কালীপুজো পরিক্রমা ২০২১ : আমোদপুর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল (ভিডিও সহ)

Advertisement

বড়ো মায়ের প্রতিষ্ঠার ঠিক ১ বছর পর অর্থাৎ ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মেজো মাকে। মেজো মা রয়েছে আমোদপুরের তেঁতুলতলায়। স্থানীয়রাই মেজো মাকে এখানে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বড়ো মা আর মেজো মায়ের প্রতিষ্ঠার অনেক পরে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ছোটো মা। ছোটো মায়ের এই মন্দিরটি রয়েছে আমোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ঠিক পাশেই। পুজোর পর বড়ো মা আর মেজো মাকে বিসর্জন দেওয়া হলেও, ছোটো মা থেকে যায় সারা বছরের জন্য।


কালীপুজো পরিক্রমা ২০২১ : আমোদপুর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল

জনদর্পণ ডেস্ক : দুর্গোৎসবের পর বাঙালির দ্বিতীয় বড়ো উৎসব অবশ্যই কালীপুজো। এবারের কালীপুজো পরিক্রমায় জনদর্পণের প্রতিনিধিরা হাজির হয়েছে বীরভূম জেলার আমোদপুর ও তার পার্শ্ববর্তী গ্রাম পাড়গ্রাম, শালগড়িয়া ও নিরিশাতে। শক্তিদেবীর আরাধনায় আমোদপুর অতি পরিচিত একটি নাম। কারণ এখানেই রয়েছে বড়ো মা, মেজো মা আর ছোটো মা। যদিও এই কালী তিনটি খুব বেশি পুরনো নয়। তবে পাড়গ্রাম, শালগড়িয়া ও নিরিশার কালী বেশ প্রাচীন।

আমোদপুর রেলস্টেশন থেকে বেরিয়ে লাভপুর-সিউড়ি সড়কে ওঠার ঠিক মুখেই রয়েছে আমোদপুর বড়ো মায়ের মন্দির। এখানে বড়ো মা যেন সমগ্র আমোদপুরেরই বড়ো মা। গগনচুম্বী এক মন্দিরে সারা বছর ধরেই বড়ো মাকে আরাধনা করা হয়। তবে কালীপুজোর এই বিশেষ দিনে মাকে সাজিয়ে তোলা হয় ভিন্ন রূপে, ভিন্ন সাজে। বড়ো মাকে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে।

বড়ো মায়ের প্রতিষ্ঠার ঠিক ১ বছর পর অর্থাৎ ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মেজো মাকে। মেজো মা রয়েছে আমোদপুরের তেঁতুলতলায়। স্থানীয়রাই মেজো মাকে এখানে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বড়ো মা আর মেজো মায়ের প্রতিষ্ঠার অনেক পরে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ছোটো মা। ছোটো মায়ের এই মন্দিরটি রয়েছে আমোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ঠিক পাশেই। পুজোর পর বড়ো মা আর মেজো মাকে বিসর্জন দেওয়া হলেও, ছোটো মা থেকে যায় সারা বছরের জন্য।


Kaalipujo in Ahmedpur and its adjoining areas (video)

প্রায় ১২৫টি পরিবারের পারগ্রাম বেশ প্রাচীন একটি গ্রাম। এরই সঙ্গে এই গ্রামের কালীও বেশ প্রাচীন। এখানকার কালীপুজোর ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায় না। তবে প্রবীণদের দাবি, এই পুজো কয়েকশো বছরের পুরনো। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কান্দির কোনও এক জমিদার। পারগ্রামের পাশেই রয়েছে শালগড়িয়া। এটিও বেশ প্রাচীন একটি জনবহুল গ্রাম। এখানকার কালীপুজোর বয়স প্রায় পাঁচশো বছর। শোনা যায়, ডোম সম্প্রদায়ের মানুষেরা প্রথম এই পুজোর সূচনা করে। পরে বর্ধমানের কোনও এক রাজার নজরে পড়লে, তিনিই এই পুজোর দায়িত্ব নেন। বর্তমানে চারজন সেবায়েত এই পুজো পরিচালনা করছেন।

নিরিশা কালী অবশ্য আরও প্রাচীন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই কালীর বয়স প্রায় ৬০০ বছর। স্থানীয়দের কাছে নিরিশা কালী বা নিরিশা মা বেশ জাগ্রত। এই কালীর মহিমা ছড়িয়ে পড়েছে দূর থেকে দূরান্তে। শোনা যায়, কোনও এক তান্ত্রিক পঞ্চমুন্ডির আসনে সিদ্ধিলাভের সময় এই কালী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরে সেই তান্ত্রিক এক চৌকিদারের হাতে এই নিরিশা কালীর দায়িত্ব তুলে দেন। তবে চৌকিদার জাতিতে ডোম হওয়ায় তিনি দায়িত্ব অর্পণ করেন স্থানীয় বাসিন্দা নন্দকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বর্তমানে ২০ ফুটের এই নিরিশা কালী নির্মাণ করা হয় মূল মন্দির থেকে ৪০০ গজ দূরের অন্য আর একটি মন্দিরে। আর সেখানেই কালীকে সাজিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন অলঙ্কার ও পুজোর সাজে। কালী পুজোর রাতে নির্মাণ মন্দির থেকে বিপুল লোকসমাগমে মাকে নিয়ে আসা হয় মূল মন্দিরে। সেই সঙ্গে বাজতে থাকে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। আর এটাই কালী পুজোর রাতের মূল আকর্ষণ। বহু দূর-দূরান্ত থেকে সহস্রাধিক মানুষের আগমন ঘটে মায়ের এই শোভাযাত্রা দেখতে।

নিরিশা মায়ের গগনচুম্বী মূল মন্দিরটি এখানে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য ভক্তের সমাগম ঘটে এখানে। কালী পুজোর এই বিশেষ দিনে মন্দির প্রাঙ্গণ সাজিয়ে তোলা হয় নতুন করে। এখানে মন্দির প্রাঙ্গণে একটি মেলারও আয়োজন করা হয়। তবে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে গত ২ বছর ধরে মেলার আয়োজন বন্ধ রয়েছে।

Advertisement
Previous articleঅলক্ষ্মীর পুজো দেওয়া হয় কালীপুজোর রাতে, কিন্তু কেন?
Next articlePAXLOVID হতে চলেছে করোনার দ্বিতীয় খাওয়ার ওষুধ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here