অলস বলে কি সমাজে তার কোনও মূল্য থাকবে না? এবার সমাজের অলস ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অব ফাইন আর্টস’ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অভিনব প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এখানে প্রকৃত ৩ জন অলস ব্যক্তিকে দেওয়া হবে মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার। তবে প্রকৃত অলস ব্যক্তিদের বেছে নেওয়া হবে পরীক্ষার মাধ্যমে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন জার্মানির যে কোনও প্রান্তের অলস ব্যক্তিরা। – ছবি : সংগৃহীত |
অনলাইন পেপার : সমাজে অলস কারা? সাধারণভাবে যারা সব কাজেই আলস্য দেখায়। প্রতি পাড়ায় বা প্রতি বাড়িতে এমন একজন ব্যক্তির দেখা অবশ্যই পাওয়া যাবে। সব কাজই যেন তাদের কাছে অতিরিক্ত বলে মনে হয়। অথবা কোনও কাজ শুরু করলে, তার পরিসমাপ্তি কখন বা কবে ঘটবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা খুব কঠিন। এমনকি নিজের ব্যক্তিগত কাজগুলিও অন্যকে দিয়ে করিয়ে নিতে পারলে ভালো বলে মনে করে তারা। এমন ব্যক্তিরা সমাজে সাধারণভাবে অলস নামেই পরিচিত।
তবে অলস বলে কি তার মূল্য নেই? সমাজ থেকে কোনও উপযুক্ত পারিশ্রমিক কি তাদের দেওয়া হবে না? নিশ্চয় দেওয়া হবে। আর এরই জন্যে এবার এক অভিনব উদ্যোগ নিতে চলেছে জার্মানির হ্যামবুর্গের ‘ইউনিভার্সিটি অব ফাইন আর্টস’ বিশ্ববিদ্যালয়, জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা ইন্ডিপেনডেন্ট। এমনকি এই উদ্যোগে নির্বাচিত সেরা ৩ অলস ব্যক্তিকে দেওয়া হবে মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কারও।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মানুষের আলস্য ও লক্ষ্যহীনতার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আর্টস বিভাগের অধ্যাপক ফ্রেডরিখ ভন বরিস। এই গবেষণা করার মূল্য উদ্দেশ্য হল আর্থ সামাজিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সমাজের অলসদের খুঁজে বের করা। অধ্যাপক বরিসের ধারণা অনুযায়ী, ভোগ বা অপচয় কম হওয়াটাই শুধুমাত্র সমাজের ঔচিত্যবোধের মূল্যায়ন হতে পারে না। স্বপ্ন দেখা, স্বাধীনভাবে কথা বলা, এমনকি আড্ডা দেওয়ার সময়টাকেও জীবনের অংশ হিসাবে দেখা উচিত। এছাড়াও কোনও কিছু না করে শুধুমাত্র অলস জীবন কাটানোর সময়ও এখানে প্রযোজ্য।
এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতে পারবে শুধুমাত্র জার্মানির যে কোনও প্রান্তের অলস ব্যক্তিরা। তবে সেই ব্যক্তিকে হতে হবে অত্যন্ত অলস। তার প্রাত্যহিক জীবন-যাত্রা এতটাই আলস্য হবে, যা অন্য কোনও সাধারণ ব্যক্তির পক্ষে পারা একেবারেই অসম্ভব। সময় যেন তার কাছে এসে একেবারেই থেমে যেতে পারে। এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য তাকে দুটি প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই দিতে হবে। প্রথম প্রশ্ন রাখা হয়েছে, ‘কি করতে আপনি চান না?’ এবং দ্বিতীয় প্রশ্নটি হল, ‘কোনও কাজ না করা গুরুত্বপূর্ণ কেন?’
আবেদন করতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীর প্রথম ৩ জনকে পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হবে ১ হাজার ৬০০ ইউরো। ভারতীয় মূল্যে যা দাঁড়াবে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার কিছু বেশি।