এবার ভিনগ্রহী খুঁজতে ব্যবহার করা হবে লেসার রশ্মি

Advertisement
লেসার রশ্মি টেলিস্কোপের সাহায্যে মহাশূন্যে নিক্ষেপ করে পৃথিবীর বার্তা পাঠানো সম্ভব ভিনগ্রহীদের কাছে। তবে এক্ষেত্রে লেসার রশ্মি ও টেলিস্কোপের ক্ষমতা হতে হবে অনেকটাই বেশি। ইতিমধ্যেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শুরু করে দিয়েছেন এর পরীক্ষা। তবে কিছু সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। – ছবি : সংগৃহীত
%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25AD%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2580 %25E0%25A6%2596%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE %25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BF 5

রঞ্জন সরকার : মানুষ সামাজিক জীব। একাকীত্ব তার মোটেও ভালো লাগে না। সে সব সময়ই তার সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে সময় কাটাতে পছন্দ করে। কখনও ফোন করে বা কখনও সাক্ষাতে তার সঙ্গীর সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করে, হৈ-হুল্লোড় করে। আসলে মানুষ কখনওই একা নয়। সমাজবদ্ধ জীবনে বেঁচে থাকতে তাকে নিজের সমগোত্রীয় কাউকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হয়। এটাই মানুষের ধর্ম।
     কিন্তু দীর্ঘদিনের কিছু প্রশ্ন মানুষকে সব-সময়ই ভাবিয়ে রাখে, ‘এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে আমরা কি সম্পূর্ণ একা? ট্রিলিয়ন গ্যালাক্সির মাঝে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কি শুধুই এই গ্রহে? নাকি অন্য কোথাও রয়েছে প্রাণ?’ যদিও বিজ্ঞান অঙ্ক কষে মাঝে মধ্যে বলে দিচ্ছে, পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহেও মিলতে পারে প্রাণের অস্তিত্ব। মিলতে পারে জল, বাতাস।
     যদি তাঁদের কথা সঠিক বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে অবশ্যই যোগাযোগও করা যাবে তাদের (ভিনগ্রহী) সঙ্গে। কিন্তু কীভাবে? বিজ্ঞান ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছে। কি সেই পদ্ধতি? “লেসার রশ্মি”!
     হ্যাঁ, এখন ভিনগ্রহী খুঁজতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করছেন লেসার রশ্মি। তাঁদের ধারণা, এই লেসার রশ্মির ব্যবহারেই হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরের ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব। এই রশ্মির মাধ্যমেই ভিনগ্রহীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে পৃথিবীর মানুষদের বার্তা। এই বার্তা অনেকটা এই রকম, “এই দেখো আমরা এইখানে। আমাদের আলো দেখতে পাচ্ছো?”
     তবে লেসার রশ্মি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে? জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক্ষেত্রে সুউচ্চ কোনও পর্বত চূড়ায় টেলিস্কোপ বসিয়ে তার মাধ্যমে এই লেসার রশ্মি পাঠানো সম্ভব। কিন্তু সেই টেলিস্কোপের ক্ষমতা হতে হবে অনেকটাই বেশি। এবং বাড়াতে হবে লেসারের ক্ষমতাও। এই দুইয়ের উচ্চ ক্ষমতা মিলিতভাবে মানুষের বার্তাকে পৌঁছে দেবে ভিনগ্রহীদের কাছে।
%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25AD%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2580 %25E0%25A6%2596%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE %25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BF 4
     লেসার রশ্মির ক্ষমতাকে ব্যবহার করা অবশ্য নতুন কিছু নয়। প্রায় ৬০ বছর আগেই আমেরিকা এর ক্ষমতাকে ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। তখন আমেরিকা আর রাশিয়ার মধ্যে চলছিল ঠাণ্ডা লড়াই। রুশ যুদ্ধ বিমানকে শূন্যে ধ্বংস করার জন্য আমেরিকা বানিয়ে ফেলেছিল লেসার অস্ত্র। লেসার রশ্মির উচ্চ ইলেকট্রন ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ধ্বংস করা যেত যে কোনও যুদ্ধ বিমানকে। সে সময় এব্যাপারে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’-এ।
     এবার সেই রকমভাবে লেসারের ক্ষমতাকে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে তা প্রয়োগ করা যেতে পারে মহাশূন্যে ভিনগ্রহী খুঁজতে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি ২ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন লেসার রশ্মিকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে (যার লেন্সের ব্যাস হতে হবে ৩০ মিটার) মহাকাশে ফোকাস করা যায় তাহলে ৪ আলোকবর্ষ দূরের কোনও গ্রহের বাসিন্দারা তা অনায়াসেই দেখতে পাবে। আর এই দূরত্ব প্রায় প্রক্সিমা সেন্টাওরির দূরত্বের সমান। এইভাবে ১ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন লেসার রশ্মিকে ৪৫ মিটার ব্যাসযুক্ত টেলিস্কোপের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া যাবে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে। এসব নিয়ে গবেষণা করছেন মিয় ক্লার্ক ও তাঁর সহযোগীরা।
%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25AD%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B9%25E0%25A7%2580 %25E0%25A6%2596%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%2581%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25BE %25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587 %25E0%25A6%25B2%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B0 %25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BF 2 1
     তবে এক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও রয়েছে। কোনও পর্বত শৃঙ্গে এই ধরণের টেলিস্কোপ বসিয়ে ওই এলাকার মানুষ যদি তা পর্যবেক্ষণ করতে চায়, তাহলে সে অন্ধও হয়ে যেতে পারে। কারণ লেসার রশ্মির ভেদক খুবই তীব্র। তাছাড়া পৃথিবীর চতুর্দিকে যে সমস্ত কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে, সেগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
     জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর বিকল্প উপায়ও বের করতে চাইছেন। তাঁরা চাইছেন, চাঁদের যে পিঠ পৃথিবীর বিপরীতে থাকে, অর্থাৎ যে পিঠ কখনওই পৃথিবী থেকে দেখা যায় না, ঠিক সেখানে লেসার উৎক্ষেপণ বসালে এই সমস্যা থেকে হয়তো কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে।
     পৃথিবী থেকে লেসার নিঃসৃতের প্রক্রিয়া অবশ্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা, কোনও গ্রহের প্রাণী যদি মানুষের সমগোত্রীয় হয়, সে নিশ্চয় বুঝতে পারবে পৃথিবী থেকে পাঠানো এই সংকেতের অর্থ। কিন্তু সেই গ্রহের প্রাণী যদি মানুষের থেকে কম বা বেশি উন্নত হয় তাহলে এর অর্থ হয়তো নাও বুঝতে পারে। ফলে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। তবু হাল ছাড়তে নারাজ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
Advertisement
Previous articleঅস্তাচলে বীরভূম জেলার ভ্রমরকোল গ্রামের পট ও পটুয়া (ভিডিও সহ)
Next articleএকের পর এক পড়ে রয়েছে হাতির মরদেহ, কারণ অজানা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here