সামান্য আবহাওয়ার তারতম্যেও অনেককে ভুগতে দেখা যায় সাধারণ সর্দি-কাশিতে। এবার হয়তো মুক্তি পেতে চলেছেন তাঁরা। সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী রেসপিরেটরি সিনসিসিয়াল ভাইরাস। জার্মান কোম্পানি বাভারিয়ান নরডিক দাবি করছে, তারা সাধারণ সর্দির টিকা আবিস্কার করে ফেলেছে। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ধাপগুলি শেষ করে বাজারে আনবে সেই টিকা। – ছবি : সংগৃহীত |
অনলাইন পেপার : বছরের সেই সব সন্ধিক্ষণ, যখন একটি ঋতু শেষ হয়ে আর একটি ঋতু শুরু হতে যাচ্ছে, ঠিক এই সময়টিতে শরীরে বাসা বাধতে পারে সর্দি-কাশি। বিশেষ করে শীত আসা বা যাওয়ার মুহূর্ত অথবা বর্ষার মরশুম শুরু হওয়ার অন্তিমে এই রোগের মুখোমুখি হন পৃথিবীর এক বিশাল সংখ্যক মানুষ। সর্দি-কাশির পাশাপাশি বেশ কয়েকদিন ভুগতে হতে পারে হালকা বা ভারি জ্বরেও। অনেকেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিবারই ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। বেশ কয়েকদিন জ্বর বা কাশিতে ভোগার পরেও সর্দি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়তে চাই না তার।
এই সমস্যাটা তাঁদেরই সবচেয়ে বেশি, যাঁদের আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনেই সর্দি শুরু হতে পারে। বারংবার নাক ঝাড়া থেকে মুক্তি পেতে আবহাওয়ার পরিবর্তনকে তাঁরা একটু বাঁকা নজরেই দেখে থাকেন। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হয়তো আর মাত্র কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে তাঁদের। কারণ জার্মান কোম্পানি বাভারিয়ান নরডিক সাধারণ সর্দির টিকা আবিস্কার করে ফেলেছে। যা ইতিমধ্যেই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায় অতিক্রম করেছে এবং এখনও পর্যন্ত সফলও হয়েছে। গবেষণার বিস্তারিত রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে ‘নিউ সায়েন্টিস্ট’-এ।
ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, গবেষকদের মতে সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী রেসপিরেটরি সিনসিসিয়াল ভাইরাস। এই ভাইরাসটি আবার দারুণ সংক্রামক। শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্ত হতে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষেরই জন্মের দুই বছরের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রতি বছর শ্বাসনালীর সংক্রমণে পৃথিবীর যে প্রায় ৩ কোটিরও বেশি মানুষকে ভুগতে দেখা যায়, তার জন্যও দায়ী এই ভাইরাসটি।
তবে এসবের থেকে এবার হয়তো মুক্তি পেতে চলেছে পৃথিবীবাসী। জার্মান কোম্পানি বাভারিয়ান নরডিক দাবি করছে, তাদের তৈরি টিকা ২০২৪ সাল নাগাদ বাজারে আসতে চলেছে। তার আগেই সমস্ত সমীক্ষা ও ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ধাপগুলি তারা অতিক্রম করতে চাই। টিকাটির নাম দেওয়া হয়েছে এমভিএ-বিএন-আরএসভি (MVA-BN-RSV)।
এখনও পর্যন্ত টিকাটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ অতিক্রম করতে পেরেছে। প্রথম ধাপের পরীক্ষার জন্য ৫৫ বছরেরও বেশি বয়সের ৪২০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই পরীক্ষায় দেখে নেওয়া হয়েছে টিকাটি ‘রেসপিরেটরি সিনসিসিয়াল’ ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতটা প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম ও কতটা নিরাপদ। যদিও এই পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন গবেষকেরা। গবেষকরা জানাচ্ছে, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ খুব শীঘ্রই শুরু করবেন তাঁরা। তৃতীয় ধাপে এই পরীক্ষার জন্য ১২ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে।