সৌরজগতের ধূমকেতুগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন ধূমকেতু। স্বল্পকালীন ধূমকেতুগুলি সৌরজগতের সীমান্তবর্তী কুইটার বেল্ট থেকে জন্ম নেয়। এদের আয়ু হয় মাত্র ২০০ বছর বা তারও কম। আর দীর্ঘকালীন ধূমকেতুগুলির জন্ম হয়ে থাকে সৌরজগতের বাইরে ছড়িয়ে থাকা ওর্ট মেঘগুচ্ছ থেকে। এদের আয়ুকাল ২০০ বছর থেকে কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত হতে পারে। ধূমকেতু সি/২০১৪ইউএন২৭১-র জন্ম যে ওর্ট মেঘগুচ্ছ থেকে ঘটেছে, সূর্য থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৬০ হাজার কোটি কিলোমিটার। |

অনলাইন পেপার : ২০১৪ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যখন একে আবিস্কার করেন, তখন মোটেও বুঝতে পারেননি, এটি আসলে এযাবতকালের আবিস্কৃত হওয়া সবচেয়ে বড়ো কোনও ধূমকেতু। কারণ অন্য সাধারণ ধূমকেতুর মতো এর কোনও লেজ নেই। নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর সঙ্গে বার বার গুলিয়ে ফেলছিলেন গ্রহাণুর। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের পর তাঁরা বুঝতে পারেন, এটি আসলে কোনও গ্রহাণু নয়, এযাবতকালের সর্ববৃহৎ ধূমকেতু। সবে মাত্র মহাকাশের ওর্ট মেঘগুচ্ছ থেকে জন্ম হয়েছে এর। সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছালে তাপে বরফ গলে অন্যদের মতো এরও পুচ্ছ বা লেজ গঠিত হবে।
বৈজ্ঞানিক মহলে নতুন আবিস্কৃত এই ধূমকেতুটির নামকরণ করা হয়েছে সি/২০১৪ইউএন২৭১ (C/2014UN271)। ২০১৪ সালে ধূমকেতুটি প্রথম নজরে আসে পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যারি বার্নস্টাইন ও তাঁর ছাত্র পেদ্রো বার্নার্ডিনেলি-র। তাঁদের নামানুসারেই ধূমকেতুটি পরিচিতি পায় বার্নার্ডিনেলি-বার্নস্টাইন ধূমকেতু নামে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনুমান খুব বেশিদিন হয়নি ধূমকেতুটি জন্ম নিয়েছে। এর জন্ম ঘটেছে সৌরজগতের বাইরের ওর্ট মেঘগুচ্ছ থেকে। এটিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি দীর্ঘকালীন ধূমকেতু হিসাবেই পর্যবেক্ষণ করছেন।
বলাবাহুল্য, সৌরজগতের ধূমকেতুগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন ধূমকেতু। স্বল্পকালীন ধূমকেতুগুলি সৌরজগতের সীমান্তবর্তী কুইটার বেল্ট থেকে জন্ম নেয়। এদের আয়ু হয় মাত্র ২০০ বছর বা তারও কম। আর দীর্ঘকালীন ধূমকেতুগুলির জন্ম হয়ে থাকে সৌরজগতের বাইরে ছড়িয়ে থাকা ওর্ট মেঘগুচ্ছ থেকে। এদের আয়ুকাল ২০০ বছর থেকে কয়েক লক্ষ বছর পর্যন্ত হতে পারে। ধূমকেতু সি/২০১৪ইউএন২৭১-র জন্ম যে ওর্ট মেঘগুচ্ছ থেকে ঘটেছে, সূর্য থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৬০ হাজার কোটি কিলোমিটার।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন ধূমকেতু সি/২০১৪ইউএন২৭১-এর গড় ব্যাস ১০০-২০০ কিলোমিটার হতে পারে। অর্থাৎ এটি অন্য যে কোনও ধূমকেতুর তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বৃহৎ। এর অবস্থান এখনও পর্যন্ত সৌরজগতের বাইরেই রয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, বর্তমানে ধূমকেতুটির দূরত্ব সূর্য থেকে প্রায় ৩০ হাজার কোটি কিলোমিটার।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার, গ্রহাণুটি এখনও পর্যন্ত সূর্যকে একবারও প্রদক্ষিণ করেনি। সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগতে পারে প্রায় ৫৫ লক্ষ বছর। ২০৩১ সাল নাগাদ এটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসবে বলে ধারণা করছেন নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সূর্য থেকে তখন এর দূরত্ব হবে প্রায় ১৬.৫ হাজার কোটি কিলোমিটার।