কুকুরও বোঝে মানুষের ইচ্ছা, অনিচ্ছা বা দুষ্টুমি

Advertisement
কুকুরকে নিয়ে প্রানিবিদদের গবেষণারও যেন শেষ নেই। বিভিন্ন সময়ের একাধিক গবেষণায় তাঁরা নতুন নতুন তথ্য খুঁজে পেয়েছেন কুকুর সম্পর্কে। সাম্প্রতিক গবেষণায় তাঁরা জানতে পেরেছেন, মানুষের ইচ্ছা, অনিচ্ছা বা দুষ্টুমি সম্পর্কেও অবগত কুকুর। গবেষণাটি চালিয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অফ গটিংজেনের বিজ্ঞানীরা। গবেষণার কাজে তাঁরা বিভিন্ন বয়সের ও একাধিক প্রজাতির ৫১টি কুকুর ব্যবহার করেছেন।

কুকুরও বোঝে মানুষের ইচ্ছা, অনিচ্ছা বা দুষ্টুমি
Dog – Image by Lenka Novotna from Pixabay

অনলাইন পেপার : কুকুরের মতো প্রভুভক্ত প্রাণী এই বিশ্বে বোধহয় আর একটিও নেই। খেলার সঙ্গী থেকে শুরু করে নিরাপত্তা জনিত একাধিক কাজে কুকুর দায়িত্ব পালন করে এসেছে বহু আগে থেকেই। কুকুরের ঘ্রাণশক্তির প্রাবল্যতার জন্য এদেরকে অপরাধী শনাক্তকরণ কাজেও এখন বহুল ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও সেসবের জন্য নির্দিষ্ট কতকগুলি জাতকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

ঐতিহাসিকরা জানিয়েছেন, কুকুরের সঙ্গে মানুষের সখ্যতা বেশ পুরনো। প্রায় ১৫ হাজার বছর আগেও মানুষের সহবস্থানে ছিল এই প্রাণীটি, তার প্রমাণও পেয়েছেন ঐতিহাসিকরা। তবে কিছু ঐতিহাসিকের দাবি কুকুরই প্রথম প্রাণী, যারা মানুষের বশ্যতা স্বীকার করেছিল। এবং তারা এই বশ্যতা মেনেছিল প্রায় ১০ লক্ষ বছর আগে। সেসময়ে শিকারের কাজে মানুষ তাদেরকে ব্যবহার করত।

অবশ্য বর্তমান গৃহপালিত কুকুরের সঙ্গে অতীতের কুকুর প্রজাতির মিল ছিল বিস্তর। তারা সবে মাত্র নেকড়ে প্রজাতি থেকে আবির্ভূত হয়েছে। প্রধানত মাংসাশী এই প্রাণীটি নেকড়ে ও শিয়াল প্রজাতির অতি ঘনিষ্ঠ। তবে মানুষের সঙ্গে দীর্ঘ সহবস্থানে কুকুরের মধ্যে এসেছে অভূতপূর্ব ও আমূল পরিবর্তন। মাংসাশী থেকে সর্বভুকে রূপান্তরিত হয়েছে। মানুষের বশ্যতা মেনে স্বভাবগত রূপান্তরও ঘটেছে এদের মধ্যে। এখন আবার বৈজ্ঞানিক উপায়ে একাধিক কৃত্রিম প্রজাতিও তৈরি করা হচ্ছে। ফলে এক সময়ের এই বন্যপ্রাণীটি জঙ্গল ছেড়ে সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে মানুষের।

তবে এদেরকে নিয়ে প্রানিবিদদের গবেষণারও যেন শেষ নেই। বিভিন্ন সময়ের একাধিক গবেষণায় তাঁরা নতুন নতুন তথ্য খুঁজে পেয়েছেন কুকুর সম্পর্কে। সাম্প্রতিক গবেষণায় তাঁরা জানতে পেরেছেন, মানুষের ইচ্ছা, অনিচ্ছা বা দুষ্টুমি সম্পর্কেও অবগত কুকুর। গবেষণাটি চালিয়েছেন জার্মানির ইউনিভার্সিটি অফ গটিংজেনের বিজ্ঞানীরা। গবেষণার কাজে তাঁরা বিভিন্ন বয়সের ও একাধিক প্রজাতির ৫১টি কুকুর ব্যবহার করেছেন।

গবেষণায় বিজ্ঞানীরা প্ল্যাস্টিকের দেওয়াল দেওয়া একটি আলাদা কুঠুরিতে কুকুরগুলিকে রেখেছিলেন। তাঁরা ইচ্ছা করে এক এক সময়ে এক এক ভঙ্গিমায় দেওয়ালের ওপার থেকে তাদেরকে খাবার দিচ্ছিলেন। কখনওবা খাবার দিয়েই সামান্য হেসে দ্রুত তা ফিরিয়ে নিয়েছেন। এবং কুকুরের নাগালের বাইরে সেই খাবার রেখে দিয়েছেন। আবার কখনও হঠাৎ খাবার ফেলে আঁতকে ওঠার ভান করেছেন।

এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন, খাবার দিয়ে সামান্য হেসে ফিরিয়ে নেওয়ার পর কুকুরগুলি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে লেজ নেড়ে আবার লেজ নাড়া বন্ধ করে শুয়ে পড়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে, মানুষ তাদের সঙ্গে দুষ্টুমি করছে। আর যখন খাবার ফেলে আঁতকে উঠেছেন, কুকুরগুলিও তখন দাঁড়িয়ে লেজ নেড়ে চলেছে। তখন তারা বুঝতে পেরেছে, ভুল করেই তাদেরকে খাবার দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ মানুষের আচরণ সম্পর্কে কুকুরও বেশ অবগত।

Advertisement
Previous articleযাত্রাপালার আয়োজন করেই তৈরি হয়েছিল আমোদপুরের প্রথম প্রাথমিক স্কুল
Next articleবীরভূমের রামনগরে ‘দিশা’-র উদ্যোগে গড়ে উঠল গ্রামীণ গ্রন্থাগার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here