Advertisement
অনলাইন পেপার : গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলা করোনা আতঙ্কে এখন সারা বিশ্ব তটস্থ। বিশ্বের প্রতিটি মহাদেশে ছড়িয়ে গিয়েছে এই ‘কোভিড-১৯’ করোনা ভাইরাস। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আর সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৮২টি দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ১৭৬ জন। মারা গিয়েছে ১০ হাজার ৫৪৬ জন। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৪৯ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৫ জন। (সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার)
তবে সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ইতালি। চিনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে চিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৯৬৭ জন। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২৪৮ জনের। কিন্তু ইতালি ইতিমধ্যেই মৃত্যু সংখ্যায় চিনকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেদেশে ৪১ হাজার ৩৫ জন আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতালির কেন এই অবস্থা? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রথম দিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগগুলি। ইতালির প্রধানমন্ত্রীও একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন সে কথা। দেশটির সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লোম্বার্ড অঞ্চলে। শুধুমাত্র এখানেই মারা গিয়েছে ৩১৯ জন। বলতে গেলে, সমগ্র ইতালিই এখন ‘ঘরবন্দি’ অবস্থায় রয়েছে। এদেশে ব্যস্ততম অঞ্চলগুলিও আতঙ্কে প্রায় শুনশান। রাস্তায় মানুষ চলাচলও হচ্ছে খুব কম। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পথে বেরোতে সাহস পাচ্ছেন না কেউই। তবুও মৃত্যুর পরোয়ানা আটকানো যাচ্ছে না সেখানে।
ইতালির লোম্বার্ড অঞ্চলে মৃতদেহ সৎকার করতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনকে। সৎকারের জন্য কবরস্থানগুলিতে স্থানাভাব দেখা দিয়েছে। লোম্বার্ড শহরাঞ্চল থেকে কয়েকশত মৃতদেহ সৎকারের জন্য সম্প্রতি নিয়ে যাওয়া হয়েছে শহরটির বাইরে। সেখানেই দেহগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মৃতদেহগুলি বহনের জন্য সেনাবাহিনীর ১৫টি ট্র্যাক কাজে লাগানো হয়েছে। নেট দুনিয়ায় ইতিমধ্যেই সেই সারিবদ্ধ ট্র্যাক চলার দৃশ্য বেশ ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, বারগামো শহরের মেয়র জানিয়েছেন প্রতিদিন ২৫টি করে মৃতদেহ পোড়ানো হচ্ছে। পোড়ানোর পর সেই ছাই আবার মৃতদেহ নিয়ে আসার স্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই এই মৃতদেহ পোড়ানোর কাজ চলছে।
চিন আর ইতালির পর করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে স্পেইন, ইরান, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স-এ। এই দেশগুলির প্রত্যেকটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে, যথাক্রমে ২০ হাজার ৪১২ জন, ১৯ হাজার ৬৪৪ জন, ১৮ হাজার ৭৫৬ জন, ১৬ হাজার ১৬২ জন ও ১০ হাজার ৯৯৫ জন। তবে মৃতের সংখ্যা অনুযায়ী ইতালি ও চিনের পর ইরান রয়েছে। ইরানে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে (সূত্র : ওয়ার্ল্ডোমিটার)। সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র তাঁর টুইটারে জানিয়েছেন, তাঁর দেশে প্রতি ১০ মিনিটে অন্তত ১ জনের মৃতু হচ্ছে আর প্রতি ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় ৫০ জন।
- All Rights Reserved
Advertisement