Advertisement
অনলাইন পেপার : বলা হয় শিক্ষা জগতের জ্ঞানের আলো। যে কোনও রকম সংকট থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র প্রকৃত শিক্ষা। কিন্তু পৃথিবীর সর্বত্র এখনও এই শিক্ষার আলো পৌঁছাতে পারেনি। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশগুলি আজও অনেকাংশে ব্রাত্য থেকে গিয়েছে এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা থেকে। ওই মহাদেশের বেশিরভাগ দেশগুলি অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকটাই দুর্বল। বেশ কয়েকটি দেশ আবার চরম দারিদ্রতার নিচেও বসবাস করছে। বছরের পর বছর ধরে চলা তীব্র খরা, গৃহযুদ্ধ প্রভৃতির ফলে বছরের অধিকাংশ সময়ই দেশের বাসিন্দারা এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে নিজেদের জীবন অতিবাহিত করছেন। ফলে শিক্ষা এখানে একটা শব্দ মাত্র।
![]() |
ছবি : সংগৃহীত |
এরকম পরিস্থিতিতেও জিম্বাবোয়ে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার নতুন আইন নিয়ে এল। সেখানে আইন অনুযায়ী, এবার থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত দেশের প্রতিটা শিশুকে বাধ্যতামূলক স্কুলে পড়াশুনার জন্য পাঠাতে হবে। নয়তো অভিভাবকদের কপালে জুটবে জেল বা জরিমানা।
জিম্বাবোয়ে আফ্রিকারই একটি ছোটো দেশ। পূর্বে বেশ কিছুটা সময় বর্ণবৈষম্যের গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে কেটেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে ক্ষমতায় আসার পর (১৯৮০) দেশের চেহারা বদলাতে শুরু করে। তিনি সবচেয়ে বেশি জোর দেন শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। দেশের প্রতিটি প্রান্তে অসংখ্য স্কুল খোলার ব্যবস্থা করেন। সেখানে বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু পরে বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। নতুন আইন মোতাবেক শিক্ষা ক্ষেত্রে চালু করা হয় বেতন ব্যবস্থার। মূলত তখন থেকেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে শুরু করে।
তার ওপর জটিল হতে থাকে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। এক সময়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, দেশের জনগণ অর্থ উপার্জনের দিকে নজর দিতে গিয়ে নিজের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেয়। কারণ স্কুলে পঠন-পাঠনের জন্য খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য তাঁদের নেই। জিম্বাবোয়ের স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন করতে বর্তমানে স্থান ভেদে খরচ হয় বছরে প্রায় ৩০-৭০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৫০০-৫২৫০০ টাকা)। এছাড়াও সে দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ হিসাবে আছে বাল্যবিবাহ, কম বয়সে গর্ভধারণ, স্কুলগুলির অধিক দূরত্ব।
তাই জিম্বাবোয়ে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে এল এই নতুন আইন। বিবিসি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেল, নতুন আইন অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি শিশুকে ১৬ বছর পর্যন্ত স্কুলে পঠন-পাঠন করাতে হবে। অর্থাৎ ১২ বছর শিশুদের শিক্ষায় আলোয় আনা বাধ্যতামূলক। এর অন্যথা হলে ফল ভুগতে হবে তাঁদের অভিভাবকদের। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের ২ বছর পর্যন্ত জেল অথবা ২৬০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৯৫০০ টাকা) পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
Advertisement