গর্ভবতী মায়েরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁর গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুটিও করোনায় আক্রান্ত হতে পারে, সম্প্রতি এমনটিই জানিয়েছেন ফ্রান্সের একদল গবেষক। পূর্বে এবিষয়ে একাধিক গবেষণা চললেও নির্ভরযোগ্য কোনও তথ্য ছিল না কারও কাছে। এবার সেই তথ্য হাতে পেয়েছেন ফ্রান্সের ওই গবেষক দলটি। – ছবি : সংগৃহীত |
অনলাইন পেপার : বিশ্ব জুড়ে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বর থেকে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও করোনা সম্পর্কিত এখনও অনেক কিছুই হয়তো জানতে বাকি রয়ে গিয়েছে পৃথিবীবাসীর কাছে। যদিও বিরামহীনভাবে চলছে গবেষণা। গবেষণা যেমন ভ্যাকসিন আবিস্কারের জন্য। আবার অন্য দিকে করোনা সম্পর্কিত নতুন নতুন তথ্য উদ্ঘাটনও এই গবেষণার মূল কারণ। সেই গবেষণা থেকে প্রতি নিয়তই উঠে আসছে আরও অজানা সব তথ্য।
করোনা যে এক প্রকার ছোঁয়াচে, সে বিষয়ে প্রত্যেকেই এখন নিশ্চিত। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা ছড়িয়ে পড়ছে অন্য ব্যক্তির শরীরে। শুধু সংস্পর্শ নয়, রোগীর কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে, গবেষণায় এটিও লক্ষ্য করা গিয়েছে। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুরাও যে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে, এ বিষয়ে এতদিন নিশ্চিত ছিলেন না গবেষকেরা। এবার অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানালেন ফ্রান্সের একদল গবেষক। তাদের দাবি, করোনায় আক্রান্ত কোনও মায়ের গর্ভের শিশুরও করোনা পজিটিভ হতে পারে।
নেচার কমিউনিকেশনে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ফ্রান্সের ওই গবেষক দল দাবি করছে, পূর্বে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছিল করোনায় আক্রান্ত মায়েদের গর্ভের শিশুও করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু এতদিন এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনও তথ্য ছিল না কারও কাছে। এবার সেই তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। তাঁরা গবেষণায় দেখেছেন, গর্ভাবস্থার একেবারে শেষ মুহূর্তে মায়ের থেকে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে তার গর্ভের শিশুটি। এক্ষেত্রে প্রমাণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে গত মার্চে জন্ম নেওয়া একটি শিশুর প্রসঙ্গ। শিশুটি জন্মের সময় লক্ষ্য করা গিয়েছিল একাধিক স্নায়বিক উপসর্গ সহ তার মস্তিষ্কটি ফোলা রয়েছে। যা করোনায় আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ হিসাবে দেখা মেলে। যদিও শিশুটি সুস্থ রয়েছে।
ওই রিপোর্ট থেকে আরও জানা যাচ্ছে, ফ্রান্সের গবেষক দলের সদস্য ড্যানিয়েল ডি লুকা জানিয়েছেন, তাঁরা এই গবেষণার জন্য ওই গর্ভবতী মহিলার অ্যামনিওটিক ফ্লুইড, রক্ত, সদ্যজাত শিশুর রক্ত সহ আরও অন্যান্য নমুনা পরীক্ষা করেছিলেন। মহিলার গর্ভ পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমিত করেছিল। সেখান থেকে প্রবেশ করেছে তাঁর গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুটির শরীরে।