বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য গত এক মাস ধরে বাপ্পি লাহিড়ী আবার ভর্তি ছিলেন মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পান গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পারিবারিক চিকিৎসক পরামর্শ দেন ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে পুরনায় ভর্তি করানোর। তবে এবার আর সুস্থ হতে পারেননি তিনি। মাঝরাতেই হাসপাতালে পরলোক গমন করেন বাপ্পি লাহিড়ী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

জনদর্পণ ডেস্ক : চলতি ফেব্রুয়ারি যেন অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছে সঙ্গীত জগতের কাছে। দুই সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি চলে গিয়েছেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায় বিদায় নিয়েছেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আর তার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে হারিয়ে গেলেন ‘ডিস্কো কিং’ বাপ্পি লাহিড়ী। সেই সঙ্গে ভারতের সঙ্গীত জগত হারিয়ে ফেলল আরও এক অমর তারকা-কে।
গত বছর এপ্রিল নাগাদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। সেবার চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার জন্য গত এক মাস ধরে বাপ্পি লাহিড়ী আবার ভর্তি ছিলেন মুম্বাইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পান গত ১৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পারিবারিক চিকিৎসক পরামর্শ দেন ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে পুরনায় ভর্তি করানোর। তবে এবার আর সুস্থ হতে পারেননি তিনি। মাঝরাতেই হাসপাতালে পরলোক গমন করেন বাপ্পি লাহিড়ী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় ২৭ নভেম্বর ১৯৫২ সালে বাপ্পি লাহিড়ী জন্ম নিয়েছিলেন। প্রথম জীবনে তাঁর নাম ছিল অলোকেশ লাহিড়ী। তাঁর বাবা অপরেশ লাহিড়ী ও মা বাঁশরী লাহিড়ী দুজনেই ছিলেন সঙ্গীত জগতের সঙ্গে যুক্ত। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমারও ছিলেন তাঁর নিকট আত্মীয়। নিজের বাবা-মায়ের কাছেই বাপ্পি লাহিড়ী সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ নেন। আর অল্পদিনের মধ্যেই তিনি পদার্পণ করেন সঙ্গীত জগতে।
বাপ্পি লাহিড়ী ভারতীয় সঙ্গীত জগতে গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক হিসাবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন। বলা হয়, তিনি ছিলেন হিন্দি ডিস্কো গানের জনক। তাই ‘ডিস্কো কিং’ খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল তাঁকে।
সঙ্গীত জগতে তাঁর পদার্পণ বাংলা সিনেমা দাদু (১৯৭২)-র হাত ধরে। পরে তিনি মুম্বাই পাড়ি দেন। ১৯৭৩ সালের হিন্দি সিনেমা ‘নানহা শিকারি’-তে প্রথম হিন্দি গানের সঙ্গীত রচনার কাজ করেন। এরপর তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ডিস্কো ড্যান্সার, শরাবি, চলতে চলতে-র মতো বহু যুগান্ত সৃষ্টিকারী হিন্দি সিনেমাতে সুরকার হিসাবে কাজ করেছেন বাপ্পি লাহিড়ী। সুরকার হিসাবে কাজ করেছেন অমর সঙ্গী, আমার তুমি, অমর প্রেম-এর মতো বাংলা সিনেমাতেও। নিজের কণ্ঠে বহু হিন্দি ও বাংলা গানও গেয়েছেন তিনি। মূলত আশির দশকের সবচেয়ে জনপ্রিয় সুরকার ছিলেন এই ডিস্কো কিং বাপ্পি লাহিড়ী।