করোনার ধাক্কায় বদলে গেল জয়দেব-কেন্দুলি মেলার চেনা ছবি (ভিডিও সহ)

Advertisement
এবছর করোনা সংক্রমণের জন্য বিধিনিষেধ থাকায় তেমনভাবে মানুষের সমাগম ঘটেনি জয়দেব-কেন্দুলি মেলায়। গত ৬ জানুয়ারি কেন্দুলি গ্রামপঞ্চায়েতে মেলা কমিটি ও জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠক বসেছিল জয়দেব মেলা নিয়ে। সেখানে এবারের মেলা ২ দিনের জন্য আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মেলায় এবছর অনুমতি দেওয়া হয়েছে ১০০টি বাউল-কীর্তনের আখড়াকে। তবে এগুলির সবই স্থানীয়। যেহেতু মেলায় দোকান বসার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাই স্থানীয় কয়েকটি ছাড়া তেমন কোনও দোকানই বসেনি এখানে। – ছবি : জনদর্পণ প্রতিনিধি

করোনার ধাক্কায় বদলে গেল জয়দেব-কেন্দুলি মেলার চেনা ছবি

জনদর্পণ ডেস্ক : লক্ষাধিক মানুষের যে জয়দেব মেলাকে পুণ্যার্থীরা চিনে এসেছে এতদিন, এবছর যেন তার পুরোটাই বদলে দিল ‘করোনা’ সংক্রমণ। কারণ সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেলায় কোনও দোকান বসতে দেওয়া হয়নি এবছর। স্থানীয় ছাড়া বাইরের কোনও আখড়াকেও বসার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে পুণ্যার্থীদের যথা সময়ে স্নান ও পুজো দেওয়ার অনুমতি ছিল। তাই অন্যান্য বছর এই মেলায় যেখানে তিল ধারণের জায়গা থাকে না, এবছর প্রথম দিনেই দেখা গেল ঠিক তার বিপরীত চিত্র। লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর পরিবর্তে কয়েক হাজার মানুষের সমাবেশেই শেষ হল প্রথম দিনের জয়দেব মেলা।

এই মেলার বয়স আনুমানিক ৪০০ বছর। পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ মেলাগুলির অন্যতম এটি। প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তিতে বীরভূম জেলার জয়দেব-কেন্দুলির অজয় নদের তীরবর্তী অঞ্চলে এই মেলার আয়োজন করা হয়। পূর্ণ মেলা চলে ৪-৫ দিন ধরে। মূলত ভক্ত সমাগমের মেলা হওয়ায় ওই ক’দিন কয়েক শত বাউল-কীর্তনের আখড়া বসে অজয় নদের তীর ঘেঁষে।

Video

ইতিহাস বলছে, কবি জয়দেব প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তির দিনে নিজের বাসভূমি কেন্দুলি থেকে কাটোয়ায় যেতেন গঙ্গাস্নান করতে। একবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর কাটোয়ায় যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। রাতে ‘মা গঙ্গা’ স্বয়ং তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে জানান, সংক্রান্তির দিনে তিনি নিজেই উজান বেয়ে উপস্থিত হবেন অজয়ে। ফলে নিকটবর্তী অজয়ের জলে স্নান করলেও কবি জয়দেব গঙ্গাস্নানের পুণ্যি লাভ করতে পারবেন। সেই থেকে জয়দেব প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিনে অজয়েই গঙ্গাস্নান করতেন। পরে এই কথা প্রচার হওয়ার পর কবি জয়দেবের মতো অন্যান্যরাও বছরের ওই দিনে অজয়ের জলে স্নান করতে শুরু করেন। আর এখন তো প্রতি বছরই এই পৌষ সংক্রান্তির দিনে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে এখানে।

তবে এবছর করোনা সংক্রমণের জন্য বিধিনিষেধ থাকায় তেমনভাবে মানুষের সমাগম ঘটেনি। গত ৬ জানুয়ারি কেন্দুলি গ্রামপঞ্চায়েতে মেলা কমিটি ও জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠক বসেছিল জয়দেব মেলা নিয়ে। সেখানে এবারের মেলা ২ দিনের জন্য আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

মেলায় এবছর অনুমতি দেওয়া হয়েছে ১০০টি বাউল-কীর্তনের আখড়াকে। তবে এগুলির সবই স্থানীয়। যেহেতু মেলায় দোকান বসার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তাই স্থানীয় কয়েকটি ছাড়া তেমন কোনও দোকানই বসেনি এখানে। তবে অন্যান্যবারের মতো এবারও রয়েছে ওয়াচটাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত পুলিশ, নজরদারির জন্য ড্রোন। পুণ্যার্থীদের স্নানের জন্য এবছর ৩টি ঘাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আগত সমস্ত পুণ্যার্থীকে অবশ্যই মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে।

Advertisement
Previous article১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে ছিল আমোদপুর হাটতলার হাট
Next articleশনিবার থেকেই সারা ভারত জুড়ে শুরু হচ্ছে করোনার টিকাদান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here