এই পদ্ধতিতে তিনি আম চাষ করতে শীতের তুষার আর গ্রীষ্মের গরম জল ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে শীতের সময় সংগৃহীত তুষার জমিয়ে সেই তুষার গ্রীষ্মের মরশুমে তিনি গ্রিনহাউস ঘর শীতল রাখতে ব্যবহার করেন। অপর দিকে শীতের মরশুমে ঘর গরম রাখতে ব্যবহার করেন গ্রীষ্মের গরম জল। যা গ্রিনহাউসের মধ্যে দুই ঋতুতে দুই বিপরীত ধর্মী পরিবেশ তৈরি করে। ফলে শীতের মরশুমেও হিরোউকি গ্রীষ্মের আম পেয়ে যান।

অনলাইন পেপার : এখন চলছে আম এর মরশুম। গ্রীষ্মের প্রধান ফলের মধ্যেও অন্যতম হল এই আম। বিভিন্ন প্রজাতির আম খেতে ভালবাসেন না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। ফলের বাজার ইতিমধ্যেই পাকা আম এ ভরে গিয়েছে। দাম প্রথম দিকে একটু বেশি হলেও পরে ধীরে ধীরে আমদানি বাড়তে থাকলে কমে যায়। তবুও এই গ্রীষ্মের মরশুমে আম এর দাম সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই থাকে। সমগ্র বঙ্গদেশ জুড়ে এই সময় স্থান ভেদে ও আম এর প্রজাতি অনুযায়ী আম পাওয়া যায় কেজি প্রতি ৮০-১২০ টাকা দরে।
তবে জাপানের এক ব্যক্তি আম বিক্রি করছেন পিস হিসাবে। এবং তাও আবার চড়া মূল্যে। জানা যাচ্ছে, তাঁর বিক্রিত এই আম এর প্রতিটির দাম প্রায় ১৮ হাজার টাকা বা ২৩০ ডলার। বলা বাহুল্য, সেই আম বিক্রিও হচ্ছে অভাবনীয়ভাবে। তবে কেন আম এর এত দাম রেখেছেন তিনি?
গালফ নিউজ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির নাম হিরোউকি নাকাগাওয়া। তাঁর বাড়ি হোক্কাইডো দ্বীপের একটি অঞ্চলে। তিনি এক নতুন প্রজাতির আম এর উদ্ভাবক। এই আম গ্রীষ্মের পরিবর্তে শীতের মরশুমেই উৎপাদন করেন তিনি।
আরও জানা যাচ্ছে, এক সময় তিনি জ্বালানি তেলের ব্যবসায়ী ছিলেন। পরে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেই ব্যবসা তিনি ছেড়ে দেন। এই সময় এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি জাপানের মিয়াজাকি অঞ্চলে আম চাষ করতেন। তাঁর কাছ থেকেই হিরোউকি জানতে পারেন, গ্রীষ্মের মরশুম ছাড়া শীতের মরশুমেও আম চাষ করা সম্ভব। তবে সেই চাষ করতে হবে গ্রিনহাউস পদ্ধতিতে। ব্যাপারটি হিরোউকিকে বেশ নাড়া দিয়েছিল। ২০১১ সাল থেকে তিনি এই পদ্ধতিতে আম চাষ শুরু করেন।
এই পদ্ধতিতে তিনি আম চাষ করতে শীতের তুষার আর গ্রীষ্মের গরম জল ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে শীতের সময় সংগৃহীত তুষার জমিয়ে সেই তুষার গ্রীষ্মের মরশুমে তিনি গ্রিনহাউস ঘর শীতল রাখতে ব্যবহার করেন। অপর দিকে শীতের মরশুমে ঘর গরম রাখতে ব্যবহার করেন গ্রীষ্মের গরম জল। যা গ্রিনহাউসের মধ্যে দুই ঋতুতে দুই বিপরীত ধর্মী পরিবেশ তৈরি করে। ফলে শীতের মরশুমেও হিরোউকি গ্রীষ্মের আম পেয়ে যান। এখানে আম চাষে তাঁর খরচও পড়ে বেশ কম। কারণ শীতের মরশুমে এমনিতেই ক্ষতিকর পোকামাকড়ের তেমন কোনও উৎপাত থাকে না। ফলে রাসায়নিকও ব্যবহার করতে হয় কম। এই আম শুধুমাত্র শীতের মরশুমেই পেকে থাকে।
৬২ বছর বয়সী হিরোউকি তাঁর উদ্ভাবিত নতুন এই আম এর নাম রেখেছেন ‘তুষারের মধ্যে সূর্য’। আর যে পদ্ধতিতে তিনি আম চাষ করছেন, তার নাম রেখেছেন নোরাওয়ার্ক জাপান।