করোনাকালের এই মন্দা বাজারে ভাগ্য ফেরাতে পারে ‘কড়কনাথ’

Advertisement
বাজারে ‘কড়কনাথ’-এর চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেকটাই কম। আর তাই অন্য মাংসের থেকে এর মূল্য অনেকটাই বেশি। বর্তমানে ‘কড়কনাথ’-এর মাংসের প্রতি কেজির দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এমনকি ডিমের মূল্যও বেশ চড়া। প্রতি জোড়া ডিমের দাম বর্তমানে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, করোনার এই দুঃসময়ে ‘কড়কনাথ’ প্রতিপালনে ভাগ্য ফিরতে পারে সাধারণ মানুষের।
করোনাকালের এই মন্দা বাজারে ভাগ্য ফেরাতে পারে ‘কড়কনাথ’
Image by Jay Ns from Pixabay

জনদর্পণ ডেস্ক : করোনাকালের এই মন্দা বাজারে গ্রাম বা শহরতলির শিক্ষিত বেকার যুবকেরা অর্থ সংস্থানের অন্য কোনও দিশা না পেয়ে পোলট্রি ব্যবসায়ের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ অল্পদিনে প্রশিক্ষণ নিয়ে খুব কম সময়ে পোলট্রি প্রতিপালনে লাভের মুখ দেখা সম্ভব। বর্তমানে ডিম ও মাংসের চাহিদাও রয়েছে বিস্তর। তাছাড়া চাহিদা অনুযায়ী কোন প্রজাতির হাঁস-মুরগি বা গরু-ছাগল প্রতিপালন করলে অল্প সময়ে অনেক বেশি লাভের মুখ দেখা যাবে একাধিক বিশেষজ্ঞ এই বিষয়টিও উপস্থাপন করছেন বিভিন্নভাবে। এখানে তাঁরা ‘কড়কনাথ’ মুরগি পালনের উপর অনেকটাই জোর দিচ্ছেন। কারণ প্রতিনিয়ত দেশে এর মাংস ও ডিমের চাহিদা বাড়ছে।

পূর্বে ‘কড়কনাথ’-এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের খুব বেশি পরিচিতি ছিল না। এক মাত্র মধ্যপ্রদেশে সীমাবদ্ধ থাকায় মুরগির এই জাতটিও ছিল সবার অলক্ষ্যে। পরে এর মাংস ও ডিম নিয়ে বিস্তর গবেষণায় যখন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে আসে, তখন থেকে এর চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

কেন অন্য সাধারণ মুরগির থেকে ‘কড়কনাথ’ সম্পূর্ণ আলাদা? ‘কড়কনাথ’-কে প্রথমেই আলাদা করেছে এর বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য। মুরগিটির পায়ের নখ থেকে মাথার ঝুঁটি পর্যন্ত (নখ, পালক, চামড়া, মাংস, হাড়) সবই প্রায় কালো। এমনকি রক্তেও মিশে রয়েছে কালচে বর্ণ। মোট তিনটি প্রজাতি রয়েছে এর, গোল্ডেন, পেন্সিল্ড ও জেড ব্ল্যাক। এর মধ্যে জেড ব্ল্যাক প্রজাতিটিই সম্পূর্ণ কালো হয়ে থাকে। গোল্ডেন প্রজাতিটির কালো ডানায় সোনালী ছোপ লক্ষ্য করা যায়।

স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় অন্য সাধারণ মুরগির সঙ্গে ‘কড়কনাথ’-এর মাংসের তুলনা চলে না। এর পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে ‘কড়কনাথ’-এর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন, অ্যান্টিওক্সিডেন্ট ও অ্যামিনো অ্যাসিড। তাছাড়া কোলেস্টেরল ও ফ্যাটের পরিমাণ রয়েছে অনেকটাই কম। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে এর মাংস পেশী শক্তি বাড়াতে, শর্করার পরিমাণ ও রক্তচাপ কমাতে এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধে অব্যর্থ ওষুধের মতো কাজ করে।

তবে দীর্ঘদিন অজ্ঞাতই থেকে গিয়েছিল ‘কড়কনাথ’। ভারতের একমাত্র কালো জাতের এই মুরগিটি শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলার উপজাতি অঞ্চলেই পাওয়া যেত। পরে এখান থেকেই ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। বর্তমানে মহারাষ্ট্র, ছত্রিশগড়, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও এর প্রতিপালন শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় ‘কড়কনাথ’-এর ফার্ম গড়ে উঠেছে।

‘কড়কনাথ’ প্রতিপালন কেন লাভদায়ক? বাজারে ‘কড়কনাথ’-এর চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেকটাই কম। আর তাই অন্য মাংসের থেকে এর মূল্য অনেকটাই বেশি। বর্তমানে ‘কড়কনাথ’-এর মাংসের প্রতি কেজির দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এমনকি ডিমের মূল্যও বেশ চড়া। প্রতি জোড়া ডিমের দাম বর্তমানে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, করোনার এই দুঃসময়ে ‘কড়কনাথ’ প্রতিপালনে ভাগ্য ফিরতে পারে সাধারণ মানুষের।

Advertisement
Previous article১৭৫২ সালে ইংল্যান্ডের ক্যালেন্ডার থেকে ১১ দিন ভ্যানিশ করা হয়েছিল, কিন্তু কেন?
Next articleসাঁওতাল সমাজের উপকথা ও মিথ রয়েছে ‘যাদো’-দের পট চিত্রে (ভিডিও সহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here