স্যর আলফ্রেড নোবেল নিজেই ছিলেন একজন পদার্থ বিজ্ঞানী। যিনি ডিনামাইট আবিস্কার করেছিলেন। তবে তাঁর এই আবিস্কারে তিনি নিজেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন, ১৮৮৮ সালে যখন তিনি ফরাসী পত্রিকায় একটি মৃতের তালিকা দেখতে পান। ওই মৃতদের মৃত্যুর কারণ ছিল ডিনামাইট বিস্ফোরণ। ২৭ নভেম্বর ১৮৯৫ সালে তিনি একটি উইল-এর মাধ্যমে তাঁর মোট সম্পত্তির ৯৪ শতাংশ দান করে যান। |

জনদর্পণ ডেস্ক : নোবেল যে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার তাতে সন্দেহ থাকার কোনও কারণ থাকতে পারে না। প্রতি বছর যোগ্যতা অনুযায়ী চিকিৎসা বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতি এই ৬টি বিষয়ের উপর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। যদিও প্রথম দিকে অর্থনীতির উপর নোবেল পুরস্কার দেওয়ার রীতি ছিল না। ১৯৬৯ সালে অন্য ৫টি বিষয়ের সঙ্গে অর্থনীতিকেও যুক্ত করা হয়েছে।
স্যর আলফ্রেড নোবেল নিজেই ছিলেন একজন পদার্থ বিজ্ঞানী। যিনি ডিনামাইট আবিস্কার করেছিলেন। তবে তাঁর সেই আবিস্কারে তিনি নিজেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন, ১৮৮৮ সালে যখন তিনি ফরাসী পত্রিকায় একটি মৃতের তালিকা দেখতে পান। ওই মৃতদের মৃত্যুর কারণ ছিল ডিনামাইট বিস্ফোরণ। ২৭ নভেম্বর ১৮৯৫ সালে তিনি একটি উইল-এর মাধ্যমে তাঁর মোট সম্পত্তির ৯৪ শতাংশ দান করে যান। এই দান করা অর্থ দিয়ে ১৯০১ সাল থেকে প্রতি বছর পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে বৃহৎ মানবতার স্বার্থে কাজ করা ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা হয়।
এবছর ৬টি বিষয়েই নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ১৩ জন ব্যক্তি।
পদার্থ বিজ্ঞান – পদার্থ বিজ্ঞানে এবছর জর্জিও পারিসি (ইতালি), ক্লাউস হাসেলম্যান (জার্মানি) ও সাইকুরো মানাবে (জাপান) এই ৩ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণার বিষয় ছিল বৈশ্বিক উষ্ণতা ও বিশ্ব ব্যাপী জলবায়ু পরিস্থিতি।
রসায়ন বিজ্ঞান – বেঞ্জামিন লিস্ট (জার্মানি) ও ডেভিড ডব্লিউ সি ম্যাকমিলান (স্কটল্যান্ড) এই ২ জন এবারে রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণার বিষয় ছিল অণু তৈরির এক ভিন্নধর্মী কৌশল। যে আবিস্কারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাসিমেট্রিক অরগানোক্যাটালিসিস’।
চিকিৎসা বিজ্ঞান – এই বিষয়ে নোবেল পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রতিভাবান চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াস ও আরদেম পাতাপাউশিয়ান। তাঁরা আবিস্কার করেছেন তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর।
সাহিত্য – এককভাবে আব্দুলরজাক গুরনাহ (তাঞ্জানিয়া) এবছর সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ঔপনিবেশিকতার অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এসেছেন। এছাড়াও মহাদেশীয় পরিসরে সাহসের সঙ্গে শরণার্থীদের হয়ে লড়াই করেছেন।
শান্তি – মারিয়া রেসা (ফিলিপিন্স) ও দিমিত্রি মুরাতভ (রাশিয়া) যৌথভাবে এবছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন। এই দুই সাংবাদিক দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার ছিলেন জনসাধারণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে।
অর্থনীতি – অর্থনীতিতে এবছর নোবেল পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২ জন ও কানাডার ১ জন অর্থনীতিবিদ। তাঁরা হলেন ডেভিড এডওয়ার্ড কার্ড (কানাডা), গুইডো উইলহেলমাস ইম্বেন্স (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও জোশুয়া ডেভিড অ্যাংরিষ্ট (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)। এখানে নোবেল অর্থনীতির অর্ধাংশ পেয়েছেন ডেভিড এডওয়ার্ড কার্ড এবং বাকি অর্ধাংশ পেয়েছেন গুইডো উইলহেলমাস ইম্বেন্স ও জোশুয়া ডেভিড অ্যাংরিষ্ট। ডেভিড এডওয়ার্ড কার্ড-এর গবেষণার বিষয় ছিল শ্রম অর্থশাস্ত্র এবং গুইডো উইলহেলমাস ইম্বেন্স ও জোশুয়া ডেভিড অ্যাংরিষ্ট-এর গবেষণার বিষয় ছিল কার্যকরণ সম্পর্ক বিশ্লেষণ।