একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডেল্টার এই ধরনটি মানব শরীরে অতি দ্রুত নিজেদের বিভাজন করতে সক্ষম। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, করোনার অন্য ধরনের তুলনায় ডেল্টা ধরনের সংক্রমণে ভাইরাসের পরিমাণও থাকে অন্যদের তুলনায় অনেকটাই বেশি। চিনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকের তুলনায় বর্তমানের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণে মানব শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে প্রায় ১২৬০ গুণ বেশি। |

অনলাইন পেপার : দেড় বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের বিদায় ঘণ্টা এখনও বাজানো সম্ভব হচ্ছে না। বরং পৃথিবী জুড়ে বারংবার নিজের রূপ বদলের মাধ্যমে তার রাজত্ব যেন আরও কঠিন ও অসহনীয় হয়ে উঠছে। সংক্রমণ কখনও কমছে, কখনও বা অত্যধিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। কোনওভাবেই তাতে লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বের প্রায় ১৯ কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গিয়েছে ৪১ লক্ষেরও বেশি মানুষ। ভারতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩ কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪ লক্ষ ২২ হাজার।
তবে দেড় বছরেরও বেশি সময় অতিক্রম করলেও কেন করোনা সংক্রমণে লাগাম টানা সম্ভব হচ্ছে না? বিশেষজ্ঞরা এবিষয়ে বলছেন, এর অন্যতম কারণ করোনার বারংবার রূপ বদলে ফেলা। আর প্রতিবারই ভয়ঙ্কর থেকে ক্রমশই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা। এই যেমন করোনার ডেল্টা ধরন, যাকে বলা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত করোনার সবচেয়ে সংক্রামক ধরন। এটি আলফা ধরনের থেকেও প্রায় ৫৫ শতাংশ দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
গত বছরের শেষ দিকে করোনার এই ডেল্টা ধরনটি প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ভারতে। প্রথম দিকের গবেষণায় একে ‘ভারতীয় ধরন’ হিসাবেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। অনেক পরে এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেল্টা ভেরিয়েন্ট’। তবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এর নাম এখন ‘বি.১.৬১৭’। এখনও পর্যন্ত এই ডেল্টা ধরনই করোনার সবচেয়ে সংক্রামক ধরন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণও নাকি এই ‘ডেল্টা ধরন’। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ১০০টি দেশে এই ধরনটির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’ ইতিমধ্যেই এই ধরনটিকে ‘উদ্বেকজনক ধরন’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
তবে ডেল্টা কেন বেশি সংক্রামক? সিএনএন সংবাদ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডেল্টার এই ধরনটি মানব শরীরে অতি দ্রুত নিজেদের বিভাজন করতে সক্ষম। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, করোনার অন্য ধরনের তুলনায় ডেল্টা ধরনের সংক্রমণে ভাইরাসের পরিমাণও থাকে অন্যদের তুলনায় অনেকটাই বেশি। চিনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকের তুলনায় বর্তমানের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণে মানব শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে প্রায় ১২৬০ গুণ বেশি।