চার কোটি বছর ধরে মিলনরত অবস্থায় অ্যাম্বারে আবদ্ধ রয়েছে এক জোড়া মাছি

Advertisement
গবেষকরা সম্প্রতি একটি স্ফটিক বা অ্যাম্বারের সন্ধান পেলেন অস্ট্রেলিয়ার অটওয়ে অববাহিকার গণ্ডোয়ানা সুপারকন্টিনেন্ট অঞ্চলে। এখানে প্রাচীন জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা করার সময় জীবাশ্ম বিজ্ঞানীরা এই বিশেষ অ্যাম্বারটির সন্ধান পান। অ্যাম্বারটিতে আটকে রয়েছে এক জোড়া প্রাচীন মাছি। হঠাৎ দেখলে মনে হবে, তারা যেন মিলনরত অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, আবিস্কৃত ওই নতুন জীবাশ্মটি প্রায় ৪ কোটি বছরের পুরনো। অথচ মাছি দুটি এতদিন অবিকৃতই থেকে গিয়েছে। গবেষকরা দাবি করছেন, এই মাছি দুটি ডলিকোপোডিড প্রজাতির ছিল।

চার কোটি বছর ধরে মিলনরত অবস্থায় অ্যাম্বারে আবদ্ধ রয়েছে এক জোড়া মাছি
Amber – Symbolic Image

অনলাইন পেপার : পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস জানতে জীবাশ্মের ভূমিকা অপরিসীম। লক্ষ লক্ষ বছর আগে প্রাণীদের আকার-আকৃতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে এই জীবাশ্মের জুড়ি মেলা ভার। কারণ জীবাশ্ম মানেই প্রাণীর শরীর পাথরে পরিণত হওয়া। আর সেই পাথরের গায়েই আটকে থাকে তার হুবহু অবয়ব। লক্ষ লক্ষ বছর পরে সেই ছাপ দেখেই ধারণা করে নিতে হয় ওই প্রাচীন প্রাণীটি সম্পর্কে।

কিন্তু পাথর মানেই সচরাচর যা বোঝায় অর্থাৎ শক্ত শিলা, সব জীবাশ্ম যে সেরকমই হবে, তার কোনও মানে নেই। গাছের রস জমাট বাধার সময় তার মধ্যে প্রাণীর শরীর আটকে গিয়েও জীবাশ্মের আকার নিতে পারে। এমন জীবাশ্মকে ‘অ্যাম্বার’ বলা হয়ে থাকে। অন্য কথায় বলা হয় প্রাকৃতিক স্ফটিক। লক্ষ লক্ষ বা কোটি কোটি বছর ধরে এইভাবেই কোনও প্রাণীর শরীরও অবিকৃত থেকে যায় অ্যাম্বারের মধ্যে। পরে তার সম্পর্কে তথ্য বুঝে নিতে তেমন কোনও বাধা পেতে হয় না বিজ্ঞানীদের।

এবার গবেষকরা সম্প্রতি এরকমই একটি স্ফটিক বা অ্যাম্বারের সন্ধান পেলেন অস্ট্রেলিয়ার অটওয়ে অববাহিকার গণ্ডোয়ানা সুপারকন্টিনেন্ট অঞ্চলে। এখানে প্রাচীন জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা করার সময় জীবাশ্ম বিজ্ঞানীরা এই বিশেষ অ্যাম্বারটির সন্ধান পান। অ্যাম্বারটিতে আটকে রয়েছে এক জোড়া প্রাচীন মাছি। হঠাৎ দেখলে মনে হবে, তারা যেন মিলনরত অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, আবিস্কৃত ওই নতুন জীবাশ্মটি প্রায় ৪ কোটি বছরের পুরনো। অথচ মাছি দুটি এতদিন অবিকৃতই থেকে গিয়েছে। গবেষকরা দাবি করছেন, এই মাছি দুটি ডলিকোপোডিড প্রজাতির ছিল। রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স এলার্ট-এ।

কিন্তু কীভাবে মিলনরত অবস্থায় মাছি দুটির পরিণতি এমন হল? গবেষকরা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে গবেষকরা জানাচ্ছেন, গাছের রসে আটকে গিয়েছিল ওই মাছি দুটি। তারা আর বেরিয়ে আসতে পারেনি। পরে রস জমে কঠিনে পরিণত হয়েছে। ওই অবস্থায় আরও রস জমে অ্যাম্বারটি বড়ো আকার ধারণ করেছে। প্রায় চার কোটি বছর ধরে তারা এই অবস্থাতেই একত্রিত ছিল।

গবেষকরা আরও জানাচ্ছেন, অণুবীক্ষণ যন্ত্রে পর্যবেক্ষণের সময় তারা লক্ষ করেছেন, মাছি দুটি এমনভাবে আটকে রয়েছে, দেখলে মনে হবে তারা ওই সময় মিলনে ব্যস্ত ছিল। তবে তারা আদৌ মিলনরত অবস্থায় ছিল কিনা সে ব্যাপারে অবশ্য পুরোপুরি নিশ্চিত নন তারা। গবেষকদের ধারণা, এমনও হতে পারে, কোনও একটি মাছি প্রথমে রসে আটকে গিয়েছিল। পরে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে অন্য মাছি সে স্থানে যেতেই সেও আটকে যায়।

Advertisement
Previous articleবিশ্বভারতী রথীন্দ্র কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস’ পালন
Next article৮০০ বছর পর ফের কাছাকাছি বৃহস্পতি-শনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here