করোনা পরিস্থিতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে সাইবার অপরাধ, স্বস্তি বীরভূমে

Advertisement
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেশে বৃদ্ধি পেয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং। আর এই সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি বাড়িয়ে তুলেছে সাইবার অপরাধের মতো ঘটনা। ফোন, ই-মেল, মেসেজ, হাইপার লিঙ্ক, ডেবিট কার্ড ক্লোনিং-এর মাধ্যমে এই ধরনের প্রতারণার কাজ করে চলেছে। এই ধরণের কাজ সবচেয়ে বেশি পরিচালিত হচ্ছে নইডা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লী, মুম্বাই, কোলকাতা ও জামতাড়া থেকে। – ছবি : সংগৃহীত

cyber crime has increased in corona situation

অরবিন্দ মালী : সম্প্রতি দেশে ডিজিটাল ইকোনমি ও ডিজিটাল মার্কেটিং-কে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার “ডিজিটাল ইন্ডিয়া” কর্মসূচী গ্রহণ করেছে ও তার বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে প্লাস্টিক মানির প্রচলন, ভার্চুয়াল ওয়ালেট তথা ই-ওয়ালেট ব্যবহারে বৃদ্ধি, সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরী রুপে ডেবিট কার্ড, ইউপিআই (UPI), আধার যুক্ত ব্যঙ্কিং পরিষেবা সহ বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রচলন শুরু করেছে। এছাড়াও ই-কমার্স এর নিয়ম সরলীকরণ ও করের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ের নীতি গ্রহণ করেছে।
     কিন্তু ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে যেখানে এখনও একটা বড়ো অংশের মানুষ বেঁচে থাকার জন্য তাদের প্রাথমিক চাহিদাগুলো ঠিক মতো অর্জন করতে পারে না, সেখানে ডিজিটাল ইকোনমি, প্লাস্টিক মানি কতটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়ে জল্পনা ও বিতর্ক বিস্তর। তবুও এই কর্মসূচীতে সাধারণ মানুষের সাড়া মেলেনি তা নয়। বর্তমানে দেশের জনসংখ্যার বৃহত্তর অংশ তরুণ, তাদের শিক্ষা ও সম্ভাবনার অনেক দিক রয়েছে। ফলে ভারতবর্ষ এক বিরাট ডিজিটাল মার্কেট রূপে বিশ্বের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এদেশের বৃহত্তম বাজার ও বিপুল চাহিদার জন্য বিদেশী লগ্নী গত কয়েক বছরে এক ধাক্কায় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে ৬০ শতাংশ অবধি নগদহীন লেনদেনেরও বৃদ্ধি ঘটেছে।
     তা সত্ত্বেও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতার বিস্তর অভাব সময়ে সময়ে বিশিষ্ট মহলকে ভাবিয়ে তোলে। সম্প্রতি জাতীয় স্তরে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে সাইবার অপরাধের সংখ্যা সবচেয়ে বেশ অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে সরকার সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন সংগঠন, NGO তাদের যোগদান দিয়ে চলেছে। তার সত্ত্বেও ফেলে রাখা নতুন নতুন ফাঁদে ফাঁসিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে। সাইবার ডিপার্টমেন্টের ভাষায় একে বলা হয়েছে “ফিসিং”। ফোন, ই-মেল, মেসেজ, হাইপার লিঙ্ক, ডেবিট কার্ড ক্লোনিং-এর মাধ্যমে এই ধরনের প্রতারণার কাজ হয়ে চলেছে।
     Serious Fraud Investigation Office (SFIO)-এর এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ধরনের “ফিসিং”-এর সিন্ডিকেট দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পরিচালনা করা হলেও নইডা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লী, মুম্বাই, কোলকাতা ও জামতাড়া থেকে সবচেয়ে বেশি পরিচালন করা হয়ে থাকে। ওই রিপোর্টে এও উল্লেখ করা হয়েছে, ফিসিং-এর কাজ-কর্ম আবার পুনরায় বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খন্ডের জামতাড়া থেকে অপারেট করা হচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকে জামতাড়া গ্যাং সক্রিয়ভাবে কাজ করলেও ২০১৭ সালের এক বিশেষ অপারেশনে ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তার পর থেকে এই গ্যাং কিছুটা নিস্ক্রিয় থাকলেও পুনরায় তা সক্রিয় হয়ে ওঠে যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিশিষ্ট মহল। এর কারণ হিসাবে অনেকেই মনে করছেন করোনা কালীন পরিস্থিতিতে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ, বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তার ফলে সাইবার অপরাধের দিকেই শিক্ষিত বেকার যুব সমাজ সহজেই আকৃষ্ট হচ্ছে।
     তবে বীরভূমের জন্য স্বস্তির খবর, অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় সাইবার অপরাধ দমনের সাফল্যের হার অনেক অংশে বেশি। গত বছর মার্চে বীরভূমে সাইবার ক্রাইম থানার সূচনা করা হয়। তার পর থেকে সাইবার অপরাধ দমনে আমূল সাফল্য পেয়েছে বীরভূম জেলার পুলিশ।
Advertisement
Previous articleরবীন্দ্রনাথের কাছে ‘রাখীবন্ধন’ ছিল প্রীতির বন্ধন, মানব বন্ধন
Next articleরক্তের অভাব মেটাতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করল প্রাথমিক স্কুলের প্রাক্তনীরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here