Advertisement
অরবিন্দ মালী : করোনায় জর্জরিত পৃথিবীতে বাংলা তথা রাঢ় বঙ্গও এখন আক্রান্ত। করোনা সংক্রমণে আক্রান্তের চেয়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি ভুগছে অর্থনৈতিক সমস্যায়। কারণ করোনা রুখতে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে একই সঙ্গে এই মুহূর্তে চলছে লকডাউন। তার জেরে ঘরবন্দী এখন সমস্ত মানুষ। গৃহবন্দী থেকে বাদ পড়েনি বঙ্গবাসীও। দীর্ঘ লকডাউনের জন্য কর্মক্ষেত্র থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দূরে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন বহু মানুষ। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি। কারণ তাঁদের সঞ্চিত অর্থ বলতে তেমন কিছুই প্রায় নেই। যদিও রেশন ব্যবস্থায় কিছুটা সাহায্য পাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তারপরেও সাংসারিক অভাব থেকে যাচ্ছে অনেকটাই।
এ অবস্থায় বেশ কতকগুলি আঞ্চলিক স্বেচ্ছাসেবী সংঘটন এবং ব্যক্তিগতভাবে কিছু উদার প্রকৃতির মানুষ এগিয়ে এসেছেন ওই অসহায় মানুষগুলির সাহায্যার্থে। এদিন যেমন এগিয়ে এলেন বীরভূম জেলার রাজনগর ব্লকের মাধাইপুর পল্লী মঙ্গল স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। তাঁরা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাধাইপুর সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের প্রায় ১১৩টি দুঃস্থ পরিবারের হাতে তুলে দিলেন বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী। এর পাশাপাশি ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা সামাজিক দূরত্ব সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত একাধিক সচেতনতামূলক বার্তা উপস্থিত মানুষদের মধ্যে পৌঁছে দিলেন। তাছাড়াও তাঁরা ওপর এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘চিত্তহাট’-এর হাতে আরও কিছু খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন, যাতে আরও কিছু এলাকার মানুষ ওই সাহায্য পেতে পারেন।
রাজনগর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের এই স্কুল ‘মাধাইপুর পল্লী মঙ্গল বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫২ সালে। স্কুলটির নামের মধ্যেই অন্তর্নিহিত আছে এক ঐকান্তিক আদর্শ ও মহৎ প্রচেষ্টা। সেই ধারার স্রোত আজও অব্যাহত গতিতে বয়ে চলেছে বিভিন্ন গঠনগত আদর্শ শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদীপ কুমার চট্টোপাধ্যায় সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে বললেন, “আমার সৌভাগ্য যে আমি এই বিদ্যালয়ের একটি অংশ, যা আমাকে আপনাদের মতো উদার এবং বড় মনের সহকর্মীদের সাথে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আনন্দ দিয়েছে। একই সাথে আমরা ত্রাণ গ্রহণকারী সম্ভ্রান্ত লোকদের জন্য কৃতজ্ঞ, যারা আমাদের প্রচেষ্টায় কিছুটা সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ দিয়েছিল। কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে সর্বদা বিশ্বাস করি যে গ্রহণকারীরা দাতাদের চেয়ে অধিক মহৎ।”
Advertisement