর্থনৈতিক জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে দিয়েছে।

পাহাড়পুর নাট্যভারতী বেশ কয়েক বছর ধরে এই শিল্পীদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছে। বীরভূম জেলার এই অভিনেত্রীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিপ্রা সিংহ, কুমকুম ব্যানার্জি, মীনা মন্ডল, চন্দনা দাস, সোনালী দাস, রিতা চৌধুরি, কৃষ্ণা মুখার্জি সহ আরও কয়েকজন।

কুমকুম ব্যানার্জি ও মীনা মন্ডল জানালেন, দীর্ঘদিন যাত্রাশিল্প থেকে দূরে রয়েছেন তাঁরা। তাই এদিনের অনুষ্ঠান যেন সমস্ত সহকর্মীদের আবার আগের মতো একত্রিত করে দিল। এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে।

আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে জয়দেব দেবাংশী জানালেন, ‘গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আগামীতেও এইভাবে এইরকম কর্মসূচি আমরা চালিয়ে যেতে চাই।’

Advertisement
Previous articleএবছরও ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেওয়া হল আন্তর্জাতিক ‘ইগ নোবেল’
Next article‘সৃজনী’-তে এবার আয়োজন করা হল ওড়িশার পারম্পরিক দেওয়াল চিত্র

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here