Advertisement
অনলাইন পেপার : বেশ কিছুদিন আগেই খবরে প্রচার হয়েছিল, অক্সফোর্ড তাদের তৈরি প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে চলেছে। গত ২৩ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করল সেই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ। এদিন দুই জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে প্রয়োগের মাধ্যমে শুরু হল তাদের পরীক্ষা। এই পর্যায়ে তারা ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে বলে জানা গিয়েছে।
পরীক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবীদেরই বেছে নিয়েছে গবেষকরা। কারণ তাদেরই করোনা রোগীর সংস্পর্শে থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর তাদের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হবে। গবেষকরা জানতে চান, ভ্যাকসিন নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীরা করোনা সংক্রমণ থেকে কতটা সুরক্ষিত থাকবে।
বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেল, ৮০০ জন ভ্যাকসিন গ্রাহকদের দুটি ভাগে ভাগ করে পরীক্ষা করা হবে। প্রথম ভাগের গ্রাহকদের শরীরে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। দ্বিতীয় ভাগের গ্রাহকদের দেওয়া হবে মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিন। কিন্তু কাদের শরীরে কোন ধরণের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তা জানানো হবে না তাদের। এই ব্যাপারটি জানতে পারবেন শুধুমাত্র গবেষকরা। অক্সফোর্ডের ওই গবেষক দলটি কাজ করছে অ্যান্ড্রু পোলার্ড–এর নেতৃত্বে। পোলার্ড অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির পেডিয়াট্রিক ইনফেকশন এন্ড ইমিউনিটি বিভাগের অধ্যাপক।
সূত্রে আরও জানা গেল, ভ্যাকসিনটি তৈরি করতে শিম্পাঞ্জির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তাদের শরীরে সর্দি সৃষ্টিকারী অ্যাডেনো ভাইরাসকে বিশেষভাবে রূপান্তর ঘটানো হয়েছে, যাতে এর কোনও প্রভাব মানুষের ওপর না পড়ে। কোভিড–১৯–এর এই ভ্যাকসিনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সিএইচএডিওএক্স ১ এনসিওভি ১৯’ (CHADOX 1 NCOV 19)।
করোনা ভ্যাকসিনের এই গবেষণাটি পরিচালনার দায়িত্বে আছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপ ও জেনার ইন্সটিটিউট ভ্যাকসিনোলজি। ইম্পেরিয়াল নামে আরও একটি গ্রুপ আলাদাভাবে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছে। তারা আগামী জুনে তাদের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু করবে। ব্রিটিশ সরকার ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড ও ইম্পেরিয়ালকে ভ্যাকসিন গবেষণার জন্য ৪ কোটি পাউন্ড দিয়েছে।
ভ্যাকসিন প্রয়োগের কিছুদিন আগে জেনার ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক সারা গিলবার্ট জানিয়েছিলেন, তাদের তৈরি এই ভ্যাকসিনটি সম্পর্কে তিনি ৮০ শতাংশ নিশ্চিত। এদিন অক্সফোর্ডের গবেষকরাও আশার কথা শোনাচ্ছেন। তাঁরা মনে করছেন, তাঁদের তৈরি করোনার ভ্যাকসিনটি যথেষ্ট কার্যকর হবে। ভ্যাকসিন শরীরে প্রবেশের পরই অ্যান্টিবডি তৈরির কাজ শুরু করবে, যা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধী হবে। তাঁরা আরও আশা করছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০ লক্ষ করোনা ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে।
এই ভ্যাকসিনে সাফল্য এলে পালটে যেতে পারে গোটা বিশ্বের করোনা মানচিত্র, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধেই ২৮ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু ঘটেছে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের।
Advertisement