এক দেবীর তিন লৌকিক বিগ্রহ শোভা পায় পশোয়া গ্রামে

Advertisement
WhatsApp%2BImage%2B2019 05 13%2Bat%2B17.50.15

বিজয় ঘোষাল : সমগ্র বঙ্গদেশ জুড়ে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য লৌকিক দেব-দেবী। বীরভূম তথা রাঢ় বঙ্গেও এই রকম লৌকিক দেব-দেবী প্রায় প্রতিটা অঞ্চলেই আঞ্চলিক দেবতা রূপে পূজিত হয়। তার মধ্যে অন্যতম দেবী চণ্ডী। বিভিন্ন এলাকায় এই চণ্ডী দেবতার অনেক প্রভেদ আছে, যা ভিন্ন নাম আর ভিন্ন বিগ্রহ রূপে শোভা পায়।
     আমোদপুরের অদূরে সাংড়া পঞ্চায়েতের অধীন পশোয়া বেশ পুরনো একটি গ্রাম। গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বক্রেশ্বর নদ। এই গ্রামেই দীর্ঘদিন ধরে পূজিত হয়ে আসছে দেবী ‘পশোয়াচণ্ডী’। গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে এক জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে এই দেবীর অবস্থান। এখানে দেবীর কোনও নির্দিষ্ট মন্দির নেই।
     প্রাচীন এই লৌকিক দেবী সম্বন্ধে কেউ-ই সঠিক কোনও তথ্য দিতে পারেন না। যার কথা কোথাও লিপিবদ্ধও নেই। গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা অন্নদাশংকর ভট্টাচার্য জানালেন, পূর্বে গ্রামের অধিবাসীদের আর্থিক অবস্থা খুব বেশি সচ্ছল না থাকায় পশোয়া চণ্ডীর মন্দির নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। একটি পাতনাকে (গরুর খাবার দেওয়ার পাত্র) উপুড় করে তার মাঝে দেবীকে স্থাপন করা হয়েছে। পাতনাটির সামনের দিকে ত্রিভুজাকৃতির ছোট্ট একটি প্রবেশদ্বারের ব্যবস্থা করা আছে। সেই দিক থেকেই দেবীকে পুজো দেওয়া হয়।
     দেবী পশোয়া চণ্ডী ছাড়াও তার পূর্ব ও পশ্চিমে আরও দুটি লৌকিক দেবীকে এখানে স্থাপন করা হয়েছে। তারা যথাক্রমে মঙ্গল চণ্ডী এবং ত্রিপুরারী চণ্ডী নামে পরিচিত। ত্রিপুরারী চণ্ডী এক সময়ে পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরারী গ্রামের লৌকিক দেবী ছিলেন। পরে স্থানান্তরিত করে এই পশোয়া গ্রামে নিয়ে আসা হয়। ত্রিপুরারী গ্রাম বর্তমানে জনশূন্য। এই জনশূন্য হওয়ার কারণ আজও অজানা।
     যায় হোক পশোয়া চণ্ডী, মঙ্গল চণ্ডী ও ত্রিপুরারী চণ্ডীকে একত্রে এখানে পশোয়া চণ্ডী হিসাবেই স্বকীয়তা দেওয়া হয়েছে। তিন দেবীর পুজোও হয় এক সাথে। গ্রামে জনশ্রুতি আছে, ১৩২০ বঙ্গাব্দে বক্রেশ্বর নদের ভয়াবহ বন্যার হাত থেকে পশোয়া চণ্ডী অলৌকিকভাবে গ্রামবাসীদের রক্ষা করেছিলেন। তখন থেকে দেবীর উপর আরও ভক্তি ও বিশ্বাস বেড়ে যায় স্থানীয় সকলের। ভট্টাচার্য পরিবারের ব্যবস্থাপনায় নিত্য পুজো ও বছরে দু’বার বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা হয়ে থাকে এখানে। বর্তমানে সেবাইত হিসাবে নিযুক্ত আছেন পার্শ্ববর্তী মিলানপুর গ্রামের পূজারী প্রভাত মুখোপাধ্যায়।
Advertisement
Previous articleএসির ব্যবহার পরিবেশে কার্বনের বৃদ্ধিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে
Next articleসূর্যমুখী চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে জেলার চাষিরা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here