গবেষণার জন্য ১১০ জনকে বেছে নিয়েছিলেন গবেষকেরা। যাদের ৩ ভাগের ২ ভাগ উচ্চ রক্তচাপ বা দুশ্চিন্তা জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এদের প্রত্যেককে অন্তত দুই সপ্তাহ ধরে দিন প্রতি ৪টি করে ১ গ্রামের প্যারাসিটামল খেতে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী দুই সপ্তাহ তাঁদের খেতে দেওয়া হয়েছিল প্লাসিবো (এটি আসলে কোনও ওষুধই নয়)। এই গবেষণায় তাঁরা দেখেছেন, প্যারাসিটামল সেবনের কারণে সেবনকারীদের রক্তচাপ পূর্ব অপেক্ষা বেড়ে গিয়েছে।

অনলাইন পেপার : জ্বর বা মাথা ব্যথার স্বল্পমূল্যের অতি সাধারণ ওষুধ যে প্যারাসিটামল, একথা অস্বীকার করার কোনও উপায়। মহার্ঘ ও কম ক্ষতিকারক এই ওষুধ বর্তমান বাজারে যে কোনও স্থানেই পাওয়া সম্ভব। যে কোনও রকম ব্যথা বা জ্বরের চিকিৎসায় প্যারাসিটামল-কে প্রথম পছন্দের তালিকাতেই রাখেন চিকিৎসকেরা।
এমনকি চিকিৎসকেরা দীর্ঘকালীন ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রেও রোগীদের প্যারাসিটামল সেবন করতে পরামর্শ দেন। যদিও এক্ষেত্রে একাধিক গবেষকের দাবি, প্যারাসিটামল ওই দীর্ঘকালীন ব্যথা নিরাময়ে আদৌ কোনও কাজ করে কিনা এবিষয়ে কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। তারপরেও বহু যুগ ধরে জ্বর বা যে কোনও ধরণের ব্যথা নিরাময়ে চিকিৎসকদের প্রথম পছন্দ অবশ্যই এই প্যারাসিটামল।
কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণাপত্রে এই প্যারাসিটামল-কেই নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন একদল গবেষক। তাঁদের দাবি, যারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগছে, দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল সেবনে তারা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক-এর মতো ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রকমই একটি গবেষণা চালিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার একদল গবেষক। তাঁদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে সার্কুলেশন জার্নালে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত। এবিষয়ে চিকিৎসকদের নতুন করে ভাবতে বলছেন তাঁরা।
ওই গবেষণার জন্য ১১০ জনকে বেছে নিয়েছিলেন গবেষকেরা। যাদের ৩ ভাগের ২ ভাগ উচ্চ রক্তচাপ বা দুশ্চিন্তা জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এদের প্রত্যেককে অন্তত দুই সপ্তাহ ধরে দিন প্রতি ৪টি করে ১ গ্রামের প্যারাসিটামল খেতে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী দুই সপ্তাহ তাঁদের খেতে দেওয়া হয়েছিল প্লাসিবো (এটি আসলে কোনও ওষুধই নয়)। এই গবেষণায় তাঁরা দেখেছেন, প্যারাসিটামল সেবনের কারণে সেবনকারীদের রক্তচাপ পূর্ব অপেক্ষা বেড়ে গিয়েছে। যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো সমস্যার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ওই গবেষকেরা দাবি করছেন, জ্বর বা মাথা ব্যথায় অবশ্যই প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে দীর্ঘকালীন চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হতে পারে চিকিৎসকদের। যদিও গবেষকেরা আরও দাবি করছেন, তাঁদের গবেষণার ফলাফল সম্পূর্ণভাবে সঠিক কিনা, এবিষয়ে পুরোপুরি জানতে আরও বৃহৎ আকারের গবেষণার প্রয়োজন। তাঁরা এই বিষয়ে এখনও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত নন।