Advertisement
অনলাইন পেপার : আফ্রিকা ছাড়িয়ে ধূসর মরুভূমি পেরিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসছে পঙ্গপাল। লক্ষ্য একটাই, খাদ্য। ২০১৯ সালের শেষের দিকে তাদের আক্রমণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে আফ্রিকার কেনিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া সহ আরও বেশ কয়েকটি দেশকে। ইতিমধ্যে পাকিস্তানে আক্রমণ চালাতে শুরু করেছে তারা। তাদের আর একটি দল এবছরের প্রথম দিকেই হাজির হয়েছে ভারতের পাঞ্জাবে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, এই পঙ্গপালের দলটি প্রায় ৩ বর্গ কিলোমিটার কৃষিক্ষেত্র জুড়ে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে। যার জেরে পাঞ্জাবের পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতেও কড়া সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। তবে বঙ্গদেশে ওই পঙ্গপালের দল প্রবেশ করবে কিনা সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না, জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
সাধারণত ঘাসফড়িঙের একটি প্রজাতি হল এই পঙ্গপাল। অত্যন্ত নিরীহ গোছের এই পতঙ্গরা দল বেঁধেই কৃষিক্ষেত্রে আক্রমণ চালায়। তখন তাদের রূপ হয় অতি ভয়ঙ্কর। একটি দলে কয়েক লক্ষ থেকে কয়েক কোটি পর্যন্ত পতঙ্গ থাকতে পারে। তারা প্রধানত গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলকেই তাদের বিচরণ ভূমি হিসাবে বেছে নেয়। খাদ্যের জন্য দল বেঁধে বাতাসে ভর দিয়ে ঘুরে বেড়াতে থাকে। কোনও একটি অঞ্চলের খাদ্য পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা ওই স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকে। খাদ্য ফুরিয়ে গেলে আবার আক্রমণ চালায় নতুন কোথাও।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্র অনুযায়ী জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন জানাচ্ছে, একদল পঙ্গপাল সারাদিনে প্রায় ১২০ মাইল পর্যন্ত জমির ফসল খেয়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে। ১ বর্গকিলোমিটার আকারের পঙ্গপাল একসাথে যে খাবার খেতে পারে তা দিয়ে অনায়াসে ১ বছর ৩৫ হাজার মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব।
তাই যথেষ্ট উদ্বিগ্ন কৃষি বিজ্ঞানীরা। একবার কৃষিক্ষেত্রে তাদের দেখা মিললে ফসল রক্ষা করা খুবই মুশকিল হয়ে পড়বে। যদিও বঙ্গদেশে গত ৫৫ বছরে কোনও পঙ্গপাল আক্রমণ করেনি। কিন্তু এবার তার অন্যথা হবে কিনা তা আগাম বলতে পারছেন না তাঁরা। কারণ সেসব পুরোপুরি নির্ভর করছে পঙ্গপালের ইচ্ছা এবং পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার ওপর। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের পতঙ্গ এরা। আফ্রিকার শুষ্ক অঞ্চল এদের প্রধান বিচরণ ভূমি। তাই আবহাওয়ার শুষ্কতার ওপরেই এদের আক্রমণ সময়কাল অনেকটা নির্ভর করেছে। যদিও কিছু কৃষি বিজ্ঞানীর ধারণা, বঙ্গদেশে আক্রমণ করতে এলেও তা এই বছরে সম্ভব নয়। পঙ্গপাল পশ্চিমাঞ্চল থেকে এগিয়ে আসতে সময় নেবে আরও এক বছর।
Advertisement