চুল পেকে যাওয়ার অন্যতম কারণ মানসিক চাপ, প্রমাণ মিলল গবেষণায়

Advertisement
ch
অনলাইন পেপার : মানুষের দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণা, মানসিক চাপে মাথার চুল পেকে যায়। কার্যক্ষেত্রেও এই প্রচলিত ধারণার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এতদিন বুঝতেই পারছিলেন না, কেন এমনটি হয়? সম্প্রতি গবেষণায় প্রমাণ সহ তার উত্তর পেলন তাঁরা।
     স্বাভাবিকভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের শরীরেও কিছু পরিবর্তন আসে। সাধারণত ৩০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের মাথার চুল বা শরীরের অন্য অংশের লোম পাকতে (কালো থেকে সাদা হতে) শুরু করে। চুলের রঙ কালো হওয়ার জন্য দায়ী মেলানিন নামের এক ধরণের রঞ্জক পদার্থ। ৩০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর চুলে মেলানিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে, ফলে চুল কালো থেকে ধীরে ধীরে সাদা হয়ে যায়।
     কিন্তু সম্প্রতি গবেষণার বিষয় ছিল মানসিক চাপের প্রভাবেও চুলের রঙ সাদা হতে পারে। বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে এই বিষয়ের ওপর একটি গবেষণাপত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড ইউনিভার্সিটি এবং সাও পাওলো ইউনিভার্সিটি ২ সপ্তাহ ধরে ইঁদুরের ওপর চালানো গবেষণায় দেখেছেন, তীব্র মানসিক যন্ত্রণা দিলে ইঁদুরের সমস্ত চুল ওই ২ সপ্তাহের মধ্যে পেকে সাদা হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই পেকে যাওয়ার জন্য মেলানোসাইট স্টেম সেল সম্পূর্ণভাবে দায়ী। এই সেলগুলি সাধারণত মেলানিন গঠন করে থাকে।
     বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর দু’ভাবে এই পরীক্ষা চালিয়েছেন। প্রথম পরীক্ষায় তাঁরা ইঁদুরকে যন্ত্রণা দেওয়ার সময় লক্ষ্য করেছেন, তাদের শরীরে যে ব্যাপক পরিমাণে অ্যাড্রিনালিন ও কর্টিসল নিঃসরণ ঘটে, তাতে সাঙ্ঘাতিকভাবে রক্তচাপ বেড়ে যায়। যার ফলে ইঁদুরের নার্ভাস সিস্টেমকে প্রচণ্ডভাবে দুর্বল করে দেয়। আর এই প্রক্রিয়া দীর্ঘক্ষণ চলতে থাকলে সাইক্লিন-ডিপেন্ডেন্ট কিনাস সিডিকে প্রোটিন ক্ষতিগ্রস্ত করে মেলানোসাইট স্টেম সেলকে। আর সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেলানিন।
     অন্য পরীক্ষায় ইঁদুরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিজ্ঞানীরা তাদের শরীরে প্রয়োগ করেছিলেন অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ। ফলে সাইক্লিন-ডিপেন্ডেন্ট কিনাস সিডিকে প্রোটিন নিয়ন্ত্রিত হয়ে ইঁদুরের লোমের রঙ অপরিবর্তিত থাকে।
     এই পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর ওই বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, তাঁরা এতদিনে মানসিক চাপে চুল পেকে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা ধারণা করছেন, এবার মানুষের চুল পাকা নিয়ন্ত্রণের ওষুধও হয়তো আবিষ্কার করা সম্ভব হবে।
Advertisement
Previous articleকেন্দ্রডাঙাল স্কুলে এল ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান প্রদর্শনীর বাস
Next articleইম্প্রেশানিজম আন্দোলন ও ক্লোদ অসকার মোনে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here